কলম্বিয়া-উরুগুয়ে ম্যাচটি ছিল কোপা আমেরিকার ফাইনালে ওঠার লড়াই। এমন ম্যাচে দু’দলের মাঠের পারফরম্যান্সে পরস্পরকে ছাড়িয়ে যেতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। সেই দ্বৈরথে ১-০ গোলে জয় নিয়ে ২৩ বছর পর ফাইনালে উঠেছে কলম্বিয়া। তবে এরপরই অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনায় জড়িয়েছেন পরাজিত উরুগুয়ের ফুটবলাররা। কলম্বিয়ান দর্শকদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়ানোয় তাদের বিরুদ্ধে এবার তদন্তে নেমেছে কনমেবল।

যদিও সেদিন উরুগুয়ে ফুটবলার ও তাদের পরিবারকে লক্ষ্য করে কটু মন্তব্যের অভিযোগ রয়েছে কলম্বিয়ান দর্শকদের বিরুদ্ধে। ম্যাচের পর উল্লসিত কলম্বিয়ান সমর্থকরা মাঠে থাকা উরুগুয়ে স্ট্রাইকার ডারউইন নুনিয়েজের দিকে প্লাস্টিকের গ্লাস এবং পানি নিক্ষেপ করেন। একইসঙ্গে গ্যালারিতে থাকা উরুগুয়ে ফুটবলারদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি বিভিন্ন ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য ছুঁড়ে দেওয়ায়, বিষয়টাকে মোটেই ভালোভাবে নেননি উরুগুয়ের দুই ডিফেন্ডার গিমেনেজ এবং আরাউহো। এতেই মূলত চটে যান তারা।  

পরবর্তীতে গ্যালারিতে গিয়ে দর্শকদের সঙ্গে সরাসরি হাতাহাতিতে জড়ান নুনিয়েজ, গিমেনেজরা। ওই ঘটনা প্রসঙ্গে ব্রডকাস্টিং চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গিমেনেজ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘আমাদের পরিবারকে বের করে আনতেই হতো। সদ্যজাত বাচ্চারা ছিল ওখানে। কিন্তু কোনো পুলিশ নেই। আমি আশা করব তারা পরিবারগুলো, সমর্থক আর স্টেডিয়ামের আশপাশের নিরাপত্তায় আরও সতর্ক হবে।’

তবে এবার হয়তো বড় শাস্তির মুখে পড়তে যাচ্ছে উরুগুইয়ান ফুটবলাররা। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর কথা জানিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল। এক বিবৃতিতে তারা বলছে, ‘ম্যাচের পরের সহিংস ঘটনাটি পর্যায়ক্রমিকভাবে বুঝতে এবং জড়িত ব্যক্তিদের দায়দায়িত্বের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে কনমেবল। বৈশ্বিক এই ফুটবল উৎসবের ক্ষতি করে এমন কোনো কাজ সহ্য করা হবে না, সে বিষয়টি আমরা পুনর্ব্যক্ত করে সতর্ক করছি। প্যাশনকে সহিংসতায় রূপান্তর করবে এমন ঘটনা অগ্রহণযোগ্য। এই প্রতিযোগিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন কোনো আচরণ সহ্য করা হবে না।’

এদিকে, আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস বলেছে, কনমেবলের তদন্তে ১০ খেলোয়াড় আছেন। তারা হচ্ছেন– মাতিয়া ভিনে, সান্তিয়াগো মেলে, দারউইন নুনিয়েজ, জোসে গিমেনেজ, মাথিয়াস ওলিভেরা, ফাকুন্দো পেলিস্ট্রি, রোনাল্ড আরাউহো, ব্রায়ান রদ্রিগেজ, এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, রদ্রিগো বেন্টাকোর ও সেবাস্তিয়ান ক্যাসেরেস।

তবে উরুগুয়ের জন্য স্বস্তির খবর– কোপার তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে কোনো খেলোয়াড় নিষেধাজ্ঞায় পড়ছেন না। ফলে কানাডার বিপক্ষে ম্যাচটিতে মার্সেলো বিয়েলসা তার পুরো স্কোয়াডকেই পাচ্ছেন। তবে অভিযোগের বিষয়ে আগামী ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে হবে উরুগুইয়ান ফুটবলারদের। এরপর তারা দোষী প্রমাণিত হলে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারেন। যা প্রভাব পড়বে ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে। নির্দিষ্ট মেয়াদে নিষিদ্ধ হওয়া খেলোয়াড়রা সেখানে খেলতে পারবেন না। বর্তমানে লাতিন অঞ্চলের বাছাইয়ে বিয়েলসার দলটির অবস্থান ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে, শীর্ষে আর্জেন্টিনা।

এএইচএস