বিশ্ব ফুটবলে গত দুই দশক ধরে রোমাঞ্চকর লড়াই ছিল লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মাঝে। তারা দুজন এখনও নিজেদের চিরাচরিত ফুটবল কারিশমা দেখিয়ে যাচ্ছেন ঠিকই, তবে সেটি কিছুটা আড়ালে। ইউরোপ ছেড়ে দূরে যাওয়ায় হয়তো সেই তেজটা আগের মতো নেই! তবে ঠিকই এখনও ফুটবলভক্তরা সময় পেলে মেসি-রোনালদো কে সেরা, এই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। সেটাই এবার উসকে দিলেন আর্জেন্টিনার সদ্য অবসরপ্রাপ্ত তারকা আনহেল ডি মারিয়া।

আর্জেন্টিনা ও পর্তুগালের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গেই খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে ডি মারিয়ার। রোনালদোর সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদে, জিতেছেন ৬টি বড় শিরোপা। আর স্বদেশি সতীর্থ ও বন্ধু মেসির সঙ্গে তিনি জাতীয় দলে মাঠ মাতিয়েছেন লম্বা সময় ধরে। এর মাঝে দুজনেরই একসঙ্গে কোপা আমেরিকা ও বিশ্বকাপ জয়ের কীর্তি রয়েছে। ফলে দুজনের সঙ্গে খেলা এই ‘এল ফিদেও’ কাকে সেরা হিসেবে বেছে নিলেন সেটি কোনো অংশেই কম আকর্ষণীয় নয়!

এ নিয়ে আর্জেন্টাইন সাংবাদিক জুয়ান পাবলো ভারস্কির সঙ্গে ক্ল্যাঙ্ক পডকাস্ট অনুষ্ঠানে ডি মারিয়া বলেন, ‘আমি সবসময়ই একটি কথা বলি– তা হচ্ছে তারা (মেসি-রোনালদো) দুজনই ইতিহাসের সেরা ফুটবলার। তবে স্পষ্টভাবে সেরা বিবেচনায় বেশ এগিয়ে মেসি। এটি শুধুমাত্র সে আটটি ব্যালন ডি’অর জিতেছে এই কারণে নয়, এর বাইরে সবকিছু মিলিয়ে। ক্রিশ্চিয়ানোর বিষয়টা হচ্ছে– কাজ, কাজ এবং কাজ। কিন্তু মেসি হচ্ছে খাঁটি প্রতিভা, সৃষ্টিকর্তার উপহার। তাই সেরা হওয়ার জন্য তাকে অতিরিক্ত কিছু করতে হয় না।’

একইভাবে রোনালদো নিজের প্রতিভা ও কৌশল পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জন করেছেন উল্লেখ করে মেসিকে তুলনাহীন বলে জানান ডি মারিয়া। বেনফিকার এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বলেন, ‘ক্রিশ্চিয়ানোকে অনেক কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিম করেছে, সেরা ফিনিশিং আয়ত্ব করেছে এবং বারবার একই কাজ করে গেছে। কিন্তু লিও, তার বিষয়টা এমন যেন সে কেবলই বন্ধুদের সঙ্গে খেলছে। সে কারণে দুজনের মাঝে অনেক বড় পার্থক্য রয়েছে। লিও তুলনাহীন।’

মেসির সঙ্গে ডি মারিয়া প্রথম বড় কোনো বিজয় উদযাপন করেছেন ২০০৮ অলিম্পিক গেমসের ফুটবলে স্বর্ণ জিতে। দুজনের একসঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা জানিয়ে ৩৬ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার বলেন, ‘এটি (একসঙ্গে খেলা) আমার কাছে অন্যরকম এক অনুভূতি। তার সঙ্গে অলিম্পিক্স ভাগাভাগি করা, কথা বলা এবং আশপাশে থাকা অবিশ্বাস্য। এটি খুবই বিশেষ। আমি কখনোই ভাবিনি আমরা একসঙ্গে ১৬ বছর জাতীয় দলে খেলব। কিন্তু আমি তার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেছি সেই বেইজিং অলিম্পিক্স। যেসব মুহূর্ত আপনি বারবার পেতে চাইবেন।’

প্রসঙ্গত, ২০২৪ কোপা আমেরিকা দিয়েই অবসরের ঘোষণা আগেভাগে দিয়ে রেখেছিলেন এল ফিদেও। দীর্ঘদিনের সতীর্থ মেসির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত সেই আসরে শিরোপা জিতেই তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলে ইতি টানলেন। এরপরও ডি মারিয়াকে জড়িয়ে মেসির ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে যাবেন বলে গুঞ্জন ওঠে। যদিও এখন পর্যন্ত পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকায় নিজের ছন্দ দেখিয়ে চলেছেন এই অভিজ্ঞ আলবিসেলেস্তে।

এএইচএস