পেন্ডুলামের মতো দুলছিল ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে আবাহনী-সাইফ স্পোর্টিং ম্যাচ। সেই ম্যাচের সবচেয়ে বড় ঘটনা ছিল সাইফ স্পোর্টিংয়ের জোড়া পেনাল্টি শট বাতিল হওয়া। একটা পেনাল্টি বাতিল, ফিরতি সুযোগেও পাওয়া পেনাল্টি বাতিল, এমন কিছু ঘরোয়া ফুটবল তো বটেই, আন্তর্জাতিক ফুটবলেও দেখা যায় না সচারচর।

ম্যাচের ৮০ মিনিটে তখন ২-১ গোলে এগিয়ে ছিল সাইফ স্পোর্টিং। তখনই বক্সে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি যায় সাইফের পক্ষে। পেনাল্টি নিতে আসা এমেরি বাইসেঙ্গে আবাহনী গোলরক্ষক শহিদুল সোহেলকে বোকা বানিয়ে জালে বল জড়ান আবাহনীর। কিন্তু পেনাল্টি নেওয়ার আগেই বক্সে খেলোয়াড় ঢুকে যাওয়ায় গোল পাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকে সাইফ। আদেশ আসে দ্বিতীয় বার পেনাল্টি নেওয়ার, এবারও বাইসেঙ্গে বলটা জালেই পাঠান আবাহনীর। তবে এবারও গোল পায়নি দলটি। তাতেই সৃষ্টি হয় প্রশ্নের।

সাবেক ফিফা রেফারি ও বাফুফের হেড অফ রেফারিজ আজাদ রহমান সেই পেনাল্টি বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘দ্বিতীয়বার শট নেয়ার সময় বলের খুব কাছে সে থেমে ডজ দিয়েছিল। যেটিকে ফুটবলের পরিভাষায় ফেইন্টিং বলে। যেটা সম্পূর্ণরুপে অবৈধ। এজন্য রেফারি কার্ড দেখিয়ে প্রতিপক্ষকে ইনডিরেক্ট ফ্রি কিক নেয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে।’ 

আগে কিক নেয়ার আগে অ্যাটাকারের ডজ দেয়ার সুযোগ থাকলেও এখন সেই নিয়ম নেই, ‘গত তিন বছর যাবৎ নতুন নিয়ম হয়েছে’ জানান আজাদ রহমান। 

আরেক ফিফা রেফারি তৈয়ব হাসান আজকের ম্যাচের ঘটনা উল্লেখ না করে তিনি সাধারণভাবে আইন ব্যাখ্যা করেন এভাবে, ‘রেফারি কিছু সময় পেনাল্টি শট পুনরায় নেয়ার নির্দেশ দিতে পারেন আবার কিছু সময় বাতিল করার এখতিয়ার রাখেন। শটের আগেই অ্যাটাকার, ডিফেন্ডার মুভ করলে অথবা গোলরক্ষক লাইন থেকে এগিয়ে আসলে। আবার অ্যাটাকার যদি ফেইন্টিং করেন অর্থাৎ শট নেয়ার আগে ডজ দেয়ার চেষ্টা করেন, তাহলে রেফারি প্রতিপক্ষ দলকে ইনডাইরেক্ট ফ্রি কি দেবেন ও সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়কে কার্ড দেখাবেন।’ 

দুই সাবেক ফিফা রেফারির ব্যাখ্যায় সাইফ স্পোর্টিংয়ের পেনাল্টি বাতিলের বিষয়টি স্পষ্ট হলেও যে ফাউল নিয়ে পেনাল্টির বাঁশি ছিল সেটা নিয়ে অবশ্য কিছুটা আলোচনার জায়গা রয়েই গেছে। ম্যাচের প্রথম পেনাল্টি যেটা আবাহনী পেয়েছিল সেটিও খুব পরিষ্কার ছিল না। আজ মূল ম্যাচে রেফারি তিনটি পেনাল্টি দিয়েছিলেন। তিন পেনাল্টির মধ্যে দুইটি গোল হয়েছে, আরেকটি বাতিল হয়েছে দু’বার নেওয়ার পরও।

এজেড/এনইউ