কেমন ছিল ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ফাইনালে আসার পথ
স্তব্ধ চারপাশ, বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর মিছিল। করোনা নামক অদৃশ্য এক ভাইরাসের কারণে সবকিছু যেন বিলীন হতে বসেছিল, দীর্ঘদিন বন্দি ছিল গোটা ক্রীড়াঙ্গন। বর্তমান সময়ে খেলাধুলাকে বলা হয় বিনোদনের প্রাণ। বিশ্বজুড়ে প্রতিটি খেলা বন্ধ থাকায় বিবর্ণ হতে বসেছিল সেই প্রাণের স্পন্দন। সে সময় অনেকেই দাবি তুললেন, সুস্থ পৃথিবীর আশায় না থেকে পৃথিবীকে আগে সুস্থ করা হোক, ফেরানো হোক খেলাধুলা। এতে অন্তত কিছু মানুষের মুখে কিছু সময়ের জন্য হাসি ফোটানো যাবে।
দক্ষিণ আমেরিকার মহাদেশ সেরা ফুটবল প্রতিযোগিতাটির এবারের আসর হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালে। কিন্তু ওই যে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস, ভেস্তে দিল, পণ্ড করে দিল সব। আসর পিছিয়ে গেল এক বছরের জন্য। এতে অনেক সমীকরণ গেল বদলে। গতবছর কোপা আমেরিকা মাঠে গড়ালে অবশ্য টুর্নামেন্টটির ইতিহাস বদলে যেত। কারণ, এর আগে একসঙ্গে দুই দেশ কোপার আয়োজক হয়নি। সেবার কোপা আয়োজক হওয়ার কথা ছিল, আর্জেন্টিনা এবং কলম্বিয়া।
বিজ্ঞাপন
যদিও কলম্বিয়ায় সরকারবিরোধী আন্দোলন চলায় গত বছরেই সেখান থেকে টুর্নামেন্ট সরিয়ে নেওয়ার কথা জানায় দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল কনফেডারেশন। কলম্বিয়া সরে যাওয়ায় সাহসী পথে হেঁটে আর্জেন্টিনা চেয়েছিল এককভাবে আয়োজন করতে। কিন্তু গোটা দক্ষিণ আমেরিকার মতোই সে দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ায় আয়োজক থেকে নাম সরিয়ে নেয় আর্জেন্টিনাও। চলতি বছর টুর্নামেন্ট শুরুর দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসলে স্বাগতিক হওয়া দেশ নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। অন্তিম মুহূর্তে এসে হাত বাড়িয়ে দেয় ব্রাজিল।
কাজটা সহজ ছিল না সেলেসাওদের জন্যও। করোনাভাইরাস তো আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ব্রাজিলে। এই ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে ১২ দল নিয়ে একমাসের ফুটবল মহাযজ্ঞ চালিয়ে নেওয়া শুধু কথার কথাই নয়! যে কারণে দেশের ভেতরেই এই আয়োজন নিয়ে উঠতে থাকে প্রশ্ন। এমনকি প্রশ্ন তোলেন খোদ ব্রাজিলের খেলোয়াড়রাও। তবে সব অনিশ্চয়তার মেঘ উবে যায়। সম্মতি দেন খেলার, বল গড়ায় মাঠে।
স্বস্তি মেলেনি তবুও, অতিথি দল হিসেবে এবার খেলার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়া ও ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক কাতারের। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে দল দুটি সরে দাঁড়ায়। পরে দুই গ্রুপে ভাগ করে ময়দানের লড়াইয়ে নামে ১০ দল। যেখানে ‘এ’ গ্রুপে আর্জেন্টিনা, চিলি, বলিভিয়া, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ে। গ্রুপ ‘বি’ তে ব্রাজিলের অন্য প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া, ইকুয়েডর ও পেরু। গত ১৩ জুন মানে গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে ব্রাজিল বনাম ভেনেজুয়েলার মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হয় এই মহাযজ্ঞ।
কোপার লড়াই শুরু হওয়ার পরেও শঙ্কা জেগেছিল টুর্নামেন্ট নিয়ে। করোনাভাইরাস কোপায় অস্তিত্ব জানান দিলেও সমালোচকদের কটু কথায় কর্ণপাত করেনি আয়োজক সংস্থা কনমেবল। প্রতিটি ম্যাচ মাঠে গড়িয়েছে। হয়েছে নির্ধারিত সময়ে। টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্ব থেকে শেষ আট হয়ে সেমিফাইনাল শেষে এবার মেগা ফাইনালের অপেক্ষা। আগামী ১১ জুলাই বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে শিরোপার লড়াইয়ে মাঠে নামবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল আর্জেন্টাইন ও ব্রাজিল।
