ইউরোপিয়ান সুপার লিগ
রিয়াল, বার্সা, জুভেন্তাসের ওপর আর কোনো অভিযোগ নেই উয়েফার
ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নিয়ে গেল এপ্রিল-মে’তে কয়েকদফা নাটকই হয়ে গেছে। ইউরোপের শীর্ষ দলগুলো শেষমেশ সরেও গেছে। বাকি ছিল রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, ও জুভেন্তাস। তাদেরও সুপার লিগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে কতো চাপই না দিয়েছে ইউরোপের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা উয়েফা। বড় ধরনের শাস্তির হুমকিও এসেছে অনেকবার। কিন্তু এবার উয়েফা নিজেরাই বাকি থাকা তিন ক্লাবের ওপর সব অভিযোগ নিল সরিয়ে।
প্রিমিয়ার লিগ, ইতালিয়ান লিগ ও স্প্যানিশ লিগের শীর্ষ ১২ দলকে নিয়ে মাঠে গড়ানোর কথা ছিল সুপার লিগের। কিন্তু এরপর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সব দল, ইতালিয়ান লিগ থেকে দুই মিলান আর স্প্যানিশ লিগ থেকে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ সরে দাঁড়িয়েছিল। বাকি থাকা তিন ক্লাব ছিল রিয়াল, বার্সা ও জুভেন্তাস।
বিজ্ঞাপন
তারাও যেন এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ায়, এই উদ্দেশ্যে উয়েফা বড় শাস্তির হুমকি দিয়ে বেশ কয়েকবার বিবৃতি দিয়েছিল। তাতে কাজ হয়নি। এরপর আইনি ব্যবস্থাও নিয়েছিল উয়েফা। মাদ্রিদের আদালত তখনই একে উয়েফার ‘আইন বহির্ভূত আচরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছিল। এবার সেই অভিযোগই সরিয়ে নিয়েছে উয়েফা।
কী বলা হয়েছে বিবৃতিতে?
উয়েফার আপিল বিভাগ দিয়েছে এই ঘোষণা। ফলে সুপার লিগে থেকে যাওয়ার কারণে নতুন কোনো আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে না ক্লাবগুলোকে।
সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সুপার লিগের জড়িত থাকার কারণে উয়েফার আইনি কাঠামোর সম্ভাব্য লঙ্ঘন রুখতে যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল, উয়েফার আপিল বিভাগ সেটা বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে; এমনভাবে, যেন এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থাটা কখনো গৃহীতই হয়নি।’
সুপার লিগ কী?
গত এপ্রিলে এসেছিল ঘোষণাটা। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শ্রেষ্ঠত্ব খর্ব করতে নতুন এক প্রতিযোগিতার ঘোষণা দিয়েছিল ইউরোপের শীর্ষ ১২ দল। দলগুলো ছিল- রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, আর্সেনাল, চেলসি, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, টটেনহ্যাম, এসি মিলান, ইন্টার মিলান, ও জুভেন্তাস। এই দলগুলোকে প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ধরেই মাঠে গড়াতো টুর্নামেন্টটা।
কিন্তু এই ঘোষণার কিছু পরেই ক্লাব সমর্থকদের তীব্র রোষের মুখে পড়ে ক্লাবগুলো। এর আগে উয়েফা ও জাতীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনগুলোও এর বিরুদ্ধে সোচ্চার অবস্থান জানায়। প্রিমিয়ার লিগের দলগুলো, আর অ্যাটলেটিকো, ইন্টার, আর এসি মিলান পিছু হটে এই সিদ্ধান্ত থেকে। ফলে শুরুর আগেই ভেঙে পড়ে সুপার লিগের ধারণাটা।
প্রিমিয়ার লিগের বাইরের দলগুলোকে জরিমানার মুখে পড়তে হয়নি। তবে ইংলিশ দলগুলোকে সব মিলিয়ে ২ কোটি ২০ লাখ পাউন্ড জরিমানার বিনিময়ে প্রিমিয়ার লিগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে হয় এরপর।
তবে বার্সেলোনা, জুভেন্তাস, ও মাদ্রিদ এ ধারণা থেকে পিছু হটেনি। বরং উয়েফার হুমকির পাল্টা জবাবই দিচ্ছিল। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা জানিয়েছিল, দল তিনটি ‘উয়েফার কোনো প্রকার চাপ ও আগ্রাসনকে মেনে নেবে না’। নিজেদের অবস্থানে অটল ছিল দলগুলো। শেষমেশ যার কাছে নত হয়ে খোদ উয়েফাকেই সরিয়ে নিতে হলো অভিযোগ।
এনইউ/এটি