বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটি ২১ জনের। ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়া ১০ জনই এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না। বাফুফের বর্তমান কমিটির ১১ জন পুনরায় নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। 

২০০৮ সাল থেকে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। এবার তিনি সভাপতি পদে নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছেন মাস খানেক আগেই। তাই তিনি কোনো পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেননি। ১৬ বছর বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি থাকা আব্দুস সালাম মুর্শেদী ৫ আগস্টের পর পদত্যাগ করেছেন। তখনই অনুমেয় ছিল তার বাফুফে অধ্যায় সমাপ্তির পথে৷ 

বর্তমান কমিটির চার সহ-সভাপতির মধ্যে শুধুমাত্র ইমরুল হাসান মনোনয়ন পত্র নিয়েছেন। সহ-সভাপতি থেকে তিনি সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে নির্বাচনে মনস্থির করেছেন। সালাউদ্দিনের বর্তমান কমিটির বাকি তিন সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ, আতাউর রহমান ভুইয়া মানিক ও মহিউদ্দিন আহমেদ মহী মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেননি। 

নির্বাহী সদস্য ১৫ জন। এই ১৫ জনের মধ্যে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আরিফ হোসেন মুন এক বছর আগেই পদত্যাগ করেছেন। এবার নির্বাচনে তিনি নীলফামারী থেকে কাউন্সিলর হলেও মনোনয়ন পত্র নেননি। ২০১৬ সালে বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী হওয়া নুরুল ইসলাম নুরু গত নির্বাচনে সালাউদ্দিনের প্যানেল থেকে সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। গাজীপুরের টঙ্গীর সাবেক কাউন্সিলর নুরু এবার প্রার্থী হননি। 

স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই বাফুফের সঙ্গে জড়িত হারুনুর রশীদ। কয়েকবারের সাধারণ সম্পাদক হারুন গত চার মেয়াদে সদস্য ছিলেন। ৭২ বছরের বেশি হওয়ায় তিনি নির্বাচনের জন্য অবিবেচিত। 

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ইলিয়াস হোসেন ২০১২ সাল থেকে বাফুফে নির্বাহী সদস্য। তিনবারই কাজী সালাউদ্দিনের প্যানেলে ছিলেন। গোপালগঞ্জের ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবার বাফুফে নির্বাচন থেকে বিরত থেকেছেন। ২০২০ সালে বাফুফে নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সদস্য হয়েছেন নোয়াখালীর আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু। বাফুফে সদস্য পরবর্তীতে নোয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন। পট পরিবর্তনের জন্য তিনিও এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না। 

বাফুফের বর্তমান নির্বাহী কমিটির দশ জন সদস্য অবশ্য আবার প্রার্থী হয়েছে। মাহফুজা আক্তার কিরণ, সত্যজিৎ দাশ রুপু, জাকির হোসেন চৌধুরী, টিপু সুলতান, বিজন বড়ুয়া, আমের খান, মহিদুর রহমান মিরাজ, সাইফুল ইসলাম ও মাহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম। এরা সবাই সালাউদ্দিনের বর্তমান কমিটিতে থাকলেও সবাই সালাউদ্দিনের প্যানেল থেকে নির্বাচন করে জিতেননি। আমের খান, সাইফুল, মিরাজ অন্য প্যানেল থেকে সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন। 

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে স্বেচ্ছায় পদ ছাড়ার সংস্কৃতি নেই। বাফুফে বর্তমান নির্বাহী কমিটির অর্ধেকই এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না। হারুনুর রশীদের বয়স ছাড়া বাকি সবার পট পরিবর্তন অন্যতম প্রধান কারণ। এবার নির্বাচনে অনেক নতুন মুখ প্রার্থী হয়েছে। পট পরিবর্তনের জন্যই অনেকে নির্বাচনে এসেছেন। ঘুরেফিরে সেই অলিখিত রাজনৈতিক বৃত্তের মধ্যেই! 

এজেড/জেএ