আর্জেন্টিনার সঙ্গে ব্রাজিল যা করেছে, লাতিন ফুটবলের জন্য তা লজ্জার
তাকে, সঙ্গে তার ৩ সতীর্থকে নিয়েই বেধেছিল যত বিপত্তি। ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আপত্তি ছিল আগে থেকেই, তাদেরই বাগড়ায় শেষমেশ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মহারণ শেষ হতেই পারল না। অনেক নাটকীয়তার শেষে অবশেষে সেই এমিলিয়ানো মার্টিনেজ আর তার সতীর্থ এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া আর্জেন্টিনা দল ছেড়েছেন তার ক্লাব অ্যাস্টন ভিলার চাওয়াতে। পুরো পরিস্থিতিটা নিয়ে যাওয়ার আগে কথা বলে গেলেন আরও একবার।
রোববার ব্রাজিলের নিও কিমিকা অ্যারেনায় যা হয়েছে, সেটা এখনো বুঝতেই পারছেন না এমিলিয়ানো। বললেন, ‘সেদিন কী ঘটেছিল, তা আমরা এখনো বুঝতে পারছি না। এমন কিছু ফুটবলেই দেখিনি কখনো। দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের জন্য লজ্জার ব্যাপার এটা। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এমন একটা বড় ম্যাচ শুরুর পরও স্থগিত হয়ে গেল, এটা কখনোই কারো বোধগম্য হওয়ার কথা নয়।’
বিজ্ঞাপন
তিন দিন ব্রাজিলে ছিল আর্জেন্টিনা দল, প্রস্তুতি নিচ্ছিল ভালোভাবে। কিন্তু ম্যাচ শুরুর পর এলো কর্তৃপক্ষের বাগড়া। এ কারণেই বিষয়টা গোলমেলে লাগছে এমিলিয়ানোর কাছে। বললেন, ‘ব্রাজিলের মাটিতে আমরা তিন দিনের জন্য ম্যাচের প্রস্তুতি নিয়েছি। তারপর যখন ম্যাচটা শুরু হলো, তখন তারা আসলেন একে বাতিল করতে। এটা একটা তিক্ত অভিজ্ঞতা। জয়ের জন্য আমাদের পর্যাপ্ত রসদ ছিল, কিন্তু রাজনৈতিক কারণে ম্যাচটা স্থগিত হয়ে গেল, আর আমাদের এখন ফিরে যেতে হচ্ছে।’
আর্জেন্টাইন এই গোলরক্ষক জানালেন, ম্যাচটা বাতিল হয়ে যাওয়ার আধঘণ্টা পরও লকার রুমে ছিল আর্জেন্টিনা দল। যদি ম্যাচটা মাঠে গড়ায় এই আশায়। কিন্তু সে আশা বাস্তবতায় রূপ নেয়নি আর। এমিলিয়ানো বলেন, ‘আমরা লকার রুমে প্রায় ৩০ মিনিটের মতো ছিলাম, ম্যাচটা শুরু হয় কিনা তার অপেক্ষায়। তারা যখন আমাদেরকে চলে যেতে বললো, তার পরও। তারপর ইংল্যান্ড থেকে যারা এসেছি, তাদের সেখানে ১৪ দিন থাকতে হবে কিনা, সে বিষয়টা উঠে এলো। সবকিছুতে অনিশ্চয়তা ভর করেছিল। চিকি (ক্লদিও তাপিয়া) সাহায্য করেছিলেন আমাদের। তাকে আর ছেলেদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য নীতিমালাকে আরও একবার ধুয়ে দিয়ে শেষে আফসোস ঝড়ে পড়েছে তার কণ্ঠে। বললেন, ‘আমি বুঝি না ব্রাজিলের নীতিমালা কী। পুরো বিশ্ব দেখেছে সেখানে কী হয়েছে। ম্যাচটা উপভোগ্য হতে পারত।’
অথচ দলের প্রতি ভালোবাসা থেকেই ইংল্যান্ড থেকে ছুটে এসেছিলেন এমিলিয়ানো সহ আর্জেন্টাইন দলের আরও তিন খেলোয়াড়। বললেন, ‘দলের জন্য ভালোবাসা থেকেই ইংল্যান্ড থেকে আমরা চার জন দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলাম। প্রিমিয়ার লিগের দলগুলোর অনুমতি ছিল না, তারপরও। কোপা আমেরিকা জেতার পর থেকে সবাই এই দলের সঙ্গে থাকতে উন্মুখ ছিল। এটা খুবই সুন্দর একটা বিষয়। আমরা যারা এসেছিলাম, তারা সম্ভাব্য পরিণাম মাথায় রেখেই এসেছিলাম।’
শেষ ম্যাচে তিনি থাকবেন না, থাকবেন না তার অন্য তিন সতীর্থও। তবে আর্জেন্টিনা ছাড়ার আগে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করলেন, শেষ ম্যাচেও তাদের ছাড়াই জিতবে দল। বললেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে এই দুটো ম্যাচ খেলাটা, দলকে নিজের সবটুকু চেষ্টা দেওয়াটা প্রয়োজন ছিল আমার। এটা (খেলা স্থগিত হওয়াটা) লজ্জার। আশা করছি (বৃহস্পতিবারের ম্যাচে) জিতব।’
এনইউ