সাত গোলের নাটকীয় ম্যাচে জিতে সেমিফাইনালে রহমতগঞ্জ
নির্ধারিত সময়ের খেলায় হলো ছয় গোল, তাতেও দুই দলকে আলাদা করা গেলো না। খেলা গড়ালো যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে। তাও তখন শেষের পথে। দুই দলের কোচও বোধহয় ছক কষা শুরু করে দিয়েছিলেন, কাকে কাকে নামাবেন পেনাল্টি শুট আউটে। তখনই ধুমকেতুর মতো আবির্ভাব আশরাফুল ইসলামের। করে বসলেন গোল, তাতেই নাটকীয়, রোমাঞ্চকর এক লড়াই শেষে শেখ রাসেলকে বিদায় করে রহমতগঞ্জ চলে যায় ফেডারেশন কাপের শেষ চারে।
ম্যাচে রহমতগঞ্জ দুই গোলের লিড নিয়েছিল প্রথমে। তাতে মনে হচ্ছিল রহমতগঞ্জ বুঝি সেমিফাইনালে চলে যাচ্ছে অনায়াসেই। শেখ রাসেল ম্যাচে ফিরলো এরপরই। দারুণ এক প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে ৮৪তম মিনিটে স্কোরলাইন করে ফেলে ৩-২! কোচ সাইফুল বারী টিটুর দল তখন সেমিতে খেলার অপেক্ষায়।
বিজ্ঞাপন
তবে তখনই ঘটল অ্যান্টি ক্লাইম্যাক্স। রহমতগঞ্জের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে চিজোবা ম্যাচে সমতা আনেন। আট মিনিটের ব্যবধানে তিন গোল ম্যাচটাকে নিয়ে যায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। ১১৮ মিনিটে বাজিমাত করে রহমতগঞ্জ। আশরাফুল ইসলামের শট শেখ রাসেলের জালে জায়গা করে নেয়। উল্লাসে মাতে রহমতগঞ্জের ফুটবলাররা। আর হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে শেখ রাসেল।
কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ২৮ মিনিটে লিড নেয় রহমতগঞ্জ। সানডে চিজোবার বাড়িয়ে দেয়া বলে ক্ষিপ্র গতিতে বল নিয়ে রাসেলের জালে জড়ান রহমতগঞ্জের ফিলিপ আজাহ। ৪৩ মিনিটে দুইবার সুযোগ নষ্ট হয় রহমতগঞ্জের। প্রথমবার ফিলিপ আজাহর শট ফেরান শেখ রাসেলের গোলকিপার আশরাফুল ইসলাম রানা। এরপর এনামুল ইসলাম গাজীর শট গোললাইন সেভ করেন সাদ উদ্দীন। শেখ রাসেলের ম্যাচে ফেরার সুযোগ নষ্ট হয় গোলবারে। রহমত মিয়ার ফ্রি কিক গোলবারে লেগে প্রতিহত হয়। শেখ রাসেল তখন ম্যাচে সমতা আনতে না পারেনি।
তবে এর মিনিট কয়েক পর ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় রহমতগঞ্জ। ৪৫ মিনিটে ফিলিপ আজাহ নিজের ও দলের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন। ওয়ালি ফয়সালের লং বলে শেখ রাসেলের সাদ উদ্দীন ও হেমন্তকে পরাস্ত করে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গোল করেন ফিলিপ আজাহ।
কোচ গোলাম জিলানির রহমতগঞ্জ দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান আরও বাড়াতে পারতো। ৫১ মিনিটে পেনাল্টি পেয়েছিল দলটি। ফিলিপ আজাহকে বক্সের ভেতর ফেলে দেন আইজার আখমোতোভ। হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরী হয় আজাহর। কিন্তু স্পট কিক থেকে গোল করতে পারেননি তিনি। তার শট ডান দিকে ঝাপিয়ে প্রতিহত করেন রাসেলের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা।
সেই থেকে পাওয়া মোমেন্টামই যেন কাজে লাগায় শেখ রাসেল। ৬৩ মিনিটে এক গোল শোধ করে দলটি। ফ্রি কিক থেকে দর্শনীয় এক গোল করেন রাসেলের ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার থিয়াগো এডুয়ার্ডো। গোল দিয়েই যেন নিজেদের ছন্দ ফিরে পায় শেখ রাসেল। বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থেকে পেনাল্টিও আদায় করে নেয় তারা। রহমতগঞ্জ না পারলেও শেখ রাসেল ঠিকই গোল পেয়েছে পেনাল্টি থেকে। ৮১ মিনিটে স্পট কিক থেকে গোল করে ম্যাচে সমতা আনেন আইজার আখমাতোভ।
এরপরই কমলাপুর স্টেডিয়ামে একের পর এক নাটক। যে শেখ রাসেল দুই গোলে পিছিয়ে ছিল তারাই ৮৪ মিনিটে এইলটন মাশাদোর গোলে প্রথমবারের মতো লিড নেয়। তবে জয় থেকে অল্প সময় দূরে থাকা রাসেলের উল্লাস থামিয়ে দেন সানডে চিজোবা। ৮৯ মিনিটে রহমতগঞ্জের সানডে চিজোবার গোলে ম্যাচের স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-৩।
এরপর যোগ করা সময়ে অনেক আক্রমণ প্রতি আক্রমণের পর আসে আশরাফুলের গোলটি। তাতেই শেষ চারে পা দেয় রহমতগঞ্জ।সেমিফাইনালে পুরান ঢাকার ক্লাবটির প্রতিপক্ষ ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
এজেড/এনইউ