ইউরো আর কোপা আমেরিকা শিরোপা হাতে দুই বিজয়ী অধিনায়ক কিয়েলিনি ও মেসি/ফাইল ছবি

সদ্যসমাপ্ত কোপা আমেরিকা আর ইউরোর ফাইনাল যখন অনুষ্ঠিত হচ্ছিল একই দিনে, তখন আপনার মগজে দুই চ্যাম্পিয়নের একটা চূড়ান্ত লড়াইয়ের ভাবনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল কি? যদি দিয়ে থাকে, তাহলে আপনার জন্য সুখবর, ইউরোপ আর দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা উয়েফা আর কনমেবলও ভাবছে আপনার মতোই। সদ্যসমাপ্ত মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে বিজয়ী ইতালি ও আর্জেন্টিনার সুপার কাপের ম্যাচ নিয়ে আলোচনা ইতোমধ্যে এগিয়েও গেছে অনেকদূর।

লিগজয়ী দল খেলছে কাপজয়ী দলের বিপক্ষে, এ দৃশ্য ইউরোপীয় লিগগুলোতে দেখা যায় হরহামেশাই; উয়েফার মহাদেশীয় ক্লাব শ্রেষ্ঠত্বের দুই আসর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ আর ইউরোপা লিগের দলকেও সুপার কাপের ম্যাচে খেলতে দেখা যায়। কিন্তু দুই মহাদেশের সেরা দলকে খেলতে দেখা যায় না। 

গেল বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত বিশ্বকাপের পোশাকি মহড়ায় কনফেডারেশন্স কাপ নামের টুর্নামেন্টে মুখোমুখি হত সব কনফেডারেশনের শ্রেষ্ঠ দল, আর পরের বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ। কিন্তু ২০১৯ সালে সে টুর্নামেন্টকে ফিফা বিলুপ্ত ঘোষণা করে। ফলে প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে সব মহাদেশ কিংবা নিদেনপক্ষে ইউরোপ-লাতিন আমেরিকার শিরোপাজয়ী দেশকে মুখোমুখি হতে দেখার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয় ফুটবলপ্রেমীরা। তবে সেজন্যে উয়েফা আর কনমেবল অবশ্য হাত গুটিয়ে বসে নেই। ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালি আর কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার মধ্যকার একটা প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ আয়োজনের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে নিজেদের মধ্যে।

গত রোববার সকালে আর্জেন্টিনা ব্রাজিলকে তাদেরই মাটিতে হারিয়ে জেতে ২৮ বছরের অপেক্ষা শেষে কোপা আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে। একই দিনে ইতালি ইউরোর ফাইনালে পেনাল্টি শুটআউটে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ৫৩ বছরের ইউরো-খরা কাটিয়ে বনে যায় ইউরোপ-সেরা।

এর পরই আর্জেন্টাইন পত্রিকা ওলে এ ভাবনার কথা জানায় নিজেদের প্রচ্ছদে। সেখানে দুই দেশের শিরোপাজয়কে তুলে এনে বলা হয়, ‘খেলতে এসো আজ্জুরি। আমরা তেমন ভালো নই।’ 

ফুটবল বিশ্ব তো বটেই, ডিয়েগো আরমান্ডো ম্যারাডোনা দুই দেশেই খুব বড় এক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আর্জেন্টিনা তো তার দেশই, যাকে সর্বশেষ বিশ্বকাপটা জিতিয়েছিলেন তিনি; আর ইতালি ছিল তার দ্বিতীয় ঘর, নেপলসে এখনো তার খ্যাতি আকাশছোঁয়া। এ কারণেই ওলে এ ম্যাচটার নাম ‘ম্যারাডোনা সুপার কাপ’ রাখারও প্রস্তাব রেখেছে।

সেখানে বলা হয়েছে, ‘আমেরিকা আর ইউরোপের জয়ী দলের মধ্যকার একটা সুপার কাপের কথা ভাবতে পারেন? তার সম্মানে এর চেয়ে বড় কিছু আর কী হতে পারে?’

তবে ওলের মতো করে ম্যারাডোনা-স্মৃতিকে এ ম্যাচে না ফেরালেও সুপার কাপের ভাবনাটা ভালোভাবেই আলোচনার টেবিলে আছে, জানাচ্ছে ব্লিচার রিপোর্ট। এরপর ইএসপিএনও কথা বলেছে একই সুরে। সব গুঞ্জন সত্যি হলে ইতালি আর আর্জেন্টিনার মধ্যকার একটা ধ্রুপদী লড়াই অপেক্ষায় আছে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য।

এনইউ