দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে আজ সরকারি ছুটি। বাফুফের নির্বাচন সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক কার্যাদিও বন্ধ। এই ছুটির দিনেই ফুটবল উৎসবের আয়োজন করেছেন সাবেক ফুটবলার ও বাফুফের নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ফর্টিজ এফসি’র মাঠে সাবেক ফুটবলার ও সংগঠকরা হাজির হয়েছিলেন। 

ফর্টিজের ছোট-মাঠে সাবেক ফুটবলাররা চার দলে বিভক্ত হয়েছিলেন। সভাপতি প্রার্থী তাবিথ আউয়াল লাল দলের হয়ে মাঠে নামেন। দশ-পনেরো মিনিটের ম্যাচে পুরোটাই ছিলেন। পুরুষ ফুটবলারদের দুই ম্যাচের মাঝে একটি নারীদের ম্যাচও হয়েছে। 

তিন ম্যাচের দৈর্ঘ্য সব মিলিয়ে এক ঘন্টার কমই ছিল। তবে ম্যাচ ছিল উপলক্ষ্য, সবাই ছিলেন ভোট চাওয়াতেই ব্যস্ত। তাবিথের এমন আয়োজনে উপস্থিত হয়েছিলেন অনেক প্রার্থী ও কাউন্সিলর। সবাই সবার কাছে ভোট চেয়েছেন। ম্যাচ শেষে সামান্য আনুষ্ঠানিকতা ছিল। সেই আনুষ্ঠানিকতায় তাবিথ আউয়াল সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, ‘গত নির্বাচনে আমি হেরেছিলাম। খেলোয়াড় হিসেবে হার থেকে আমি পুনরায় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছি। সামনে বাফুফে নির্বাচন। আমি সভাপতি পদপ্রার্থী। একজন ফুটবলার হিসেবে আমার ফুটবলার ভাই, বন্ধু, অগ্রজ, অনুজদের সমর্থন নিয়েই এগুতে চাই। আজ যারা এখানে এসেছেন সবার প্রতি ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা। আগামীতেও আপনাদের এই সমর্থন চাই।’

তাবিথ আউয়ালের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন অন্যতম সাবেক তারকা ফুটবলার আরমান মিয়া। তিনি তাবিথের প্রতি আস্থা রেখে বলেন, ‘তাবিথ অত্যন্ত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তি। বাংলাদেশের ফুটবলের দায়িত্ব তাবিথ পেলে অবশ্যই ভালো করতে পারবে।’ 

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক জাহিদ হাসান এমিলি বলেন, ‘আমি যখন জাতীয় দলের সিনিয়র খেলোয়াড় তাবিথ ভাই তখন ন্যাশনাল কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান। খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধার ব্যাপারে তিনি সব সময় সচেষ্ট। তিনি সভাপতি হলে সামগ্রিক ফুটবল উন্নয়ন সম্ভব। আমরা তার সাফল্য কামনা করি।’

সভাপতি পদে তাবিথ আউয়ালের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার কথা ছিল তরফদার রুহুল আমিনের। তিনি সভাপতি পদের পরিবর্তে সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোনয়ন নিয়েছেন। সভাপতি পদে তাবিথের আরো তিন প্রতিপক্ষ থাকলেও অপেক্ষাকৃত দুর্বল। তবে তাবিথ খেলার মাঠের মতোই নির্বাচনী মাঠ দেখছেন, ‘ফকিরেরপুল এক সময় অপেক্ষাকৃত শেখ রাসেলের চেয়ে দুর্বল দল ছিল। কিন্তু একবার খেলায় হারিয়েছিল। ফলে কোনো প্রতিপক্ষকেই দুর্বল করে দেখার সুযোগ নেই।’

ফুটবলাঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে, তাবিথ আউয়ালের ওপর সুনির্দিষ্টভাবে প্যানেল করার চাপ রয়েছে। যদিও তাবিথ প্যানেলের পরিবর্তে ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচনের কথা বলছিলেন। আজ খেলার মাঠেও প্যানেলের বিষয়টি উঠলে তিনি বলেন, ‘এখানে সবাই খেলার আমেজেই রয়েছি। কঠিন বিষয়ে না যাওয়াই উত্তম। সামনে এই বিষয়ে আরো স্পষ্টভাবে বলা যাবে।’

জাতীয় নির্বাচনের মতো বাফুফে নির্বাচনেও ইশতেহার হয়। প্যানেল ভিত্তিক ইশতেহার হলেও প্যানেলে নেতৃবৃন্দের ইচ্ছের প্রতিফলনই মূলত ঘটে। তাই তাবিথের মূল্যায়, ‘ইশতেহার তো অবশ্যই কাউন্সিলর-ডেলিগেটদের প্রত্যাশা থাকে। প্যানেল ইশতেহারে জবাবদিহিতার জায়গাটা একটু কম থাকে। ইশতেহার ব্যক্তিগত হলে পরবর্তীতে কাউন্সিলররা সরাসরি নির্দিষ্ট প্রার্থীকে জবাবদিহি করতে পারে।’

বাফুফে নির্বাচনে একটি পক্ষ ভোটার তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এ নিয়ে তেমন অভিযোগ নেই অবশ্য তাবিথ আউয়ালের। তিনি আজ সাবেক ফুটবলারদের সঙ্গে মিলনমেলা করেছেন আগামীকাল কোচদের সঙ্গে মত বিনিময় করবেন। তাবিথ আউয়ালের আহ্বানে আজ জসিমউদ্দিন জোসী, আরমান মিয়া, জাকির, গোলাম গাউস, বিপ্লব ভট্টাচার্য্য, সুজন, ছাইদ হাসান কানন, শফিকুল ইসলাম মানিক, সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বির সহ অনেকেই এসেছিলেন। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হককেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তাবিথ। তাকে অবশ্য দেখা যায়নি।

সাবেক ফুটবলারদের এই মিলনমেলায় অনেক সংগঠকও এসেছিলেন ভোট চাওয়ার জন্য। কারণ অনেক সাবেক ফুটবলারই কাউন্সিলর। ফিফা থেকে নিষিদ্ধ বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগও এসেছিলেন। তার স্ত্রী বাফুফে সদস্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।

এজেড/জেএ