তিন দিন পরেই বাফুফে নির্বাচন। সিনিয়র সহ-সভাপতি ছাড়া অন্য তিন পদে (সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সদস্য) ভোটাভুটি হচ্ছে। প্রার্থীরা ভোটারদের কাছাকাছি যাচ্ছেন। যারা ঢাকার বাইরে বা দূরত্ব অবস্থানে তাদের কাছে মুঠোফোনে ভোট চাওয়া হচ্ছে। সভাপতি প্রার্থী দিনাজপুরের তৃণমূলের সংগঠক এএফম মিজানুর রহমান চৌধুরী এখনো নিভৃতেই রয়েছেন। 

বাফুফে নির্বাচন উপলক্ষ্যে অধিকাংশ কাউন্সিলর অবস্থান ঢাকায়। অথচ সভাপতি প্রার্থী মিজানুর এখনো নিজ জেলা দিনাজপুরেই রয়েছেন। নির্বাচনের আগের দিন বিকেলে আসার পরিকল্পনা করছেন, ‘২৫ তারিখ দুপুরের পর ঢাকা যাব। ভোটের আগের দিন থাকব ঢাকায়।’

বাফুফে নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে বড় ভূমিকা রাখে জেলা-বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশনের কাউন্সিলররা। এবার বাফুফে নির্বাচনে বেশ সক্রিয় ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান। তিনি নিজেও সভাপতি পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত ফরম জমা দেননি। প্রভাবশালী এই কাউন্সিলর সভাপতি প্রার্থীর কাছ থেকে কোনো ফোন পাননি, ‘মিজান সাহেব আমাকে এখনো ফোন করেননি। তার কাছ থেকে ভোট দেয়ার অনুরোধ পাইনি।’

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব বাংলাদেশ বয়েজ থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন। তিনি সভাপতি প্রার্থী মিজানুর রহমানের ফোন না পেলেও একটি চিঠি পেয়েছেন, ‘আজ ক্লাবে হলুদ খামে একটি চিঠি পেয়েছি। বেশ বড় চিঠি। এখনো পড়া হয়নি। শুধু এই চিঠিই দেখলাম তবে সরাসরি কোনো ভোট দেওয়ার অনুরোধ পাইনি সভাপতি প্রার্থী মিজান সাহেবের কাছ থেকে।’

রেফারি জালাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলর। তিনিও সভাপতি প্রার্থীর কাছ থেকে কোনো ফোন পাননি, ‘সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি কারো কাছ থেকে ফোন পাইনি। সহ-সভাপতি দুই-তিন জন এবং কয়েকজন সদস্য পদপ্রার্থী ভোট চেয়েছেন।’

এক লাখ টাকা দিয়ে সভাপতি পদে মনোনয়ন কিনে চমক সৃষ্টি করেছিলেন একেবারে অচেনা তৃণমূলের সংগঠক মিজানুর রহমান। ভোটের সময় ঘনিয়ে আসলেও এখনো তিনি সেভাবে ভোটের মাঠে নামেননি। এরপরও তার কাউন্সিলরদের প্রতি ভরসা, ‘আমি একটি ম্যানোফেস্টো কাউন্সিলরদের কাছে পাঠিয়েছি। রাষ্ট্রপতির কাছ থেকেও পুরস্কার গ্রহণ করেছি আশির দশকে। আমার পঞ্চাশ বছরের ফুটবলের সম্পৃক্ততা আছে। কাউন্সিলররা যোগ্য মনে করলে ভোট দেবে। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী তাবিথ আউয়াল ভাইও ভালো এবং যোগ্য মানুষ।’

বাফুফের সাবেক সহ-সভাপতি তাবিথ আউয়াল সভাপতি প্রার্থী। তরফদার রুহুল আমিন সভাপতি পদে মনোনয়ন নেননি। জেলা-বিভাগীয় সংগঠক রেদোয়ান ফরম নিয়েও জমা দেননি। এরপরই মূলত তাবিথের সভাপতি হওয়া শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। তাবিথ ঢাকায় বাফুফে নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করছেন আবার কখনো তিনি কোনো অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করছেন। সেই সকল অনুষ্ঠানে ভোটের চেয়ে সভাপতি হওয়ার পর কি করতে চান সেই আলোচনাই বেশি হয়।

২০২০ সালের নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী হওয়া শফিকুল ইসলাম মানিক মাত্র ১ ভোট পেয়েছিলেন। বাদল রায় নির্ধারিত সময়ের পর প্রত্যাহার আবেদন করায় তার নাম ব্যালটে ছিল। অসুস্থতার কারণে তিনি ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হননি। এরপরও চল্লিশের বেশি ভোট পেয়েছিলেন। মিজানুর রহমান কত ভোট পান সেটাই দেখার অপেক্ষায় ফুটবলাঙ্গন।

এজেড/এফআই