১৩ বছর বয়সে ছোট্ট লিওনেল মেসি ভীরু ভীরু পায়ে পা রেখেছিলেন ন্যু ক্যাম্পের চৌকাঠে। এরপর কেটে গেছে ২১টি বছর। মেসি এ সময় বার্সেলোনাকে জিতিয়েছেন, নিজে জিতেছেন অগুণতি শিরোপা। চলতি বছরের আগস্টে নিয়মের বেড়াজালে জড়িয়ে বেশ বেদনাদায়কভাবে শেষ হয়েছে সে সম্পর্ক। মেসি পাড়ি জমিয়েছেন পিএসজিতে।

ফরাসি ক্লাবটির সঙ্গে মেসির চুক্তিটা দুই বছরের, দুই পক্ষের সম্মতি থাকলে সেটা বেড়ে যেতে পারে আরও একটা বছর। তবে বার্সেলোনা সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ভিক্টর ফন্ট সম্প্রতি ক্লাবকে পরামর্শ দিলেন তাকে শিগগিরই ফেরানোর। স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, সে কথা আগে থেকেই ভাবছে বার্সেলোনা!

কী বলেছেন ফন্ট?

সম্প্রতি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম আরএসি১কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফন্ট বলেন, ‘মেসির প্রস্থানটা সামনের দরজা দিয়েই হওয়া উচিত, তার প্রাপ্য এটা।’ ফন্ট জানালেন, তাকে ছেড়ে দেওয়ার মুহূর্ত থেকেই ফেরানোর কথা ভাবা উচিত ছিল দলটির। তিনি বলেন, ‘সেই মুহূর্ত থেকেই ক্লাবকে এটা ভাবা উচিত ছিল যে, তাকে কী করে ২০২৩ সালেই বার্সেলোনাতে ফেরানো যায়।’

আরও পড়ুন : অনুশীলনে মেসি পশুর মতো : মার্টিনেজ

যে কারণে বিচ্ছেদ হয়েছিল বার্সার-মেসির

মেসির বিদায়টা যেভাবে হয়েছে, এমন দুঃখ জাগানিয়া দৃশ্য বোধ হয় সিনেমাতেও দেখা যায় না! আর্জেন্টাইন অধিনায়ক তার শৈশব, কৈশোর, যৌবনের ক্লাবে থাকতে কী করেননি? বড় বড় সব ক্লাবের লোভনীয় প্রস্তাব ফেলে বার্সেলোনায় অর্ধেকের চেয়েও বেশি বেতন কমিয়ে থেকে যেতে চেয়েছিলেন, যাতে বার্সা কর্তৃপক্ষেরও ইচ্ছা ছিল বেশ। কিন্তু শেষতক সেটা সম্ভব হয়নি লা লিগার বেধে দেওয়া বেতন কাঠামোর বেড়াজালে। যারই ফলে হয়েছে এ বিদায়।

মেসির বার্সেলোনায় ফেরার অভিপ্রায়

তবে মেসি আশা ছাড়েননি বার্সেলোনায় ফেরার। স্পোর্তকে সম্প্রতি দেওয়া সাক্ষাৎকারে খোলাখুলিই বলেছেন, ফিরতে চান কাতালুনিয়ায়। বলেছেন, ‘আমি সবসময়ই বলেছি ক্লাবকে যে কোনো উপায়ে সাহায্য করতে পারলে আমি অনেক বেশি খুশি হবো।’

আরও পড়ুন : আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপের ‘ফেভারিট’ বলছেন মেসি

‘যদি সুযোগ আসে, তাহলে আমি ফিরে যেতে চাই, দলে অবদান রাখতে চাই। কারণ, এ ক্লাবটাকে আমি ভালোবাসি। ক্লাবের উপকারে আসতে পারলে, এর উন্নতিতে অবদান রাখতে পারলে, একে আবারও বিশ্বসেরা ক্লাব বানাতে পারলে আমার বেশ ভালোই লাগবে।’

যে কারণে বার্সেলোনায় ফিরতে পারেন মেসি

মেসি ক্লাব ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে অবশ্য ক্লাব সভাপতি হোয়ান লাপোর্তার সঙ্গে তার সম্পর্কটা কিছুটা তিতকুটেই হয়ে গেছে। তবে সে পরিস্থিতিটা পরিবর্তন হতে পারে জাভির হস্তক্ষেপে। মেসির সাবেক এই সতীর্থ সম্প্রতি তিনি ফিরেছেন ক্লাবের কোচ হয়ে। মাঠে ও মাঠের বাইরেও তার সঙ্গে মেসির সম্পর্ক বেশ।

সঙ্গে মেসির পিএসজির ফর্মও কাজ করতে পারে নিয়ামক হিসেবে। ফরাসি দলটিতে গিয়েই একগাদা চোটের কবলে পড়েছেন তিনি, যা প্যারিসিয়ানদের হয়ে মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়াতেও বাধা দিচ্ছে বেশ। এদিকে দলটির ক্রীড়া পরিচালক লিওনার্দো তো রীতিমতো বলেই দিয়েছেন, মেসি পিএসজিকে প্রাধান্য দিচ্ছেন কম। যা দলটির সঙ্গেও মেসির সম্পর্কের অবনতিরও আভাস দিচ্ছে। ফলে শিগগিরই ঘরের ছেলের ঘরে ফেরাটাকে অসম্ভব মনে হচ্ছে না আর।

এনইউ