ম্যাচের ১৯ মিনিটে একটা ভ্রমই যেন খেলে গেল ন্যু ক্যাম্পে। ৩০ নম্বর জার্সিটা পরে কি লিওনেল মেসিই ফিরলেন বার্সায়? না, বাস্তবতাটা হচ্ছে মেসি ফেরেননি, মাঝমাঠ থেকে বলটা টেনে নিয়ে গোলটা করেছেন পাবলো পায়েজ গাভি। 

তবে তাতে মেসির একটা কীর্তিকে পেছনেই ঠেলে দিয়েছেন তিনি। মেসিকে চারে ঠেলে বার্সার তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা বনে গেছেন তিনি। এরপর কোচ জাভি হার্নান্দেজের প্রশংসাও কুড়ালেন তরুণ এই মিডফিল্ডার।

শনিবার রাতে এলচের বিপক্ষে শুরুর অর্ধে বার্সেলোনা যেন ফিরেছিল তাদের সোনালী দিনের ছন্দেই। মাঝমাঠের দখল, প্রতিপক্ষ গোলমুখে ত্রাস ছড়ানো, এমন কিছুর দেখা তো হরহামেশাই মিলতো জাভি-মেসি-ইনিয়েস্তাদের যুগে!

সেসব দিনে যেমন হতো, খেলার স্থিতিটা ধরে রাখতেন জাভি-ইনিয়েস্তা, আর আক্রমণে দেখা মিলতো মেসি-জাদুর। এদিন অবশ্য দুটো কাজই করেছেন তিনি। মাঝমাঠ থেকে দলের আক্রমণ গড়ে দিয়েছেন, এরপর ভেলকি দেখানোর কাজটাও করলেন তিনি। 

১৯ মিনিটে বলটা পেয়েছিলেন মাঝমাঠে। সেখান থেকে এক ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জ এড়ালেন, সেকেন্ড দুয়েক পরই আরেক ডিফেন্ডারের চাপ এড়ালেন ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে। বক্সের কাছে তাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ছুটে গিয়েছিলেন আরেক এলচে ডিফেন্ডার, তবে তাকেও তিনি বোকা বানিয়েছেন ফেইক শটে; এরপর বক্সের বাইরে থেকে করে বসলেন শটটা, তাতেই গোল। 

বার্সেলোনার জার্সি গায়ে এটাই ছিল গাভির প্রথম গোল। যা তাকে বার্সেলোনার ইতিহাসের তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতাও বানিয়ে দিয়েছে। গোলের ঢঙে যাকে মনে করিয়েছেন, রেকর্ডের পাতায় নাম লেখাতে গিয়ে সেই মেসিকেই পেছনে ফেলে দিয়েছেন গাভি।

বার্সেলোনার হয়ে প্রথম গোলটা ১৭ বছর ৩৩১ দিন বয়সে করেছিলেন মেসি। গাভি সময় নিলেন ১৭ বছর ১৩৫ দিন বয়সে। তাতেই তিনি চলে এসেছেন সেরা তিনে।

১৬ বছর ৩০৪ দিন বয়সে গোল করে বার্সার সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হওয়ার রেকর্ডটা এখন আনসুমানে ফাতির দখলে। তার পরই আছেন বোইয়ান ক্রকিচ। ১৭ বছর ৫৩ দিন বয়সে গোল করে মেসির রেকর্ডটা ভেঙেছিলেন তিনি।

গাভি শুধু যে রেকর্ডের পাতাতেই নাম লেখিয়েছেন এদিন, বিষয়টা মোটেও তেমন নয়। নিকো গঞ্জালেসের জয়সূচক গোলটাও এসেছে তার পাস থেকেই। 

গোল করে-করিয়ে কোচ জাভির প্রশংসাটাও কুড়িয়ে নিয়েছেন তিনি। ম্যাচ শেষে জাভি তার পারফর্ম্যান্সের মূল্যায়নে বলেছেন, ‘সে দুর্দান্ত খেলেছে। তার উচ্চাভিলাষ আর ব্যক্তিত্ব, গোল করা, করানোর ক্ষমতার কারণে তাকে দলে পাওয়াটা দারুণ। সে দলের ভবিষ্যৎ, তবে শুধু সে একা নয়। আরাউহো, বালদে, নিকো, আবদে। তারাও দলের ভবিষ্যৎ, এ প্রজন্মটা দারুণ।’

মেসির মতো গোল করেছেন, তার মতো গোল গড়েও দিয়েছেন একটা। তুলনা চলে আসাটা স্বাভাবিক। তবে সেসবকে কোচ জাভি একপাশেই রাখলেন। বললেন, ‘সে আবেগি। বাধা আসবে, তবে তার বয়সটা মাত্র ১৭। সে ব্যবধান গড়ে দেয়, তাকে দলে পেয়ে আমি আনন্দিত। তাকে কারো সঙ্গে তুলনা করতে চাই না আমি। তার কোনো সীমানা নেই, সে এ বয়সেই দলে অবদান রাখছে।’

এনইউ