সম্ভাবনা জাগিয়েও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠা হলো না নেদারল্যান্ডসের। ইংল্যান্ডের কাছে ২-১ গোলে হারিয়ে তারা ইউরোর সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে গেছে। তবে বিতর্ক চলছে ম্যাচের ১৮তম মিনিটে ইংল্যান্ডের পাওয়া একটি পেনাল্টি নিয়ে। হ্যারি কেইনের সফল স্পট কিকে ম্যাচে ইংলিশরা সমতায় ফেরে। শেষ মুহূর্তের গোলে তারা জয় পেলেও আলোচনায় সেই পেনাল্টি। ভিএআরে দেওয়া সেই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ নেদারল্যান্ডস কোচ রোনাল্ড কোম্যান।

প্রতিপক্ষের ডি বক্সে হ্যারি কেইন শট নেওয়ার সময় পা বাড়িয়ে দেন ডাচ ডিফেন্ডার ডেনজেল ডামফ্রিস। তার পা কেইনের পায়ে বেশ জোরেই আঘাত করে। ভিএআর মনিটরে দেখে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। রিপ্লে দেখার পর ধারাভাষ্যকাররা যদিও সংশয়ে ছিলেন। ইংলিশ ধারাভাষ্যকাররাও বলছিলেন, পেনাল্টির সিদ্ধান্ত হয়তো একটু বেশিই রূঢ়। এমন সিদ্ধান্ত কিছুতেই মানতে পারছেন না ডাচ কোচ।

নিজেও এক সময় কিংবদন্তি ডিফেন্ডার ছিলেন কোম্যান। সে দৃষ্টিতেই তিনি এর ব্যাখ্যা দিলেন, ‘এটা পেনাল্টি নয়। তার (ডামফ্রিস) একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল শটটি ব্লক করা। কেইন সেখানে শট নেয় এবং তাদের দুজনের পায়ে সংঘর্ষ হয়। একজন ডিফেন্ডারের কাজ কী? সে তো শট আটকানোর চেষ্টাই করবে! এটার জন্য শাস্তি দেওয়া মানে তাকে বলে দেওয়া যে, ‘‘উপযুক্ত ফুটবল তুমি খেলতে পারবে না।’’ আমিও ডিফেন্ডার ছিলাম। ওই অবস্থায় আমি থাকলে আর কী করতে পারতাম! আরও অনেক তুচ্ছ ব্যাপারে রেফারি বাঁশি বাজিয়েছেন। যদিও আমাদের হারের কারণ এটা নয়।’

এরপরই ভিএআর নিয়ে ক্ষোভ দেখান ডাচ কোচ। একইসঙ্গে নিজেদের ভুলও স্বীকার করেন কোম্যান, ‘ভিএআরের এই ধরনের সিদ্ধান্তে ফুটবল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ইংল্যান্ডে খেলা হলে কোনোভাবেই এই পেনাল্টি দেওয়া হতো না। শেষের ফলাফল নিয়ে আমি হতাশ, কারণ শুরুটা ভালো করেছিলাম আমরা। তবে ইংল্যান্ড মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়, এরপর আমাদের কিছু পরিবর্তন করতেই হতো। আমার মনে হয়, এরপর আমরা তুলনামূলক ভালো দল ছিলাম। শেষ ২০ মিনিটে আমরাই বেশি ভালো খেলেছি। কিন্তু ৯১তম মিনিটে ওরা একটা খুনে গোল করে ফেলল। সেটির জবাব দেওয়ার সময় আর ছিল না। এটা মেনে নেওয়া কঠিন।’

ইংল্যান্ডের কাছে হেরে বিদায় নেওয়ার পর তাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ারও জোর সম্ভাবনা দেখছেন ৬১ বছর বয়সী এই কোচ। তিনি বলেন, ‘ইংল্যান্ড আজকে ভালো ফুটবল খেলেছে। স্পেন আরেকটু বেশি আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে, রক্ষণেও একটু বেশি ভালো। তবে ইংল্যান্ড যেহেতু ফাইনালে উঠে গেছে, শিরোপাও জিততে পারে। ফিল ফোডেন, জুড বেলিংহ্যামের মতো বিশ্বমানের ফুটবলার ওদের আছে এবং যেকোনো দলকে ওরা বিপদে ফেলতে পারে।’

একইসঙ্গে ফাইনাল খেলতে না পারলেও, শিষ্যদের নিয়ে গর্বিত কোম্যান। ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু হবে বলেও প্রত্যাশা তার, ‘দারুণ মানসিকতা… দুর্দান্ত টিম স্পিরিট…যদি ওদেরকে ফাইনালে দেখতে পারতাম ভালো লাগত। সেটা হয়নি। খারাপ লাগছে। তবে এই দলের অপেক্ষায় উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। আমি বিশ্বাস করি, আরও অনেক কিছু অর্জন করতে পারব আমরা। আরও কিছু ফুটবলার এখানে যোগ হবে। চোটের কারণে কয়েকজন খেলতে পারেনি এখানে।’

এএইচএস