বাফুফের ভাবনায় পিন্টুর স্মৃতি
মোহামেডান ক্লাব থেকে কয়েক গজ দূরত্বেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। সাদা-কালো ক্লাবে জানাজা শেষে দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাফুফেও সম্মান জানিয়েছে জাকারিয়া পিন্টুকে। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আসেননি। বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল সহ ফেডারেশনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা ছিলেন।
বাফুফে ভবনে বাংলাদেশের ফুটবলের বিশেষ কোনো মুহূর্তের ছবি নেই। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক ও বাংলাদেশ ফুটবল দলের প্রথম অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টুর স্মৃতি ফেডারেশনে জায়গা পাওয়ার দাবি রাখে। বাফুফে নতুন সভাপতি বিষয়টি সমর্থন করে বলেন, ‘তিনি আমাদের ফুটবল ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম কিংবদন্তী। বাফুফে নির্বাহী সভায় আমরা এটি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।’
বিজ্ঞাপন
বিশ্বের অনেক ক্রীড়া স্টেডিয়াম, গ্যালারির নামকরণ হয় কৃতি খেলোয়াড়দের নামে। বাংলাদেশে এই চর্চা খুব কম। বাংলাদেশের কোনো ফুটবল স্থাপনায় পিন্টুর নাম ব্যবহার নিয়ে সরকারের কোর্টেই বল ঠেললেন বাফুফে সভাপতি, ‘স্টেডিয়ামগুলো সরকারের অধীনে। আমরা নির্বাহী সভায় আলোচনা করে এই বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলতে পারি।’
দেশ স্বাধীনের জন্য ফুটবলারদের ভিন দেশে লড়াই করা। দেশের বাইরে পতাকা উত্তোলনও করেছে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। এমন কীর্তি অনেক দেশই জেনেছে। তাই পিন্টুর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অনেক সংগঠনও, ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল দেশের বাইরে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছে। পিন্টু ভাই সেই দলের অধিনায়ক ও বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক। তার মৃত্যুুতে আমরা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সভাপতি শেখ সালমান, বিভিন্ন দেশের ফেডারেশন ও ক্লাবের শোক পেয়েছি গতকাল।’
আরও পড়ুন
পিন্টুর স্ত্রী হাসিনা দুনিয়া ছেড়েছেন বছর পাঁচেক আগেই। পিন্টু একমাত্র ছেলে ও তিন মেয়ে রেখে গেছেন। তিন মেয়েই প্রবাসী। মেঝ মেয়ে গতকাল ইংল্যান্ড থেকে এসেছেন। একমাত্র ছেলে তানভীর ক্রীড়াঙ্গন ও সরকারের কাছে শুধু একটি দাবিই করেছেন, ‘আপনারা সবাই মিলে যে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন এতে আমরা খুব কৃতজ্ঞ। বাবার একটাই চাওয়া ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের একটি স্বীকৃতি (দল হিসেবে স্বাধীনতা পদক পুরস্কার পাওয়া)। তার ছেলে হিসেবে আমার সেই দাবিই থাকবে এছাড়া আমাদের আর কিছু চাওয়ার নেই।’
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল বিশ্ব ফুটবলেই একটি বিরল কীর্তি। এই দলের সদস্যদের দাবি ছিল ফিফা থেকে একটি স্বীকৃতি নিয়ে। ১৬ বছর বাফুফে সভাপতি ছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য কাজী সালাউদ্দিন। ফিফা থেকে স্বীকৃতি নিয়ে বাফুফে তেমন কার্যকরী উদ্যোগ নেয়নি। পিন্টুর প্রয়াণের পর সেই দাবি পুনরায় উঠেছে।
মোহামেডান ও বাফুফেতে জানাজা হওয়ার পর জাতীয় প্রেসক্লাবে নেয়া হয়েছে পিন্টুর মরদেহ। সাংবাদিকদের সর্বোচ্চ সংগঠনে তিনি সহযোগী সদস্য ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার। প্রেসক্লাবে জানাজা শেষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরশায়িত হবেন এই কিংবদন্তী।
এজেড/জেএ