শনিবার সকালেই বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে সুখবর। সিঙ্গাপুরে চলমান জুনিয়র এএইচএফ কাপ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ নারী হকি দল আজ সকালে ইন্দোনেশিয়াকে ১০-১ গোলে হারিয়েছে। অর্পিতা পাল তিনটি, রিয়া আফরিন ও কনা আক্তার জোড়া গোল, নাদিরা, সানজিদা ও লিমা একটি করে গোল করেন। এই জয়ে বাংলাদেশ অ-২১ নারী দলের জুনিয়র এশিয়া কাপে খেলা নিশ্চিত হয়। 

সিঙ্গাপুরে জুনিয়র এএইচএফ কাপ নারী ও পুরুষ উভয় টুর্নামেন্ট চলছে। নারী বিভাগে ৭ দল সিঙ্গেল লিগ পদ্ধতিতে খেলছে। ৫ ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ পয়েন্ট ১২ নিয়ে তৃতীয় স্থানে। ৭ দলের মধ্যে শীর্ষ চার দল জুনিয়র এশিয়া কাপ খেলবে।

বাংলাদেশের আরেক ম্যাচ বাকি থাকলেও তৃতীয় স্থান সুসংহত হওয়ায় জুনিয়র এশিয়া কাপ নিশ্চিত হয়েছে। আজ বিকেলে পুরুষ বিভাগে বাংলাদেশ চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে সেমিফাইনাল খেলবে।

২০১৯ সালে এই সিঙ্গাপুরেই এই অ-২১ টুর্নামেন্ট প্রথম বার খেলতে গিয়েছিল নারীরা। সেই টুর্নামেন্টে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছিল। এরপর নারী হকি নিয়ে আর কাজ হয়নি সেভাবে। গতবছর ওমানে ফাইভে এ সাইডের পর এবার সিঙ্গাপুরে এএইচএফ কাপে দল পাঠায় বাংলাদেশ। বিকেএসপিতে প্রায় মাসখানেক অনুশীলন হয়েছে৷ প্রস্তুতি ও পরিকল্পনার ফল পেয়েছে বাংলাদেশ জুনিয়র এশিয়া কাপে উত্তীর্ণ হয়ে ৷ 

বাংলাদেশের নারী হকি নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করছেন সাবেক খেলোয়াড় তারিকউজ্জামান নান্নু। ফেডারেশনের এই সদস্য সিঙ্গাপুরে নারী দলের ম্যানেজার হিসেবে রয়েছেন। প্রথমবারের মতো জুনিয়র এশিয়া কাপে জায়গা করে নেয়ায় তিনি বেশ উচ্ছ্বসিত, ‘নারী হকিতে বাংলাদেশের  সম্ভাবনা রয়েছে। আমি অনেক দিন থেকেই কাজ করছি৷ সাম্প্রতিক সময়ে ফেডারেশন নারী হকিকে গুরুত্ব দিয়েছে। বিশেষ করে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এবার এই টুর্নামেন্টে দল এসেছে। কোচিং স্টাফদের আন্তরিকতা ও মেয়েদের একান্ত চেষ্টায় এই ফলাফল’, সিঙ্গাপুর থেকে বলেন। 

সত্তর দশকের মাঝামাঝি নারী হকির প্রচলন শুরু হয় বাংলাদেশে। এরপর আকস্মিক বন্ধ হয়ে দীর্ঘদিন স্থগিত থাকে। একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নারীদের নিয়ে টুর্নামেন্ট হয়। সেটাও ছিল অনিয়মিত। সাবেক খেলোয়াড় নান্নু অনেকটা ব্যক্তিগত উদ্যোগেই নারী হকি নিয়ে কাজ করছিলেন। ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে কলকাতা থেকে নারী দল ঢাকায় এনে প্রদশর্নী ম্যাচের আয়োজন করেছিলেন। সেটা ছিল বাংলাদেশে প্রথম বিদেশি নারী দলের আগমন। বিকেএসপিতে নারী হকি শুরু হয় ২০১৯ সালের পর । এরপরই মূলত নারী হকির আনুষ্ঠানিক উন্নয়ন যাত্রা শুরু। জুনিয়র এশিয়া কাপ দলের প্রায় সকল খেলোয়াড়ই বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। 

এজেড/