স্টেডিয়ামের গ্যালারি শেডে বসছে ফ্লাডলাইট!
বর্তমানে আধুনিক অনেক স্টেডিয়ামের গ্যালারি শেডেই ফ্লাডলাইট সংযুক্ত থাকে। বাংলাদেশের কোনো স্টেডিয়ামে অবশ্য এমনটা দেখা যায় না। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের চলমান সংস্কারে ফ্লাডলাইট গ্যালারি শেডে স্থাপনের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে চারপাশে চারটি পোলের (খুঁটি) ওপর ফ্লাডলাইট ছিল। আগের ফ্লাডলাইটগুলো ছিল মেটালিক। সেখানে প্রতিটি পোলের ওপর লাইট ছিল ৯০-৯৫টি। পোলগুলোর বয়স প্রায় দুই যুগেরও বেশি। নতুন ফ্লাডলাইট এলইডি। সেগুলো খানিকটা ওজনদার হওয়ায় পোলের ভার গ্রহণের সক্ষমতা এবং গ্যালারির ওপর শেডের কারণে আলো বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পোলের পাশাপাশি গ্যালারি শেডেও লাইট স্থাপনের আলোচনা চলছে।
বিজ্ঞাপন
আজ শনিবার সরকারি দাপ্তরিক ছুটির দিন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। গ্যালারি, মাঠ ও বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘পোলের পাশাপাশি কেনোপি (গ্যালারি শেডে) পদ্ধতিতেও লাইট স্থাপনের প্রস্তাবনা আছে। আমরা বুয়েটের কাছ থেকে এই সংক্রান্ত পরামর্শ গ্রহণ করব।’ বুয়েটের সংশ্লিষ্ট বিভাগ, বাফুফে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বৈঠক করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসবে।
আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ আয়োজনে দুই হাজার লাক্সের বেশি আলো প্রয়োজন। বাফুফে সেই চাহিদা আরও বাড়িয়ে উন্নত মানের টিভি প্রোডাকশনের জন্য তিন হাজার লাক্সের চাহিদা দিয়েছে। সেটা পূরণের চেষ্টা করছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। যে পদ্ধতিতেই লাইট স্থাপন হোক সেটা দ্রুত এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ক্রীড়া মন্ত্রনালয় সচিবের, ‘ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে লাইট চূড়ান্ত করেছে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি লাইট স্থাপনের কাজ শুরু হবে। এর মধ্যেই আমরা বুয়েটের কাছ থেকে সিদ্ধান্ত/পরামর্শ পেয়ে যাব। আমাদের লক্ষ্য থাকবে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী টুর্নামেন্ট এই স্টেডিয়ামে আয়োজনের।’
১১ ফেব্রুয়ারি থেকে সাফ অ-২০ নারী টুর্নামেন্ট শুরু। বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্টের আয়োজক। বাফুফের পরিকল্পনা রয়েছে নারীদের টুর্নামেন্টটি এই মাঠে আয়োজনের। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ও এতে একমত, ‘উপদেষ্টা মহোদয়ের নির্দেশনায় আমরা দ্রুত কাজ সম্পন্নের তাগিদ দিয়েছি সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহকে। ফ্লাডলাইট ছাড়া বাকি কাজগুলো ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে। আমরাও চাই নারীদের টুর্নামেন্টের আগে সকল কাজ শেষ করতে।’ বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার বলেন, ‘আমাদের ভেন্যু সমস্যা অনেক। এই মাঠ পেলে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ফুটবল আয়োজনে অত্যন্ত সহায়ক হবে।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, করোনা মহামারি, ডিজাইনে পরিবর্তন– নানা কারণে সংস্কার কাজের সময় ও ব্যয় দু’টোই বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকল্পের সর্বশেষ মেয়াদ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত হলেও ফ্রেবুয়ারির মধ্যেই সব কিছু সম্পন্নের তাগিদ ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের। কাজে দ্রুততার তাগিদের পাশাপাশি গুণগত মানও নিশ্চিতের বিষয়টি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রকোশলীদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ‘গুণগত মান শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। এই বিষয়ে কোনো আপস নেই।’
দেড়শ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সংস্কার চলছে। স্টেডিয়ামের পরিবেশ একেবারে খেলাধুলার উপযোগী নয়। নোংরা ও কোলাহলযুক্ত। এ বিষয়ে সচিব বলেন, ‘স্টেডিয়ামের সৌন্দর্য্যের বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও নির্দেশনা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ গ্রহণ করবে।’
স্টেডিয়াম সংস্কার কাজ পরিদর্শনে মন্ত্রণালয়ের সচিব ছাড়াও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব আমিনুল ইসলাম, বাফুফে নির্বাহী সদস্য ইকবাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রকল্প পরিচালক, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এজেড/এএইচএস