গোলের খেলা ফুটবলে স্বাভাবিকভাবেই আলোচনার কেন্দ্রে থাকেন ফরোয়ার্ডরা। তবে ফুটবলের পাড় ভক্তরা ঠিকই অন্যান্য পজিশনের তারকাদের সম্পর্কেও ধারণা রাখেন। তেমনই একজন মাঝমাঠে স্পেন ও ম্যানচেস্টার সিটির বিশ্বস্ত তারকা রদ্রিগো হার্নান্দেজ। যিনি তারকা ফরোয়ার্ডদের পেছনে ফেলে নাটকীয়ভাবে এবার ব্যালন ডি’অর জিতেছেন। অথচ মাত্র ১৭ বছর বয়সেই নাকি ফুটবল ছাড়তে চেয়েছিলেন রদ্রি।

কিশোর বয়সে ফুটবলে ক্যারিয়ার গড়া নিয়ে সংশয়ে ছিলেন ২৮ বছরের এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। ওই সময় তিনি ফুটবল খেলা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে ঠিক প্রেরণা পাচ্ছিলেন না। সম্প্রতি স্প্যানিশ টিভি চ্যানেলের ‘এল হরমিগুয়েরো’ নামের এক অনুষ্ঠানে এমনটাই বলেছেন রদ্রি। গত মাসে তিনি ফরাসি সাময়িকীর দেওয়া ফুটবলের অন্যতম প্রেস্টিজিয়াস পুরস্কার গোল্ডেন বল জেতেন।

সাক্ষাৎকারে রদ্রি বলেছেন, ‘সখের বশে ফুটবল খেলার বিষয় আর নেই, এটি এখন পেশায় পরিণত হয়েছে। যদি সর্বোচ্চ পর্যায়ে যেতে চান, তাহলে কিছু পাব এমন প্রত্যাশা না রেখেই নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করতে হয়। আমার শৈশবকালটা স্বাভাবিক ছিল না, আমি অনেক মুহূর্ত হাতছাড়া করেছি। পরিবার ছেড়ে আমাকে ভিয়ারিয়ালে (স্প্যানিশ ক্লাব) যোগ দিতে হয়েছিল, সেটাই ছিল আমার জীবনের সেরা সিদ্ধান্ত। সেখানে প্রথম বছরটি ছিল খুব কঠিন।’

গত সেপ্টেম্বরে এসিএল ইনজুরিতে পড়ায় চলতি মৌসুম থেকে ছিটকে গেছেন রদ্রি

পরিবার থেকে দূরে থাকার সময়ে ফুটবল ছাড়ার কথাও ভেবেছিলেন বলে জানান রদ্রি, ‘আমার ১৭ থেকে ১৯ বছরের সময়টি লাফিয়ে পার হওয়া দরকার ছিল। আমি ভগ্ন হৃদয়ে বাবাকে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করি– সব (পরিবার) ছেড়ে এসে এই ত্যাগের কোনো অর্থ আছে কি না। তিনি আমাকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, ইতোমধ্যে এক বছর চলে গেছে। সেই বছরটি আমি হারিয়ে ফেলেছি। ফলাফল কী হবে তা না ভেবেই আমার সেদিকেই মনোযোগ দেওয়া উচিৎ এবং আমার সামনে এখন জয়ই বাকি, হারানোর কিছু নেই।’

২০০৭ সালে ১১ বছর বয়সে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের যুব দলে যোগ দেন রদ্রি এবং সেখানেই ছিলেন ৬ বছর। ২০১৩ সালে ১৭ বছর বয়সে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয় তাকে। কারণ ভিয়ারিয়ালের যুব একাডেমিতে যোগ দিতে ওই সময় তাকে মাদ্রিদে থাকা পরিবার ছাড়তে হয়। যদিও ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাকে দলটির হয়ে অভিষেকের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়। পেশাদার দলে অভিষেকের জন্য কাটাতে হয় আরও ১০ মাস।

২০১৯ সালে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দিয়ে ভাগ্য ফিরতে শুরু করে রদ্রির। মাঠে নিজের প্রভাব-বিস্তার করা ভূমিকার জন্য তিনি স্পেন জাতীয় দলেও নিয়মিত হয়ে ওঠেন। ২০২২-২৩ মৌসুমে ম্যানসিটির হয়ে প্রিমিয়ার লিগ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ক্লাব বিশ্বকাপ এবং স্পেনের হয়ে উয়েফা নেশন্স লিগ জিতেছিলেন রদ্রি। এর মধ্যে চ্যাম্পিয়নস লিগ, নেশনস লিগ ও ক্লাব বিশ্বকাপ—তিনটিতেই টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন তখন। তবে সেবার ব্যালন ডি’অরের দৌড়ে হন চতুর্থ। পরের মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ ও স্পেনের হয়ে ইউরো জয়ের পর ব্যালন–ও উঠলো রদ্রির হাতে।

এএইচএস