কাদা মাখা ফুটবল, বাফুফের নেই গ্রাউন্ডস কমিটি

এই মাঠেই চলছে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবল লিগ বিপিএল/সংগৃহীত
মৌসুমি বৃষ্টিতে মাঠে কাদা। মাঝে মধ্যে বল আটকে যাচ্ছে পানি ও কাদায়। ফুটবলাররা কাদা-পানিতে মেখে একাকার। এক ম্যাচ শেষের পরপরই হচ্ছে আরেক ম্যাচ। এমন মাঠে আবার পরের দিনও থাকছে ম্যাচ। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের গত কয়েক দিনের চিত্র এটি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, বিপক্ষ দল নয়, মাঠই খেলোয়াড়দের আসল প্রতিদ্বন্দ্বী।
কাজী সালাউদ্দিনের চতুর্থ মেয়াদের ইতোমধ্যে ৮ মাস অতিবাহিত হয়েছে। অনেক স্ট্যান্ডিং কমিটি হলেও বাফুফের গ্রাউন্ডস কমিটি গঠন হয়নি। ফেডারেশনের অনেক কর্তাদের মুখে এখন শোনা যাচ্ছে, গঠনতন্ত্রে নেই তাই গ্রাউন্ডস কমিটি বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু গত তিন মেয়াদে গ্রাউন্ডস কমিটি ছিল।
বিজ্ঞাপন
মাঠের সাথে লিগের সম্পর্কই বেশি। লিগ কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফে সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদি মাঠ কমিটির প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের এখনো মাঠ কমিটি গঠিত হয়নি। প্রিমিয়ার লিগ, মহিলা ফুটবলসহ যখন যে প্রতিযোগিতা চলে তখন সেই সংশ্লিষ্ট কমিটি মাঠের বিষয়টি দেখে।’ সিনিয়র সহ-সভাপতি কমিটিগুলোর সমন্বয়ের কথা বললেও মুলত মাঠ কর্মী চান্দুর অক্লান্ত পরিশ্রম, তৃণমূলের সংগঠক জাহাঙ্গীর সহ আরো কয়েকজন ফেডারেশনের প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গের মৌখিক নির্দেশনায় মাঠ দেখভাল করছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ নেই।
বাফুফের গত তিন কমিটিতে গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন সিনিয়র সংগঠক ফজলুর রহমান বাবুল। তিনি সর্বশেষ নির্বাচনে সালাউদ্দিন-সালামের বিপক্ষ প্যানেল থেকে নির্বাচন করে হেরেছেন। সালামরা তাকে কোনো কমিটিতে রাখেননি। তাও ফুটবলের টানে মাঝে মধ্যে স্টেডিয়ামে আসেন। মাঠের এমন বেহাল দশায় চরম ব্যথিত এই সংগঠক।
এমন মাঠে ফুটবল অবশ্য নতুন কিছু নয়। গ্রাউন্ডস কমিটি থাকার পরেও এমন মাঠে খেলা হয়েছে আগে ক্রমাগত। পার্থক্য হচ্ছে, তখন মাঠ নিয়ে কথা বলার ও প্রতিবাদের কেউ ছিল। এখন সেটিও নেই।
মাঠের ব্যাপারে বাফুফে বরাবরই উদাসীন। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের হলেও বাফুফে সারা বছর ব্যবহার করে। প্রায় সব খরচ এনএসসি করলেও বাফুফে মাঠের খাতে খরচ করতে বেশ কৃপণ।
বাফুফে মাঠ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনায় সেভাবে কখনো খরচ করেনি। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম অধিকাংশ ক্লাবের হোম। ক্লাবগুলোর কাছ থেকেও কখনো মাঠ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে বাফুফেকে কিছু বলতে শোনা যায়নি।
সালাউদ্দিন-সালাম প্যানেল থেকে হারা অনেকে একাধিক স্ট্যান্ডিং কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন । জাতীয় দলের বর্তমান ম্যানেজারও তাদের প্যানেলের বিজিত প্রার্থী। ফজলুর রহমান বাবুল অন্য প্যানেল থেকে নির্বাচন করায় ফুটবলের দক্ষ ও নিবেদিত সংগঠক হয়েও উপেক্ষিত।
বাফুফে কার্যনির্বাহী কমিটি ২১ জনের। এর মধ্যে চলতি মৌসুমে কার্যনির্বাহী সদস্য জাকির হোসেন চৌধুরী অনেকটা নিয়মিত বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে আসেন। বাফুফের অনেক কর্মকর্তা ক্লাবের ম্যানেজার। তারা নিজ দলের খেলার দিন ডাগ আউটে থাকলেও অন্য দিনগুলোতে স্টেডিয়ামে থাকেন না। বসুন্ধরা কিংসের ম্যাচে অবশ্য অনেক সদস্যকে দেখা যায়।
এই মৌসুম থেকে অধিকাংশ খেলা টিভিতে সম্প্রচার হচ্ছে। হয়তো অনেকে টিভির পর্দায় দেখেন। বিগত মৌসুমগুলো টিভিতে তেমন সম্প্রচার হয়নি। তখনও নির্বাহী কমিটির দুই একজন (আবদুর রহিম, ফজলুর রহমান বাবুল) বাদে বাকিদের মাঠ তেমন টানেনি!
এজেড/এনইউ