সুপার ক্লাসিকর এই ফাইনালে আগে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কীভাবে ফাইনালের মঞ্চে পা রেখেছে দুই দল আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল:
শুরুতেই লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার ম্যাচে চোখ রাখা যাক-
বলতে গেলে অধিনায়ক নিওনেল মেসির নৈপুণ্যেই আর্জেন্টিনা চলতি কোপা আমেরিকার ফাইনালে ওঠেছে। সেমিফাইনাল পর্যন্ত ছয় ম্যাচে আর্জেন্টিনা গোল করেছে মোট ১১টি। যেখানে ৯টি গোলে সরাসরি অবদান রেখেছেন মেসি। তার পা থেকে এসেছে ৪ গোল এবং সতীর্থদের দিয়ে আরও ৫ গোল করিয়ে এখন পর্যন্ত আসরের সর্বোচ্চ গোল ও অ্যাসিস্টদাতা আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।
আর্জেন্টিনা ফাইনালে ওঠার পেছনে মেসির পাশাপাশি আরও একজনের নাম বড় করে উচ্চারণ করতে হবে। তিনি আর্জেন্টিনা দলের গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। অধিনায়ক মেসির ভাষায়, সেমিফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ফেনোমেনন মার্টিনেজ গোটা দলের স্বপ্ন বাঁচিয়েছেন।
সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার মধ্যকর ম্যাচ নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষে ১-১ গোলের ড্র নিয়ে টাইব্রেকারে গড়ায়। তখন কে জানতো জাতীয় দলের হয়ে মাত্র সপ্তম ম্যাচ খেলতে নামা মার্টিনেজ কলম্বিয়ানদের নেওয়া তিনটি পেনাল্টি শট আটকে দেবেন!
টাইব্রেকারে কলম্বিয়ার হয়ে হুয়ান কুয়াদরাদো ও আর্জেন্টিনার হয়ে মেসি দুই জনই নিজেদের প্রথম কিক থেকে গোল করেন। এরপর দুই কলম্বিয়ান দাভিনসন সানচেস ও ইয়েরি মিনার পরের দুটি শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ দক্ষতায় আটকে দেন মার্টিনেজ। মাঝে আর্জেন্টিনার হয়ে দ্বিতীয় পেনাল্টি কিক নেওয়া রদ্রিগো ডি পল মিস করলেও মেসিদের খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। কারণ তাদের একজন মনস্টার আছেন যে! কলম্বিয়ার হয়ে পঞ্চম পেনাল্টি নিতে আসা এদউইন কারদোনার শট ঠেকিয়ে দিয়ে গোটা বিশ্বের আর্জেন্টিনা সমর্থকদের উল্লাসের উপলক্ষ্য এনে মার্টিনেজ। নিজেদের ১৫তম কোপা আমেরিকা শিরোপার খোঁজে আর্জেন্টিনা ওঠে যায় স্বপ্নের ফাইনালে।
সেমিফাইনালের আগে কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডরকে একরকম উড়িয়েই দেয় মেসিবাহিনী। গ্রুপ পর্বে প্রবল পরাক্রমশালী ব্রাজিলের বিপক্ষে ড্র করা ইকুয়েডরকে আর্জেন্টিনা হারায় ৩-০ গোলের ব্যবধানে। সেই ম্যাচের পুরোটাই ছিল মেসিময়। যোগ করা সময়ে দুর্দান্ত ফ্রি কিক গোলের আগে লাউতারো মার্টিনেজ ও ডি পলকে দিয়ে দুইটি গোলও করান আর্জেন্টাইন সুপারস্টার।
তবে এই দুর্দান্ত আর্জেন্টিনার এবারের কোপা আমেরিকা মিশনের শুরুটা কিন্তু ভক্তদের জন্য মোটেই স্বস্তিদায়ক ছিল না। টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফ্রি কিক থেকে মেসির চোখ জুড়ানো গোলে এগিয়ে গেলেও চিলির বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে আলবিসেলেস্তেরা। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা তিন ম্যাচ ড্রয়ের পর উরুগুয়ের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের ধারায় ফেরে আর্জেন্টিনা। ওই ম্যাচে মাত্র ১৩ মিনিটে মেসির পাস থেকে গোল করেন গুইদো রদ্রিগেজ। এরপর গোটা ম্যাচেই এক প্রকার রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে ১-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন নিওলেন স্কালোনির শিষ্যরা।
