স্পেন-ফ্রান্সের সেমিফাইনাল ম্যাচটি যারা দেখেছেন, তারা হয়তো শিরোনাম দেখে চমকে উঠতে পারেন। কারণ ইউরোর ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে স্প্যানিশদের কাছে ফরাসিদের ২-১ গোলে হারের খবরটা জানা। ম্যাচে সেভাবে কেউ ইনজুরিতে পড়ার মতো ট্যাকলের মুখোমুখিও হননি। কিন্তু মূল বিপত্তিটা ঘটেছে নির্ধারিত সময়ের পর। মাঠে ঢুকে পড়া এক দর্শককে ধরতে গিয়ে দুর্ঘটনাবশত এক নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে স্পেন অধিনায়ক আলভারো মোরাতার।

তখনই বোঝা যায় পায়ে ভালোই আঘাত পেয়েছেন এই তরুণ স্ট্রাইকার। পরে সতীর্থদের সঙ্গে উদযাপনের সময়ও তাকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায়। যদিও এখন পর্যন্ত অধিনায়কের চোট নিয়ে কোনো আপডেট জানায়নি স্প্যানিশরা। এর আগে জার্মানির বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে চোটে পড়েছিলেন পেদ্রি, টনি ক্রুসের করা সেই ট্যাকল এই মিডফিল্ডারকে পুরো ইউরো থেকেই ছিটকে দিয়েছে। নতুন করে কোনো চোট তাদের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে তুলবে, বলাই যায়!

মিউনিখের অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় গতকাল (মঙ্গলবার) ফ্রান্স-স্পেন সেমিফাইনালে ২৪ মিনিটের মাথায় তিন গোল দেখেছিল ফুটবল দুনিয়া। ৮ মিনিটে লিড নেয়ার পর ফ্রান্স সেই লিড হারায় পরের ৪ মিনিটে দুই গোল হজম করে। ২-১ গোলের জয়ে বার্লিনের ফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করল স্পেন। টানা ৬ ম্যাচ জিতে লুইস দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যরা ফাইনালে উঠে গেল। ইউরোর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো দল পেল টানা ৬ জয়।

ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হওয়ার আগেই মোরাতাকে তুলে নিয়েছিলেন স্পেন কোচ। পরে দলের জয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনিও সতীর্থদের সঙ্গে উদযাপনে যোগ দেন। ঠিক ওই সময়েই নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে মাঠে ঢুকে যান এক সমর্থক। তিনি কোন দলের সমর্থক বোঝা না গেলেও, তার গায়ে ছিল তুরস্কের জার্সি। মাঠে ঢুকেই তিনি উল্লাসরত স্প্যানিয়ার্ডদের দিকে দৌড়ে গিয়ে সেলফি নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তার পেছনে ধাওয়া করতে করতে দৌড়ান নিরাপত্তাকর্মীরাও।

ঠিক ওই সময়েই ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত সেই দুর্ঘটনা। উত্তেজিত দর্শককে ধাওয়া করতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়েন এক নিরাপত্তাকর্মী, ওই সময় তার বুট আঘাত করে মোরাতার ডান পায়ে। সঙ্গে সঙ্গেই ব্যথা নিয়ে খোঁড়াতে শুরু করেন স্প্যানিশ অধিনায়ক। অনেকটা অবিশ্বাসের সঙ্গেই ওই নিরাপত্তাকর্মীর দিকে তাকিয়ে ব্যথার স্থানে মালিশ করতে থাকেন মোরাতা, তৎক্ষণাৎ ওই নিরাপত্তাকর্মীও তার কাছে ক্ষমা চান। আরেকজন এসে তার চোটের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করেন। তবে তখন আশপাশে স্পেনের মেডিক্যাল টিমের কাউকে দেখা যায়নি।

সতীর্থদের সেই উদযাপনে যোগ দেওয়ার পর আবার খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়েই মাঠ ছাড়েন মোরাতা। যদিও তার মুখে হাসি দেখা গেছে। তার চোট খুব বেশি গুরুতর নয় বলেই জানিয়েছে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’। প্রাথমিক চিকিৎসার পর স্প্যানিয়ার্ডদের মেডিক্যাল টিম সেভাবে আতঙ্কের কোনো খবর জানায়নি। টিম চিকিৎসক ওসকার লুইস, হাঁটুতে ছোট চোট বলে জানিয়েছেন। তবে স্পেন ও মোরাতা চাইবেন দলের হয়ে যেন ইউরোর ফাইনালের মঞ্চে উপস্থিত হতে পারেন বার্লিনে। আগামী ১৪ জুলাই সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হবে ইংল্যান্ড-নেদারল্যান্ডস ম্যাচের বিজয়ীরা।

এএইচএস