সত্যিই কি লিভারপুল কিনে নেবেন ইলন মাস্ক?
জানুয়ারি মাসটাই বোধকরি এমন। ফুটবল দুনিয়াতে নানা গুঞ্জনের শুরু হয় সময়েই। দলবদলের মৌসুমে গুঞ্জন ছড়াতে খুব একটা সময় লাগে না। সেটাই হয়েছিল ইলন মাস্ক এবং লিভারপুলকে নিয়ে। নিছকই একটা খবর এসেছিল স্কটল্যান্ডের সানডে পোস্ট পত্রিকা থেকে। বলা হচ্ছিল, লিভারপুল কিনতে আগ্রহী বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ব্যক্তি মাস্ক। তবে সেটাকে খুব একটা গুরুত্ব দিয়ে নেয়নি কেউই।
এরপরেই অবশ্য গুঞ্জন ডালপালা মেলেছে। কিন্তু সেটা বেশ বড় আকারই ধারণ করেছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। এমনকি ইলন মাস্কের বাবা এরল মাস্ক নিজেও জানিয়েছেন ইলন মাস্ক কিনতে চান ইংল্যান্ডের অন্যতম সফলতম ক্লাবটি। যদিও অ্যানফিল্ডের ক্লাবটির বর্তমান মালিকপক্ষ ফেনওয়ে স্পোর্টস গ্রুপ (এফএসজি) এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পায়নি বলে জানিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
২০২২ সাল থেকেই লিভারপুলে বিভিন্ন সময়ে বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে আসছে এফএসজি। একই প্রতিষ্ঠানের অধীনে আছে বাস্কেটবল দল ‘বোস্টন রেড সক্স’ এবং আইসহকি দল ‘পিটসবার্গ পেঙ্গুইন।’ তবে এদের মাঝে কেবল লিভারপুলেই সমর্থকদের কাছ থেকে কিছুটা অসন্তোষের শিকার হয়েছিল ফেনওয়ে স্পোর্টস গ্রুপ। এরপর থেকেই মূলত ক্লাবের জন্য বাইরের বিনিয়োগ খুঁজতে আগ্রহী হয় তারা।
কিন্তু এরপরেই লিভারপুলের দায়িত্বে থাকা জন হেনরি জানিয়েছিলেন, তারা এখনই লিভারপুল বিক্রির কোনো চিন্তা করছেন না। যদিও ইংল্যান্ডে চিরদিন থাকার ইচ্ছে নেই, তবে খুব শীঘ্রই মালিকানা হস্তান্তরের ইচ্ছে নেই তাদের। ফোর্বস ম্যাগাজিন জানাচ্ছে, ২০১০ সালে ৩০০ মিলিয়নে কেনা ক্লাবটির বর্তমান মূল্য ৪.৩ বিলিয়ন পাউন্ড ছাড়িয়ে গিয়েছে।
তবে এত অর্থ দিয়ে সত্যিই কি ইলন মাস্ক কিনতে আগ্রহী হবেন লিভারপুল ফুটবল ক্লাবকে। এর জবাবে ইলনের বাবা এরল মাস্ক বলেছেন, ‘আমি এই ব্যাপারে কোনো কথা বলতে পারি না। তারা দাম বাড়িয়ে দেবে।’ কিন্তু উত্তর পেতে টাইমস রেডিও থেকে আরও কিছুটা জোরাজুরি করা হলে এরল মাস্কের বক্তব্য, ‘হ্যাঁ। তবে এর মানে এইই না, সে ক্লাবটি কিনে নিচ্ছে।’
আরও পড়ুন
কিন্তু ইলন মাস্ক কেন লিভারপুল ক্লাব কেনার প্রতি আগ্রহী হবেন? এই প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন এরল মাস্ক, ‘তার দাদিমা জন্মেছেন লিভারপুলে। সেই শহরে আমাদের অনেক আত্নীয় আছে। আর আমরা বিটলস (বিখ্যাত ব্যান্ডদল) সম্পর্কে অনেককিছুই জানি, কারণ তাদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে যোগাযোগ আছে। বুঝতেই পারছেন, আমরা লিভারপুলের সঙ্গে অনেকভাবেই যুক্ত।’
২০২৩ সালে সবশেষ নিজেদের ক্লাবের একটি অংশ যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ডাইন্যাস্টি ইকুইটির কাছে বিক্রি করেছিল এফএসজি। তখনই এফএসজি প্রেসিডেন্ট মাইক গর্ডন বলেছিলেন, লিভারপুলের প্রতি আমাদের লম্বা-সময়ের প্রতিশ্রুতি এখন পর্যন্ত আগের মতোই শক্ত আছে। আমরা আগেও বলেছি, ক্লাবের স্বার্থে বিনিয়োগ গ্রহণ করতে আমরা আগ্রহী।’
শেষ পর্যন্ত অবশ্য ইলন মাস্ক ক্লাব কিনবেন কি না তা সময়ই বলে দেবে। এর আগে টুইটার কেনার আগেও ছিল ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা। সেসব মিথ্যে প্রমাণ করেই সামাজিক এই যোগাযোগমাধ্যম কিনে নেন ইলন মাস্ক। ৩৪০ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক ইলন মাস্কের সাম্প্রতিক পদবীও বেশ ভারি।
নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইলন মাস্ককে নতুন একটি দপ্তরের দায়িত্ব দিতে যাচ্ছেন তিনি। দপ্তরটির নাম হবে “ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি”। এরইমাঝে টেসলা এবং স্পেস এক্সের মালিক ইলন মাস্ককে তাই কয়েক বছরের মাঝে লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের মালিকানায় দেখলে খুব একটা অবাক হওয়ার কিছু থাকছে না।
জেএ