আগের ম্যাচের মতো প্রায় একই কৌশল নিয়ে প্যারাগুয়ের মাঠে নামে মেসিরা। অনেকটা যেন উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচেরই পুনরাবৃত্তি। ম্যাাচের দশম মিনিটে ডি মারিয়ার অ্যাসিস্ট থেকে গোল করেন টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো মাঠে নামা পাপু গোমেজ। এরপর ম্যাচের বাকি ৮০ মিনিট রক্ষণ সামলে ১-০ গোলের জয় তুলে নেয় আর্জেন্টিনা।
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বলিভিয়াকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থেকে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা। বলিভিয়ার বিপক্ষে অধিনায়ক মেসি করেন জোড়া গোল। সেই সাথে আগের ম্যাচে গোল পাওয়া গোমেজকে দিয়ে করান আরও এক গোল। আর্জেন্টার হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন এখন পর্যন্ত আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা লাউতারো মার্টিনেজ। সেমিফাইনাল পর্যন্ত লাউতারোর গোল সংখ্যা তিন।
এবার নেইমার জুনিয়রের ব্রাজিলের দিকে চোখ বোলানো যাক-
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নের তকমা নিয়ে এবার কোপার লড়াইয়ে নেমেছে ব্রাজিল। দলগত প্রচেষ্টার আবারও টুর্নামেন্টটির ফাইনালে সেলেসাওরা। এবারের কোপায় গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনার মতোই ৪ ম্যাচে সমান ১০ পয়েন্ট নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে তারা। যেখানে মেসিদের মতোই তিন জয়ের সঙ্গে একটি ম্যাচ ড্র করে নেইমাররা। এতে ‘বি’গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে পরের রাউন্ডে নাম লেখায় স্বাগতিকরা।
মুকুট ধরে রাখার মিশনে নিকেদের প্রথম ম্যাচে তুলনামূলক দুর্বল ভেনেজুয়েলাকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেয় ব্রাজিল। মার্কুইনিস, নেইমার ও গাব্রিয়েল বারবোসা পান জালের দেখা। তিতের দল দেখিয়ে দেয় সঠিক পথেই এগোচ্ছেন তারা।
আসরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পেরুকে রীতিমতো উড়িয়ে দেয় ব্রাজিল। এবার জয় আসে ৪-০ গোলের ব্যবধানে। পেরুর বিপক্ষে ম্যাচে আলেক্স সান্দ্রো, নেইমার, রিবেইরো ও রিশার্লিসন আনন্দে ভাসান স্বাগতিক সমর্থকদের। যদিও গোটা টুর্নামেন্টের মতো এই জয়ও মাঠে বসে দেখতে পারেননি দর্শকরা।
করোনাভাইরাসের কারণে ফাইনালে কিছু দর্শক প্রবেশের অনুমতি মিললেও বাকি ম্যাচগুলো হয় দর্শক শূন্য গ্যালারি রেখে। পেরুর বিপক্ষে ম্যাচের পর কোপা আমেরিকার মাঠের মান নিয়ে অভিযোগ করেন ব্রাজিলীয় কোচ তিতে। এজন্য তাকে জরিমানাও গুণতে হয়।
আগের দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষকে বড় ব্যাবধানে বিধ্বস্ত করলেও টুর্নামেন্টে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখতে বসেছিল কোপার ৯ বারের চ্যাম্পিয়নরা। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের দশম মিনিটে গোল হজম করে বসে তারা। ফাউলের ছড়াছড়ি ম্যাচে ৭বার পকেট থেকে কার্ড বের করতে বাধ্য হন ম্যাচ রেফারি। এমনকি রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। সে ম্যাচের শেষদিকে ফিরমিনো ও কাসেমিরোয় শেষরক্ষা হয় ব্রাজিলের। ৭৮তম মিনিটে ফিরমিনো সমতার স্বস্তি ফেরানোর পর যোগ করা সময়ে জয়ের তৃপ্তি নিশ্চিত করেন কাসেমিরো।
