মাঠের জায়ান্ট স্ক্রিনে লেখা উঠেছে, ‘আপনাদের সেশন পরিত্যক্ত হয়েছে। কাছের গেট দিয়ে মাঠ ছাড়ার অনুরোধ রইলো।’ যদিও তখন পর্যন্ত আর্জেন্টিনা এবং মরক্কো দুই দলের ফুটবলাররা আটকে আছেন ড্রেসিংরুমে। তখন পর্যন্ত তারা জানেন না এই ম্যাচে আরও তিন মিনিট খেলা বাকি। এরইমাঝে অবশ্য বাতিল হয়েছে অতিরিক্ত সময়ে করা আর্জেন্টিনার সমতাসূচক গোল।  

ম্যাচ শেষের পরেও অলিম্পিক কমিটির সিদ্ধান্তে দেড়ঘণ্টার জন্য বসে রইলেন আর্জেন্টিনা এবং মরক্কোর ফুটবলাররা। দুই দলের খেলা ২-২ গোলে ড্র ধরে নিয়েছিলেন সবাই। গণমাধ্যম কর্মীরাও এটাকেই ধরে নিয়েছিলেন ম্যাচের ফল। তবে এখানেও ছিল নাটক। ম্যাচ ভেন্যু সেইন্ট এতিয়েনের মাঠের ম্যানেজার জানালেন, ম্যাচ শেষ হয়নি। বাকি আছে ত্রিশ সেকেন্ডের খেলা।

অন্তিম মুহূর্তে আর্জেন্টিনার গোলের পর মরক্কোর ভক্ত মাঠে নেমেছিলেন। বাজি ছুঁড়ে মারা হয়েছিল আর্জেন্টাইন ফুটবলারদের দিকে। এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে তাৎক্ষণিকভাবে মাঠ থেকে সরিয়ে নেয়া হয় দুই দলের খেলোয়াড়দের। ততক্ষণে অবশ্য যোগ করা ১৫ মিনিটের খেলা শেষ। ঘড়িতে চলছিল ১৬ মিনিট। তখনই গোল করেন ক্রিশ্চিয়ান মেদিনা। এরপরেই আর্জেন্টিনার উদযাপনের সময় তাদের ওপর আতশবাজি আর বোতলের বৃষ্টি বসিয়ে দেয় মরক্কোর সমর্থকরা। 

দুই দলই স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় আরেকবার মাঠে নেমেছে ৩ মিনিটের খেলা শেষ করতে। সেখানে আর্জেন্টিনা আর গোল পায়নি। আর গোল বাতিলের সুবাদে ২-১ গোলের জয় দিয়ে দারুণ এক সূচনা করে মরক্কো। 

আয়োজকদের এমন সিদ্ধান্তের ওপর ক্ষুব্ধ আর্জেন্টাইন কোচ হাভিয়ের মাশ্চেরানো। মরক্কো অধিনায়ক খেলতে চাননি এমন দাবি করে আর্জেন্টাইন কোচের বক্তব্য, ‘মরক্কো অধিনায়ক (পুনরায়) খেলতে চায়নি। আমরাও চাইনি আর দর্শকেরাও আমাদের তাক করে অনেক কিছু ছুড়ে মেরেছে। আমার জীবনে দেখা এটাই সবচেয়ে বড় তামাশা।’

অফসাইডে গোল বাতিল নিয়েও কড়া মন্তব্য মাশ্চেরানোর, ‘রিভিউ করতে তারা কেন ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় নিয়েছে তা আমি জানি না। মেদিনার গোলে যদি অফসাইড হয় তবে ম্যাচটি সেভাবেই চালিয়ে যাওয়া যেত। আমার মনে হয় না দেড় ঘণ্টা বিরতি নিয়ে ম্যাচটি আবারও তিন মিনিটের জন্য খেলার প্রয়োজন ছিল।’

এমন খেলা পাড়ার ফুটবলেও দেখা যায়না বলে মন্তব্য মাশ্চেরানোর, ‘এমন ঘটনা পাড়ার টুর্নামেন্টেও ঘটে না। এটা লজ্জার। অলিম্পিকের চেতনার বাইরে এই সংস্থাকে মানসম্মত হতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই মুহূর্তে তারা সেটি হতে পারেনি।’

এদিন অবশ্য ফ্রান্সের মাঠে শুরু থেকেই বেশ চাপের মাঝে ছিল আর্জেন্টিনা। কদিন আগেই কোপা আমেরিকার শিরোপা উদযাপন করতে গিয়ে ফ্রান্স এবং কিলিয়ান এমবাপেকে নিয়ে বর্ণবাদী মন্তব্য করেছিলেন আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজ। তারই রেশ পড়ল খেলার মাঠে। আর্জেন্টিনার পায়ে বল গেলেই দুয়ো দিয়েছেন মাঠের দর্শকরা। 

জেএ