বাফুফের আকস্মিক সিদ্ধান্তে ক্ষতির মুখে ক্লাবগুলো
চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ যেন এক সংকটের নাম। করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের পাশাপাশি বাফুফের আকস্মিক সিদ্ধান্তগুলো ক্লাবগুলোকে ঠেলে দিয়েছে নানা ক্ষতির মুখে। সর্বশেষ এই স্থগিতের সিদ্ধান্ত বড় সংশয়ের মুখে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগকে।
দুই লেগ মিলিয়ে প্রতিটি দল ২৪টি করে ম্যাচ খেলবে। এখনো অধিকাংশ ক্লাবের ছয়-সাতটি করে ম্যাচ বাকি। আরও সাত রাউন্ড খেলা শেষ করতে বাফুফের তিন সপ্তাহের মতো সময় প্রয়োজন। সেই সময় এক নাগাড়ে সামনে পাচ্ছে না দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বিজ্ঞাপন
১৮ আগস্ট থেকে বসুন্ধরা কিংসের এএফসি কাপের ম্যাচ মালদ্বীপে। এই টুর্নামেন্ট নিয়ে অনেক স্বপ্ন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন দলের। ক্লাবটির সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘এখনো স্বাগতিক মালদ্বীপ ও এএফসি আমাদের কয়দিন আগে যেতে হবে কিছু জানায়নি। আমাদের প্রাথমিক পরিকল্পনা ১২-১৩ আগস্টের দিকে যাওয়া। ব্যাঙ্গালুরু ও টিসি’র ম্যাচটি আমরা পর্যবেক্ষণ করতে চাই।’
১২ আগস্টের দিকে গেলে বসুন্ধরার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের বেশ কয়েকটি ম্যাচ রয়ে যাবে। বসুন্ধরার প্রতিপক্ষদের অপেক্ষায় থাকতে হবে তাদের ফেরার জন্য। এই প্রসঙ্গে ক্লাব সভাপতি বলেন, ‘আমাদের পক্ষে ১০ আগস্টের পর আর লিগ ম্যাচ খেলা সম্ভব না। চলমান পরিস্থিতি আসলে ক্লাবগুলোর জন্য খুবই কষ্টকর। প্রতিনিয়ত ক্লাবগুলোর ব্যয় বাড়ছে।’
১২ আগস্ট বসুন্ধরা গেলে ২৫ আগস্টের আগে ফিরতে পারবে না। ফেরার পর আবার কোয়ারেন্টিন ও অনুশীলন ইস্যু রয়েছে। সব মিলিয়ে সেপ্টেম্বরে লিগ গড়াচ্ছেই।
বসুন্ধরা, আবাহনী, সাইফের মতো শীর্ষ ও আর্থিক সামর্থবান ক্লাবগুলোর অতিরিক্ত ব্যয় বহনের সক্ষমতা থাকলেও মুক্তিযোদ্ধা,ব্রাদার্স ইউনিয়ন, উত্তর বারিধারা, আরামবাগ, রহমতগঞ্জের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এই এক সপ্তাহ খেলা স্থগিত হওয়ায় আরো এক মাসের বেশি জের টানতে হবে এই ক্লাবগুলোকে। বিশেষ করে বিদেশি ফুটবলারদের বাড়তি পারিশ্রমিক দিতে হবে। এই পরিস্থিতির জন্য ক্লাবগুলো দায়ী করছে লিগ কমিটির হুটহাট অপরিকল্পিত সিদ্ধান্তকে।
কোড অফ কন্ডাক্টের কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছকু বেশ কয়েকটি ক্লাবের লিগ কমিটির প্রতিনিধিরা বলেন, ‘এ নিয়ে পরপর দুই বার এ রকম হলো। আগের বার থেকে লিগ কমিটি ও ফেডারেশন শিক্ষা নিল না। ব্যাংক ও অনেক প্রতিষ্ঠান চললেও করোনা নেগেটিভ নিয়ে ফুটবল ফেডারেশন খেলা চালানোর অনুমতি পায় না কেন? অনুমতি যদি নাই পায় তাহলে শুধু আশ্বাস দিয়ে আমাদের খরচগুলো কেন বাড়ায়? আমাদের দুঃখ ও কষ্ট তারা দেখে না।’
খরচ বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সূচি, আবহাওয়া, লকডাউনের পাশাপাশি আরেকটি সংকটের বিষয় রয়েছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের মাঠের সংস্কার। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ৫ আগস্টের মধ্যে বাফুফেকে তাদের কর্মকান্ড শেষ করতে বলেছিল। চলমান লকডাউন ও বসুন্ধরা কিংসের এএফসি কাপের জন্য আগস্টে লিগ শেষ করা অনেকটা অসম্ভবই। সেপ্টেম্বরে গিয়ে ঠেকা লিগ কোথায় খেলা হবে সেটাও একটা বড় প্রশ্ন।
লিগ সম্পন্ন করতে অনেক সংকট। এই সংকটগুলো উত্তরণে বাফুফের লিগ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের কাছে এখন সুনির্দিষ্ট কোনো সমাধানের পথ নেই। ৩০ জুলাই লিগ শুরু হওয়ার আগে লিগ কমিটির সভায় সবার আলোচনার ভিত্তিতে একটি সুন্দর পথ বের হওয়ার আশায় তারা। সবাই মিলে পথ বের করলেও রাতে লিগ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেন অল্প কয়েকজনই!
এজেড/এটি