আগের তিন ম্যচ জিতে ৯ পয়েন্ট পাওয়া স্বাগতিকদের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ায় ম্যাচের কয়েকজন সদস্যকে বিশ্রাম দেন কোচ তিতে। ছিলেন না নেইমার, কাসেমিরোর মতো খেলোয়াড়। আসর থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায় থাকা একুয়েডর সুযোগটা কাজে লাগায় দারুণভাবে। ব্রাজিলকে ১-১ সমতায় রুখে দেয় তারা।
শেষ ৮ বা কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে চিলিকে পায় ব্রাজিল। ম্যাচটি সহজ ছিল না নেইমারদের জন্য। লুকাস পাকুয়েতার একমাত্র গোলে ২০১৫ ও ২০১৬ সালের চ্যাম্পিয়নদের হারায় স্বাগতিকরা। সে ম্যাচে ব্রাজিলের জয় ছাপিয়ে আলোচনায় ফরোয়ার্ড গাব্রিয়েল জেসুস লাল কার্ড। বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে চিলির ইউজেনি মেনার মুখে বুট দিয়ে আঘাত করে জেসসু। এই লাল কার্ডের কারণে দল ফাইনালে উঠলেও খেলতে পারবেন না তিনি।
সে ম্যচে ১০ জনের ব্রাজিলকে চেপে ধরা চিলি ভাগ্যকে পাশে পায়নি একটুও। বেন ব্রেরেটনের হেড ফিরিয়ে দেয় ক্রসবার, শেষ দিকে ভারসাগাসের শট ফিরিয়ে ব্রাজিলের ত্রাতা এদেরসন। হারের পর ম্যাচের আর্জেন্টাইন রেফারিকে ‘ভাঁড়’ বলে ব্যঙ্গ করেন চিলির মিডফিল্ডার আর্তুরো ভিদাল।
সেমিফাইনালেও নেইমাদের দিতে হয় অগ্নিপরীক্ষা। গ্রুপ পর্বে পেরুকে ৪-০ গোলের ব্যবধানে উড়িয়ে দিলেও এই ম্যাচ সহজ ছিল না সেলেসাওদের জন্য। আধিপত্য বিস্তার করে খেলা ব্রাজিল এদিন খেলার অষ্টম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো। তবে রিশার্লিসনের পাসে নেইমারের শট অল্পের জন্য জালের দেখা পায়নি।
ম্যাচের প্রথম ও একমাত্র গোলটি আসে ৩৫তম মিনিটে মাঝ মাঠ থেকে বল পেয়ে দারুণ দক্ষতায় ডি-বক্সে ঢুকে যান নেইমার। সেখান থেকে অসাধারণ তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে অরক্ষিত পাকুয়েতাকে পাস দেন তিনি। পরে এক শটে অনায়াসেই গোলটি অলিম্পিক লিওঁর এই মিডফিল্ডার। ১-০ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে আর্জেন্টার আগেই অবশ্য ফাইনালের টিকিট পায় ব্রাজিল। দ্বিতীয় সেমিফাইনাল জিতে পরে ফাইনালের মঞ্চে নাম তোলে মেসিরা।
আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচটির দিকে তাকিয়ে গোটা ফুটবল বিশ্ব। ১৪ বছর পর বড় কোন টুর্নামেন্টের ফাইনালে মুখোমুখি হবে এই দুই দল। সবশেষ ২০০৭ সালের কোপা আমেরিকার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। সেবার ব্রাজিল ৩-০ গোলের জয় পায়। ২০১৯ কোপার সেমিফাইনালেও ব্রাজিল আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল।
যদিও পরিসংখ্যান বলছে ২টি বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনা এবং ৫টি বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিলের মধ্যে যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সেটায় কোপা আমেরিকায় এগিয়ে আর্জেন্টিনা। এখন পর্যন্ত ১৪বার দক্ষিণ আমেরিকার সর্বোচ্চ শিরোপা জিতেছে আর্জেন্টিনা, ৯ বার জিতেছে ব্রাজিল।
তবে বৈশ্বিক কোন টুর্নামেন্ট বা প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে এখন পর্যন্ত ১০৭ বার মুখোমুখি হয়েছে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। যেখানে ৪৮ বার জয় পেয়েছে ব্রাজিল, ৩৪টি ম্যাচে আর্জেন্টিনা জয় পেয়েছে। ২৫টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। ফাইনালের মতো মেগা মঞ্চে অবশ্য পরিসংখ্যানের ব্যাপারটি নিছক তুচ্ছ বিষয়। এ ম্যাচে যারা আধিপত্য দেখাতে পারবে, ম্যাচ শেষে শিরোপা উল্লাসে মাতবে তারাই। আপাতত অপেক্ষা সেই ফাইনালের।
টিআইএস/এমএইচ