নেপালের কাঠমান্ডুতে টানা দ্বিতীয়বার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। সেখানে তাদের কন্টিনজেন্ট ছিল ৩২ জনের। ২৩ খেলোয়াড়ের পাশাপাশি কোচিং স্টাফ ও অন্যান্য কর্মকর্তা ছিলেন ৯ জন। তবে আজ (শনিবার) প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে দেওয়া সংবর্ধনায় কোচিং স্টাফের মধ্যে শুধু প্রধান কোচ ও কর্মকর্তাদের মধ্যে ম্যানেজার গিয়েছেন। এর বাইরে গোলরক্ষক কোচ, সহকারী কোচ, ফিজিও এবং মিডিয়া অফিসার যেতে পারেননি। 

বাংলাদেশ নারী দল সাফল্য পাওয়ায় বিগত সরকারও নানা আর্থিক পুরস্কার দিয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীও নারী দলকে ডেকে সম্মাননা জানিয়েছেন। তখন ফেডারেশনের কর্মকর্তারাও যেতেন সরকার প্রধানের এই সাক্ষাতে। নারী ফুটবলে অবদান না থাকলেও অনেকে সম্পৃক্ত হতেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন বলে। এবার প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাতে ফেডারেশনের কোনো কর্মকর্তা যাননি। ফলে এক প্রকার অভিভাবক ছাড়াই সাবিনাদের যাত্রা।

বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়াল দেশের বাইরে। সিনিয়র সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতিদের মধ্যে একজন উপস্থিত থাকতে পারলে ফেডারেশন ও নারী ফুটবল সংক্রান্ত বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলাপ করতে পারতেন। পরে বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ দল ম্যানেজারের আলাপেও উঠে আসে।

প্রধান উপদেষ্টা ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে বাঁ থেকে বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলার, ম্যানেজার মাহমুদা অনন্যাসহ সাফজয়ী ফুটবলার সাবিনা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমা ও রুপ্না চাকমা

আজকের অনুষ্ঠানে চ্যাম্পিয়ন দলের সঙ্গে অন্য কোচিং স্টাফরা যেতে না পারায় কষ্ট পেয়েছেন। ম্যানেজার মাহমুদা অনন্যা বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছেন, ‘আমাদের চ্যাম্পিয়ন দলে আরও কয়েকজন স্টাফ যেতে পারেননি। এটা টিম বন্ডিং নষ্ট করে। কেন তারা যেতে পারেননি এটা আমি জানি না। আমি স্যারকে (প্রধান উপদেষ্টা) এটি জিজ্ঞেস করেছি।’

প্রধান উপদেষ্টা এমন প্রশ্নে উল্টো মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানান অনন্যা, ‘স্যার আমাকে বলেছেন, ‘‘তুমি খুব সুন্দর গুছিয়ে কথা বলো।’’ যে ছয়জন যেতে পারেনি স্যার তাদের বিষয়টি দেখছে। আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে জানাতে চাই এরপর থেকে যেকোনো অনুষ্ঠানে যেন পুরো টিমের সবাই যেতে পারে। সবাই এক ফ্রেমে বন্দি হতে চাই।’

নারী সাফে বাংলাদেশের কন্টিনজেন্ট ছিল ৩২ জনের। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে ২৫ জন যাওয়ায় সেখানে ছয় জন ছিলেন না। এই প্রসঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘বাফুফের প্রেসিডেন্ট দেশে ছিলেন না। যে কারণে নেই। আমার কাছে যে ২৫ জনের তালিকা এসেছে, আমরা তাদের এখানে আনার ব্যবস্থা করেছি। সেখানে সহকারী কোচ ও গোলরক্ষক কোচের নাম ছিল না।’

সাবেক জাতীয় ফুটবলার মাহমুদা অনন্যা বাংলাদেশ নারী দলের কোচিং স্টাফ হিসেবে কাজ করছেন অনেকদিন। এবার নারী সাফে তিনি ছিলেন ম্যানেজার। নারী ফুটবলারদের সার্বক্ষণিক কাছ থেকে দেখেন অনন্যা। নারী ফুটবলারদের নিয়ে তিনি বলছেন, ‘নারী ফুটবলারদের ক্যাম্প অব্যাহত রাখতে হবে। এখানে মেধাবী ফুটবলার অনেক, তারা ক্যাম্পে থাকলে আরও সাফল্য দিতে পারবে।’

আধুনিক অনুশীলনের অন্যতম অনুষঙ্গ জিম ও সুইমিংপুল। ২০২১ সালে বাফুফে জিম করেছে। সেই জিমে সরঞ্জাম অপ্রতুল। নেই নিজস্ব সুইমিংপুল–ও। এজন্য ছুটতে হয় হোটেলে। এই দুটি বিষয় প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা প্রসঙ্গে অনন্যা বলেন, ‘আমাদের জিম আছে, আরও ভালো সরঞ্জাম দরকার। নারী ফুটবলারদের জন্য সুইমিংপুলেরও প্রয়োজন।’

এজেড/এএইচএস