ম্যাচ যখন অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর অপেক্ষা। ঠিক তখনই চলতি মৌসুমে আবাহনী থেকে রহমতগঞ্জে পাড়ি জমানো নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে চিজোবার গোল। এই গোলে পুরান ঢাকার ক্লাবের সমর্থকদের উল্লাস, মোহামেডান গ্যালারিতে তখন পিনপতন নিরবতা। টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে রহমতগঞ্জ ২-১ গোলে হারিয়ে এক মৌসুম পর আবারও উঠেছে ফাইনালে। তাতে মোহামেডানের ফেড কাপ ফাইনালের অপেক্ষা বাড়লো আরও এক বছর, শেষবার যে দলটি এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেছিল সেই ২০০৯ সালে! 

শেষ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে মোহামেডানের খেলোয়াড়রা ঘিরে ধরেন রেফারিকে। বিশেষ করে মোহামেডানের মালিয়ান অধিনায়ক সোলায়মান দিয়াবাতে রেফারিকে ক্রমাগত জেরা করতে থাকেন অফসাইড ও লাল কার্ডের বিষয়ে। দলনেতা আবু হাসান চৌধুরি প্রিন্সও রেফারিং নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। অন্য দিকে তখন আবাহনী থেকে রহমতগঞ্জে আসা তুরুপের তাস সানডেকে নিয়ে রহমতগঞ্জের উল্লাস। সানডে বাংলাদেশের ফুটবলে কয়েকটি ক্লাবে খেললেও সাম্প্রতিক সময়ে গত কয়েক মৌসুম আবাহনীর জার্সিতে খেরেছে। এবার তাকে রাখেনি ক্লাব। নতুন ক্লাবে এলেন চলতি মৌসুমের শুরুতে, এসেই বাজিমাতের দুয়ারে নিয়ে গেছেন দলকে।

মোহামেডানের স্বপ্নভঙ্গ করে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে গেল রহমতগঞ্জ। দুই অর্ধে দুই দল একটি করে গোল করলেও ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে সানডে চিজোবার গোলে ফাইনালে জায়গা করে নেয় রহমতগঞ্জ। ৫ মিনিটে লিড নেয় মোহামেডান। আলমগীরের কর্ণার থেকে আসা বলে একদম ফাকা জায়গায় থেকে বল জালে জড়ান রাজিব। ২২মিনিটে গোলের সুযোগ তৈরী হয়ে গিয়েছিল মোহামেডানের। গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন শাহেদ মিয়া। তবে সময়মতো বেরিয়ে এসেছিলেন রহমতগঞ্জের গোলকিপার রাকিবুল হাসান তুষার। 

৪০ মিনিটে নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন শাহেদ মিয়া। মোহামেডানের অধিনায়ক সুলেমান দিয়াবাতে খাবার মুখে তুলে দেয়ার মতো করে বলটা দিয়েছিলেন শাহেদকে। কিন্তু শাহেদ বলটা মারেন গোলকিপার বরাবর। এরপর আশরাফুল হক আসিফের চেষ্টাও কাজে আসেনি। 

৬৭ মিনিটে দশ জনের দলের পরিণত হয় মোহামেডান। ম্যাচে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন মোহামেডানের মেসিডোনিয়ার ফুটবলার জেসমিন। দশ জনের দল হওয়ার পরও ৭৫ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি পেয়েই গিয়েছিল মোহামেডান। ওবি মনেকের শট ডান দিকে ঝাপিয়ে কর্ণারে রক্ষা করেছেন রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক। ৭৯ মিনিটে ম্যাচে সমতা আনে রহমতগঞ্জ। কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের জয়ের নায়ক ঘানার ফরোয়ার্ড ফিলিপ আজহা গোল করেন। ৮৮ মিনিটে ফজলে রাব্বির ক্রস থেকে সানডের বাইসাইকেল কিক ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়।  

১-১ গোলে সমতায় থাকা ম্যাচ যখন মনে হচ্ছিল অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে যাবে তখনই রহমগঞ্জের দুই বিদেশীর ঝলক। ইনজুরি টাইমে ফিলিপ আজহা দারুণভাবে বল নিয়ে বাড়িয়ে দেন গোলমুখে থাকা সানডে চিজোবাকে। দলকে ফাইনালে নিতে বিন্দুমাত্র ভুল করেন নি এই নাইজেরিয়ান। তাতেই ২০১৯-২০ মৌসুমের পর আবারও ফাইনালে চলে যায় রহমতগঞ্জ।

এজেড/এনইউ