জাতীয় সাঁতারে এবার ১৮ টি রেকর্ড হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় এত রেকর্ড হয়নি। এবার এত রেকর্ড হওয়ায় রেকর্ড হয়েছে। এত রেকর্ড হওয়ার পেছনে সাঁতার সংশ্লিষ্টরা টানা ক্যাম্পই কারণ বলে মনে করছেন। 

১৯ নভেম্বরে ১৯ জন নিয়ে জাতীয় ক্যাম্প শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে আরো ২ জন যুক্ত হয়। মাহবুব ও হামিদ এই দুই জন প্রশিক্ষকের অধীনে পাঁচ মাস প্রশিক্ষণ হয়। দুই কোচ এই প্রশিক্ষণকেই রেকর্ডের কারণ বলে মনে করেন, ‘যারা রেকর্ড করেছে তারা সবাই জাতীয় ক্যাম্পের। শুধুমাত্র একজন বাইরের। ক্যাম্পের প্রশিক্ষণের জন্যই এই সাফল্য।’ 

২০১৬ এসএ গেমসে রেকর্ড সহ দুই স্বর্ণজয়ী সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলার পর্যবেক্ষণ, ‘কয়েকটি বিষয় একত্রিত হয়েছে। নিবিড় অনুশীলন, আবহাওয়া, খেলোয়াড়-কোচেদের চেষ্টার সম্মিলনে এই রেকর্ড।’

বাংলাদেশের সাঁতারুরা প্রায় সবাই সার্ভিসেস সংস্থায় থাকেন। সেখানে অনুশীলন করলেও জাতীয় ক্যাম্পের অনুশীলনে ভিন্নতা রয়েছে বলে জানালেন সিনিয়র সাঁতারু মাহফিজুর রহমান সাগর, ‘শীতের সময় এখানে আমরা গরম পানিতে অনুশীলন করেছি। প্রয়োজনীয় সময় জিমও করেছি। এই সুযোগ সুবিধা অন্যত্র পাওয়া কঠিন।’ 

ঘরোয়া ক্রীড়াঙ্গনে রেকর্ডের উপর ভরসা রাখা দায়। টাইমিং নির্ভর খেলায় ইলেকট্রনিক টাইমিং না থাকায় এত রেকর্ড হওয়া সেই প্রশ্নও উঠছে। তবে এখানে টাইমিংয়ে তেমন সমস্যা দেখছেন না সাবেক সাঁতারু ও বর্তমান কোচ জুয়েল, ‘কয়েকটি ইভেন্টে আগের রেকর্ডের চেয়ে কয়েক সেকেন্ড দূরত্ব। সেগুলো ইলেকট্রনিকে হলেও রেকর্ড হতো। কিছু ইভেন্ট আগের রেকর্ডের খুব কাছাকাছি সেগুলো ইলেকট্রনিক হলে কিছু হতে পারত, আবার না ও পারতো। আরেকটি বিষয় আগের রেকর্ডও ছিল হ্যান্ডটাইমিংয়ে। সামগ্রিকভাবে এবারের রেকর্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলার সেই অর্থে সুযোগ নেই।’ 

এত রেকর্ড হলেও অবশ্য এতে খুব উচ্ছ্বসিত নন সাবেক কৃতি সাঁতারু রফিকুল ইসলাম, ‘রেকর্ড হয়েছে এটা ভালো দিক। তবে সাফ থেকে কত দূরে সেটা দেখতে হবে। সেই দুরত্ব ঘুচাতে হবে।’ রেকর্ড হলেও সেই সকল ইভেন্টে এসএ গেমসে স্বর্ণপদকের টাইমিংয়ের চেয়ে অনেক পেছনে জাতীয় রেকর্ডের টাইমিং। 

আগামী বছর মার্চে সাফ গেমস হওয়ার কথা। এক বছর সময়ের মধ্যে সেই দূরত্ব ঘোচাতে চান ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এমবি সাইফ, ‘আমরা পাঁচ মাসের এই ক্যাম্পের ফলাফল পেলাম। দীর্ঘমেয়াদী ও উন্নত প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। আমরা এই ক্যাম্প অব্যাহত রাখব।’ 

আন্তর্জাতিক ফলাফলের জন্য প্রয়োজন ভালো কোচ। সেই কোচের সন্ধানে ফেডারেশন, ‘আমরা ঈদের পরেই কোচ আনব ।’ ভারতীয় কোচ আনার চেষ্টা করছে ফেডারেশন। আগে সাঁতারে ছিল জাপান ও কোরিয়ার উন্নত মানের কোচ। ভারতীয় কোচ কেমন হন সেটাই দেখার বিষয়। ভারতীয় কোচ আসলেও আশা দেখছেন দেশীয় কোচ হামিদ, ‘আমরা এই ক্যাম্প আরো এক বছরের বেশি সময় চালিয়ে যেতে পারলে, এসএ গেমসে স্বর্ণ পদক প্রত্যাশা করা যায়।’

এসএ গেমসে সর্বশেষ স্বর্ণজয়ী শিলাও এটা বিশ্বাস করেন, ‘বেশ কয়েকটি ইভেন্টে আমাদের সম্ভাবনা রয়েছে। সেগুলোতে উন্নত কোচ ও প্রশিক্ষণ নেয়া হলে অবশ্যই স্বর্ণ জেতা সম্ভব।’ 

এজেড/এনইউ