বিদেশিহীন আবাহনীর কাছেই প্রথম হারল কিংস
রেফারি জালাল উদ্দিনের শেষ বাঁশি। কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আবাহনী ফুটবলারদের উল্লাস। অন্যদিকে, গ্যালারিতে বিজয় উদযাপন আবাহনী সমর্থকদের। লিগ বা কোনো ট্রফি নিশ্চিত নয়, আবাহনী প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে বসুন্ধরা কিংসকে প্রথমবারের মতো হারিয়েছে। তাই তো এমন উদযাপনে ঐতিহ্যবাহী দলটি।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে আবির্ভাব বসুন্ধরা কিংসের। এরপর টানা পাঁচবারই তারা চ্যাম্পিয়ন। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী দল আবাহনী বসুন্ধরা কিংসকে টুর্নামেন্টে হারালেও, কখনও লিগে জিততে পারেনি। ছয় মৌসুম পর আজই প্রথমবারের মতো আবাহনী কিংসকে পরাজিত করল। সেটাও আবার বিদেশি খেলোয়াড় ছাড়া।
বিজ্ঞাপন
ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে একমাত্র জয়সূচক গোলটি করেন আবাহনীর ফরোয়ার্ড সুমন রেজা। মধ্যমাঠ থেকে বক্সে সুমনের উদ্দেশে একটি ক্রস দেওয়া হয়। কিংসের ডিফেন্ডারদের মাঝ থেকে সুমন দুর্দান্তভাবে বলের দিক পরিবর্তন করে হেড নেন। যা দেখে কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ দর্শক বনে যান। এরপর উল্লাসে মাতেন আবাহনীর সমর্থকরা।
জাতীয় ফুটবল দলে এক সময় এক নম্বর স্ট্রাইকারই ছিলেন সুমন রেজা। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গোল না পাওয়ায় কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা ফরমেশনে পরিবর্তন আনেন। ২০২৩ সালের পর থেকে সুমন আর জাতীয় দলে নিয়মিত নন। এবার আবাহনীতে বিদেশি স্ট্রাইকার না থাকায় নিজের দক্ষতা আবারও প্রমাণ করছেন।
সুমনের গোলে আবাহনী লিড নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরে। বিরতির পর ম্যাচে ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে বসুন্ধরা কিংস। একপর্যায়ে তারা সমতা আনার সুবর্ণ সুযোগও পায়। তবে পেনাল্টি থেকে সমতা আনতে পারেননি কিংসের বিদেশি ফরোয়ার্ড। এজন্য কৃতিত্ব অবশ্য আবাহনী গোলরক্ষক মিতুল মারমার। তিনি ঝাঁপিয়ে পড়ে গোল রক্ষা করেন। ম্যাচের বাকি সময় আবাহনীর ওপর কিংস যথেষ্ট চাপ প্রয়োগ করে। আবাহনীর রক্ষণভাগ ও গোলরক্ষকের দৃঢতায় কিংস সমতা আনতে পারেনি। ফলে লিগে প্রথমবারের মতো কিংসকে হারানোর স্বাদ পায় আবাহনী।
বাংলাদেশের ফুটবলে বিদেশিদের বেশ প্রাধান্য। বিদেশি পারফরম্যান্সই ম্যাচের ফলাফল ও পার্থক্য গড়ে দেয়। এবার আবাহনী বিদেশি ফুটবলার নিতে পারেনি। দেশের অন্যতম সেরা কোচ মারুফুল হক আবাহনীর দায়িত্ব নিয়েছেন। মারুফ দেশি ফুটবলারদের নিয়েই বাজিমাত করছেন। আগের ম্যাচে মোহামেডানের বিপক্ষে দুর্দান্ত লড়াই করেছিল আবাহনী। আজ তারা বসুন্ধরা কিংসকেই হারিয়ে দিলো।
বসুন্ধরা কিংস এক লিগে দুই বার হারের রেকর্ড নেই। চলতি লিগে কিংস চার ম্যাচের মধ্যে দুটিতে হারল। দেশের দুই জনপ্রিয় দল আবাহনী ও মোহামেডানের বিপক্ষে হেরে পয়েন্ট তালিকায় পিছিয়ে পড়ল কিংস। শিরোপা ধরে রাখতে আগামী ম্যাচগুলোতে কিংসকে নিজেদের জয় ছাড়াও অন্যদের পয়েন্ট হারানোর দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে।
এজেড/এএইচএস