লা লিগায় গতকাল (শনিবার) একই রাতে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ উভয়ই ভিন্ন ম্যাচে নেমেছিল। দু’বার লিড নিয়েও শেষ পর্যন্ত রিয়াল বেটিসের বিপক্ষে জয় পায়নি টেবিল টপার বার্সেলোনা। ইনজুরি সময়ের গোলে ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছে। অন্যদিকে, জিরোনাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ফলে এক ম্যাচ কম খেলে বার্সেলোনার সঙ্গে তাদের পয়েন্ট ব্যবধান ২–এ নেমে এলো।

বার্সেলোনা ২ : ২ রিয়াল বেটিস
প্রতিপক্ষ রিয়াল বেটিসের মাঠে খেলতে নেমেই হোঁচট খেলো হ্যান্সি ফ্লিকের বার্সেলোনা। এই জার্মান কোচ নিজেও ম্যাচের মাঝে লাল কার্ড দেখে ডাগআউট ছেড়েছেন। ম্যাচজুড়ে বল দখলে বার্সা এগিয়ে ছিল ঠিকই, তবে আক্রমণে বেশি দখল ছিল স্বাগতিক বেটিসের। তারা বারবার সুযোগ হাতছাড়া না করলে বার্সাকে আরও তিক্ত দিন দেখতে হতো। বার্সার হয়ে গোল দুটি করেছেন রবার্ট লেভান্ডফস্কি ও ফেররান তোরেস।

শুরুতেই দুই দফায় সুযোগ পায় বেটিস। প্রথমবার গোলবার থেকে রাফিনিয়ার হেড এবং দ্বিতীয়বার গোলরক্ষক ইনাকি পিনা তাদের ব্যর্থ করে দেয়। এরপর বার্সাও পরপর দুই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি প্রতিপক্ষ অর্ধে। ম্যাচের ডেডলক ভাঙা গোলটি আসে ৩৯ মিনিটে। পোল্যান্ড তারকা লেভান্ডফস্কি জুল কুন্দের চমৎকার ক্রসে ছুটে গিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন। এটি চলতি মৌসুমে তার ষোড়শ গোল। ১১টির বেশি গোল নেই আর কারও। বিরতির আগপর্যন্ত বেটিসের রক্ষণে রীতিমতো ত্রাস ছড়ায় বার্সা। যদিও গোল হয়নি এই সময়ে।

দ্বিতীয়ার্ধে উভয় দল আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ওঠে। ৬৮তম মিনিটে পেনাল্টি পায় বেটিস। বার্সারই ধারে পাঠানো স্ট্রাইকার ভিটর রকিকে ফাউল করেন ফ্রেংকি ডি ইয়ং। তিনি হলুদ কার্ড দেখলেও, উত্তেজিত বার্সা কোচ ফ্লিককে দেখানো হয় লাল কার্ড। বেটিসের আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার জিওভান্নি লো সেলসো সফল স্পটকিকে ম্যাচে সমতা টানেন। বার্সা আবারও লিড নেয় ৮২তম মিনিটে। লামিনে ইয়ামালে দারুণ পাসে অসাধারণ ফিনিশিং দেন তোরেস। তবে সেই উল্লাস স্থায়ী হয়নি শেষ পর্যন্ত। যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে বেটিসের আসসানে দিয়াও গোল করে বার্সাকে হতাশায় ডোবান।

চলতি লা লিগায় বার্সেলোনা দ্বিতীয় ড্র করে ১৭ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৩৮। তবে এখনও শীর্ষেই আছে তারা। সাবেক স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা লিগে নিজেদের শেষ পাঁচ ম্যাচে কেবল একটিতে জিতেছে। একই রাতে জয় পাওয়া রিয়াল এক ম্যাচ কম খেলে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে তাদেরই পেছনে অবস্থান করছে। 

রিয়াল মাদ্রিদ ৩ : ০ জিরোনা 
জিরোনার মাঠে খেলতে নেমে বল দখলে রিয়াল এগিয়ে থাকলেও, স্বাগতিকরা ছিল আক্রমণে প্রায় সমান। তবে তিনবার জালে বল জড়াতে পেরেছে রিয়াল। এদিন গোলের দেখা পেয়েছেন জুড বেলিংহ্যাম, আর্দা গুলার, কিলিয়ান এমবাপে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও চলতি লা লিগায় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না পাওয়ায় কোচ কার্লো আনচেলত্তি ও এমবাপের তীব্র সমালোচনা হচ্ছিল। এই জয়ে কিছুটা স্বস্তি মিলল তাদের।

যদিও ম্যাচের শুরু থেকে চিরাচরিত ধারায় ধীরস্থির নির্জীব খেলা উপহার দেয় রিয়াল। অন্যদিকে বারবার তাদের রক্ষণে হানা দেয় জিরোনা। সফরকারী রিয়াল সফলভাবে লক্ষ্যে ম্যাচের প্রথম শটটি নেয় ৩৪তম মিনিটে। এর দুই মিনিট পরই তারা লিড নেয়। জিরোনা বল ক্লিয়ার করতে না পারার সুযোগ কাজে লাগিয়ে বেলিংহ্যাম ছুটে গিয়ে জোরালো শটে সফল হন। যা লা লিগায় এই ইংলিশ মিডফিল্ডারের টানা পাঁচ ম্যাচে পঞ্চম গোল।

দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে রিয়াল। অভিজ্ঞ লুকা মদ্রিচের পাস মাঝমাঠে পেয়ে থ্রু বল বাড়ান বেলিংহ্যাম। প্রতিপক্ষের দুজনের মাঝ দিয়ে ক্ষিপ্র গতিতে বল ধরে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের শটে ঠিকানা খুঁজে নেন গুলের। যা এই মরক্কান মিডফিল্ডারের ক্লাবের জার্সিতে মৌসুমের প্রথম গোল। ৬২তম মিনিটেই তৃতীয় গোল করে রিয়াল। টানা দুটি পেনাল্টি মিস করে সমালোচনায় বিদ্ধ ফ্রান্স অধিনায়ক এমবাপে মদ্রিচের পাস ধরে কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠান। ৩-০ ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে আনচেলত্তির শিষ্যরা।

এএইচএস