বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে নাজেহাল দশা পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের। ইকুয়েডরকে হারিয়ে কয়েকদিন আগে তারা লাতিন অঞ্চলের বাছাইয়ে চার নম্বরে উঠেছিল। আজ (বুধবার) প্যারাগুয়ের কাছে ১-০ গোলে হেরে তারা ফের পাঁচে নেমে গেছে। এমন করুণ অবস্থায় ব্রাজিলের আক্রমণভাগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তারকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে সইতে হচ্ছে তীব্র সমালোচনা। রিয়াল মাদ্রিদের ফর্ম কেন জাতীয় দলে দেখাতে পারছেন না সেই প্রশ্নও উঠেছে।

প্যারাগুয়ের পক্ষে এদিন ম্যাচের ২০তম মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন দিয়েগো গোমেজ। এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি সেলেসাওরা। দলের এই পরিস্থিতিতে উপযুক্ত ভূমিকা রাখতে না পারায় ব্রাজিল সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ভিনিসিয়ুস। একইসঙ্গে জাতীয় দল ও রিয়ালের হয়ে পারফর্ম করার ক্ষেত্রে খেলার ধরন ও মেজাজ আলাদা বলেও মনে করেন তিনি। এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৩৪ ম্যাচ খেলেছেন ভিনি, যেখানে তিনি মাত্র ৫টি গোল করেছেন। অথচ গোল করা ও করানোয় রিয়ালে বেশ পরিচিতি এই তারকা ফরোয়ার্ডের।

ম্যাচ হারের জন্য ক্ষমা চেয়ে ভিনিসিয়ুস বলেন, ‘সবসময় আমাদের পাশে থাকা ভক্তদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। এটি কঠিন সময়, আমরা এই অবস্থা থেকে উন্নতি করতে চাই…আমি নিজের সামর্থ্য জানি, জাতীয় দলের জন্যও কী করেছি সেটাও বুঝতে পারছি। অবশ্যই এটি কঠিন প্রক্রিয়া, যখন আপনার আত্মবিশ্বাস থাকে না, তখন গোল-অ্যাসিস্ট কিংবা ভালো পারফর্ম করা কঠিন হয়ে যায়। আমি জানি আমি কী উন্নতি করতে পারি। যখন আমি ভালো খেলব, তখন অন্য সবার মাঝে শান্তি এনে দিতে পারব। আমি আমার দায়িত্ব জানি, যত দ্রুত সম্ভব উন্নতি করতে চাই।’

ব্রাজিল ও রিয়ালের জার্সিতে ফর্ম দেখানোয় কী অসুবিধা সেটিও জানিয়েছেন ভিনি, ‘এটি (রিয়াল মাদ্রিদ ও ব্রাজিলের খেলা) সম্পূর্ণ আলাদা। ইউরোপের খেলাগুলো ভিন্ন, বল একপাশে থেকে অন্যপাশে দ্রুতগতিতে যায়। আমাদের জানতে হবে কীভাবে মানিয়ে নিতে হয়, যাতে সবাই ভালো খেলে আমরা ম্যাচ জিততে পারি। আমরা জানি কেমন পরিস্থিতিতে আছি। যেকোনো মূল্যে ব্রাজিলকে এই পরিস্থিতি থেকে বের করে আনতে চাই। আমাদের সবাইকে দেশে ফিরে ভাবতে হবে কীভাবে ভালো খেলা যায়। আমরা এখানে পয়েন্ট হারাতে আসিনি। আমাদের অবশ্যই সমস্ত সমালোচনাকে মেনে নিতে হবে এবং ব্রাজিলকে শীর্ষে রাখতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খেলায় ফিরে আসতে হবে।’

এর আগে নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়ের ওপর দায় না দিয়ে নিজের কাঁধে নেন ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র, ‘এটি কেবল ভিনির (ভিনিসিয়ুস জুনিয়র) ক্ষেত্রেই নয়, প্রথমার্ধ থেকেই আমাদের অনেক দুর্বলতা ছিল, এর জন্য দায় আমার। এজন্য আমি কোনো ফুটবলারকেই শাস্তি দিতে চাই না। কিন্তু আমাদের আরও কাজ করতে হবে এবং কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছাতে যে আমাদের আরও অনেক প্রচেষ্টা দরকার এই মুহূর্তে সেটি বুঝতে হবে।’

২০০৩ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ৭১ ম্যাচ খেলে মাত্র ৫টিতে হেরেছিল ব্রাজিল। কিন্তু এবার ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ৮ ম্যাচ খেলেই ৪ হার। বোঝাই যাচ্ছে দরিভাল জুনিয়রের সামনের সময়টা খুব একটা সহজ নয়। বাছাইপর্বে ব্রাজিল এই মুহূর্তে ৮ ম্যাচ শেষ করে আছে ৫ম স্থানে। ৮ ম্যাচে ৪ হারের সঙ্গে আছে ৩ জয় আর ১ ড্র। সংগ্রহে মাত্র ১০ পয়েন্ট। তাদের সামনে আছে যথাক্রমে আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া, উরুগুয়ে ও ইকুয়েডর।

এএইচএস