লিওনেল মেসিরা আর্জেন্টিনায় চলতি বছরটা দারুণ কাটিয়েছেন। ২০২১ সালে হারেননি একটি ম্যাচেও, ২৮ বছরের খরা ঘুচিয়ে আলবিসেলেস্তেরা জিতেছে কোপা আমেরিকা শিরোপা। তবে এত অর্জনের পরও দলটাকে নিয়ে শঙ্কা আছে বৈকি, শেষ দুই বছর যে একটা ম্যাচও খেলা হয়নি কোনো ইউরোপীয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে! সে কারণেই বিশ্বকাপের আগে ইউরোপীয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলে নিজেদের পরখ করে নেওয়ার কথা জানালেন দলটির সহকারী কোচ রবার্তো আয়ালা।

সবশেষ ২০১৯ সালে কোনো ইউরোপীয় প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হয়েছিল আলবিসেলেস্তেরা। সে বছর ১০ অক্টোবর সিগনাল ইডুনা পার্কে জার্মানির বিপক্ষে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও লুকাস আলারিও ও লুকাস ওক্যাম্পোসের গোলে ড্র করে ফিরেছিল দলটি। এরপর দুনিয়াজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপে খেলাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তা শেষে খেলা মাঠে ফিরেছে বটে, কিন্তু আর কোনো ইউরোপীয় প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে পারেনি কোচ লিওনেল স্ক্যালোনির শিষ্যরা।

ফলে ইউরোপীয় দলের বিপক্ষে দলের দুর্বলতার বিষয়টা অপরীক্ষিতই থেকে যাচ্ছে। সে কারণেই দলের ইউরোপীয় দলগুলোর বিপক্ষে নিজেদের বাজিয়ে দেখার বিষয়টিতে জোর দিলেন আয়ালা। তবে বর্তমান সময়ের কঠিন সূচি মেনে কাজটা যে কঠিন, সেটাও মেনে নিলেন তিনি। সম্প্রতি ইএসপিএন এফ৯০কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বললেন, ‘এটা করা প্রয়োজন। কিন্তু, ইউরোপীয় দলের বিপক্ষে খেলার সম্ভাবনাটা কম। কিন্তু এটা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা আমাদের বিপক্ষে এখন ভিন্নভাবে খেলবে।’

শেষ চার বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ইউরোপীয় চার দল ইতালি, স্পেন, জার্মানি ও ফ্রান্স। চার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও ছিল ইউরোপীয় দলগুলোর চোখে পড়ার মতো উপস্থিতি। তার ওপর আর্জেন্টিনা দলের ইউরোপীয় দলের বিপক্ষে দুর্বলতাও বেশ। শেষ চার বিশ্বকাপেই ইউরোপীয় দলের কাছে হেরেই শেষ হয়েছে দলের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। গেল বিশ্বকাপে চার ম্যাচের তিনটিতেই মেসিরা মুখোমুখি হয়েছিলেন ইউরোপীয় তিন প্রতিপক্ষ আইসল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া ও ফ্রান্সের, জিততে পারেননি একটি ম্যাচেও। সে কারণে ভয়টা থেকেই যাচ্ছে।

তবে আয়ালা জানালেন, সেখানেই ভয়টা শেষ নয়। বিশ্বকাপের আগে আরও নিখুঁত পারফর্ম্যান্স চান দলের। ব্রাজিলের বিপক্ষে নিকলাস অটামেন্ডি প্রতিপক্ষ ফরোয়ার্ড রাফিনিয়ার মুখে কনুই মেরেও বেঁচে গিয়েছিলেন। বিশ্বকাপে এমন কিছু আদৌ দেখতে চান না সাবেক এই আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার। বললেন, ‘আরও কিছু বিষয় আছে যেখানে নিখুঁত হওয়া চাই। যেমন ধরুন রক্ষণে। অটামেন্ডি যা করলো (ব্রাজিলের বিপক্ষে), এমনটা প্রতিদিন হতে দেওয়া চলবে না। এমন কিছুকে বিশ্বকাপের আগেই শেষ করতে হবে। এসব খুঁটিনাটি বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।’

বিশ্বকাপের এখন আর মাত্র এক বছরেরও কিছু কম সময় বাকি। বিশ্বসেরার মঞ্চে জায়গা পাকা হয়ে গেছে দলের। ফলে এখন মনোযোগ দল গোছানোর। সম্ভাব্য দলে আছেন অনেকেই। তবে দলের সবাইকে আরও একবার সতর্ক করে দিলেন আয়ালা। জানালেন, চূড়ান্ত দলে জায়গা পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে সবাইকে।

বললেন, ‘অনেক দূরযাত্রার পথ। মনে হচ্ছে এখনকার দলের অনেকেই সেই দলে থাকবে। সে কারণে প্রত্যেকেরই বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবতে হবে, ঘুমিয়ে পড়লে চলবে না। কারণ এখনই সবকিছু নির্ধারিত হয়ে যায়নি। এ লড়াইটা গুরুত্বপূর্ণ, অনেকেরই জায়গা নিশ্চিত হয়ে গেছে। কিন্তু প্রতিনিয়ত সবাইকে দলে জায়গা পেতে লড়ে যেতে হবে।’

এনইউ