চার বছর পর পর হাজির হয় অলিম্পিক। ভিন্ন ভিন্ন ক্রীড়া সবচেয়ে বড় ক্রীড়াযজ্ঞ এটি। বলা চলে ক্রীড়াজগতের সবচেয়ে বড় আসর। ইতিহাস আর ঐতিহ্যের বিচারে তাকে বলা হয় ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ।’ এমন এক প্রতিযোগিতায় নামার জন্য প্রস্তুতি আর আগ্রহ প্রায় আকাশচুম্বী। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার হকি দলের ম্যাট ডসনের গল্পটা হয়ত হার মানাবে সবকিছুকেই। 

আঙুলে চোট পেয়েছিলেন সপ্তাহদুয়েক আগে। ভেঙে যায় আঙুল। দরকার ছিল অস্ত্রোপচার। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার পর সুস্থ হতে কয়েক সপ্তাহ সময় দরকার। যে কারণে অলিম্পিকই মিস হয়ে যেত তার। ম্যাট ডসন এমনটা মানতে নারাজ। গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে থাকার তাগিদে শেষ পর্যন্ত আঙ্গুলই কেটে ফেলেন তিনি। 

অস্ট্রেলিয়ায় অলিম্পিকের প্রস্তুতির সময় ডান হাতে একটি হকি স্টিকের আঘাত লাগে ডসনের। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে জানা যায়, একটি আঙুলের অংশ ভেঙে গিয়েছে তার। চিকিৎসক জানান, আঙুলের সেরে ওঠার চিকিৎসা ও পুনর্বাসন মিলিয়ে চার থেকে ছয় সপ্তাহ সময় লাগবে। যদিও শতভাগ সুস্থতার নিশ্চয়তা নেই। আর বিকল্প একটাই, আঙুলের ভাঙা অংশ কেটে ফেলে দিতে হবে। 

অলিম্পিকের জন্য মরিয়া ডসন তাইই করলেন। একদিনের ভাবনাতেই চলে গেলেন সার্জনের ছুরি-কাঁচির নিচে। কাঁটা হলো আঙুল। দশদিনের পুনর্বাসনের পর তিনি যোগ দিলেন অস্ট্রেলিয়ার অলিম্পিক দলে। 

আগেও দুবার অলিম্পিক খেলেছেন তিনি, টোকিও অলিম্পিকে জিতেছেন রুপাও। তবু এবারের অলিম্পিক খেলতে মরিয়া তিনি। কারণ হিসেবে জানালেন এটাই হতে পারে তার শেষ অলিম্পিক, ‘হতে পারে এটিই আমার শেষ অলিম্পিক। যদি মনে হয় যে আমার এখনো নিজের সেরাটা দেওয়ার আছে, তবে সেই চেষ্টাই করব। এ জন্য যদি আঙুলের অগ্রভাগ ছেড়ে দিতে হয়, সেটাই হোক।’

 অস্ট্রেলিয়া হকি দলের অধিনায়ক অ্যারান জালেফস্কিও প্যারিসে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন সতীর্থের এমন কাণ্ডে, ‘শুরুতে আমরা ভাবতে পারছিলাম না কী হবে। পরে শুনলাম সে হাসপাতালে গিয়ে আঙুল ফেলে দিয়েছে। তবে ব্যাপারটা চমক বলতেই হবে। অনেকেই বড় মূল্য দিয়ে হলেও এখানে (অলিম্পিক) আসতে চায়।’ 
 
জেএ