রাত পোহালেই আগামীকাল (শনিবার) বাফুফে নির্বাচন। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ভোটের কেন্দ্র। আজ (শুক্রবার) দুপুরের পর থেকেই ভোটার-প্রার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হোটেল লবি। কাউন্সিলর ও নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তাদের জন্য বাফুফে হোটেলে কক্ষ বরাদ্দ করেছে। অনেকেই আজ বিকেলের মধ্যে সেই কক্ষে উঠেছেন। 

ভোটের আগেরদিন আজ সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও সভাপতি পদে দুই প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও মিজানুর রহমান দুই জনের কাউকেই সেখানে দেখা যায়নি। মিজানুর রহমান দিনাজপুর থেকে ঢাকায় এসেছেন আজ। হোটেলে অনেক ভোটার থাকলেও তিনি এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনি সেখানে আসেননি। আরেক সভাপতি প্রার্থী তাবিথ আউয়ালকেও দেখা যায়নি হোটেলে। যদিও তিনি গতকাল কাউন্সিলর-প্রার্থীদের নিয়ে একটি সভা করেছেন।

সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ইমরুল হাসান। ফেডারেশনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হতে যাওয়া এই কর্মকর্তার রাতের দিকে হোটেলে আসার কথা জানা গেছে। চার সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী ৬ জন। সাবেক দুই জাতীয় ফুটবলার রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বির ও শফিকুল ইসলাম মানিক দুপুরের পর থেকেই কাউন্সিলরদের সঙ্গে কুশলাদি করছেন। অন্য সহ-সভাপতি প্রার্থীরা এসেছেন কিছু সময় পরপর। হোটেল লবিতে ভোট চাওয়াতে সবচেয়ে বেশি তৎপর ছিলেন সদস্য প্রার্থীরা। বাফুফে নির্বাচনে এবার আকর্ষণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলত সদস্য পদে। ১৫ নির্বাহী সদস্যের বিপরীতে প্রার্থী সংখ্যা ৩৭। এই পদে প্রার্থী হয়েছেন সাবেক জাতীয় অধিনায়ক, তারকা ফুটবলার, সংগঠক, ব্যবসায়ী এবং সমর্থকও।

সদস্য পদপ্রার্থী এখলাস উদ্দিন

সাবেক জাতীয় তারকা ফুটবলার গোলাম গাউস এবারই প্রথম বাফুফে নির্বাচন করছেন। তাই তিনি একটু বেশি সতর্ক, ‘আসলে আগে নির্বাচন দেখেছি, এবার নিজেই করছি। সবার কাছে ভোট চাইছি। সমর্থন ও ভোট পেলে নির্বাচিত হব আশা করি।’ জাতীয় দলের আরেক সাবেক তারকা ফুটবলার ইকবাল হোসেন পুনরায় বাফুফের কমিটিতে প্রবেশের চেষ্টা করছেন, ‘ফুটবলার ইকবালই আমার পরিচয়। ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে জড়িত থেকে ফুটবলের উন্নয়নে আরও কাজ করতে চাই।’

সাম্প্রতিক সময়ে বাফুফে নানা নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হয়েছে। এরপরও সদস্য পদে তরুণ ব্যবসায়ী চুয়াডাঙ্গার কাউন্সিলর এখলাস উদ্দিন প্রার্থী হয়েছেন। ফেডারেশনে এসে মামুন জোয়ার্দারের মতো ফুটবলার তৈরি করতে চান এই তরুণ সংগঠক। ফুটবল সমর্থকদের সংগঠন আলট্রাস। সমর্থকদের মধ্যেও প্রতিনিধি হয়ে একজন সদস্য পদপ্রার্থী হয়েছেন।

সদস্য পদে নতুন-পুরাতনের পাশাপাশি রয়েছেন কয়েকজন বিতর্কিত প্রার্থীও। এদের মধ্যে অন্যতম মাহফুজা আক্তার কিরণ। নারী ফুটবল সাফ চ্যাম্পিয়ন হলেও তার কিছু কর্মকাণ্ড এবং বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের আস্থাভাজন হওয়ায় তিনি নানামুখী চাপে রয়েছেন। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সত্যজিত দাশ রুপু ২০০৮ সাল থেকে বাফুফের নির্বাহী সদস্য। তিনি নানা সমালোচনা ও চাপের মধ্যেও রয়েছেন।

এবার বাফুফে নির্বাচনে সর্বাধিক চারজন নারী প্রার্থী হয়েছেন। যা বিগত কোনো নির্বাচনে ছিল না। চার নারী প্রার্থীর মধ্যে একজন তাসমিয়া রেজোয়ানা। তার স্বামী আবু নাঈম সোহাগ ফিফা থেকে নিষিদ্ধ। আজও তিনি সস্ত্রীক হোটেলে এসেছেন।

মাহমুদা খাতুনসহ এবার বাফুফে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন চার (সর্বোচ্চ) নারী

আগামীকাল সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলবে বাফুফের বার্ষিক সাধারণ সভা। মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতি দিয়ে দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ পর্ব। নির্বাচন কমিশন বিকেলে ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘ভোট আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন। ৬টার পর আমরা ভোট গ্রহণ করব না। ভোট কেন্দ্রে কেউ মোবাইল নিয়ে যেতে পারবেন না। আমাদের কাছে সরকার, ফিফা ও এএফসি কোনো পক্ষের কোনো নির্দেশনা নেই।’ বাফুফের বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন আজ হোটেলে এসে নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা তদারকি করেছেন।
 
এজেড/এএইচএস