ফুটবল অ্যারেনা মিউনিখের ৭০ হাজার সিট কানায় কানায় পূর্ণ। টিভিসেটের সামনে বসে লাখো কোটি দর্শক। স্পেন এবং ফ্রান্সের মহারণ দেখতে পুরো দুনিয়া যেন এক হয়ে ছিল এদিন। দর্শকদের এমন দিনে হতাশ করেননি দুই দলের ২২ ফুটবলার। নামের ভারে যতটা ধ্রুপদী লড়াই আশা করেছিল সকলে, ইউরোর সেমিফাইনালে দেখা গেল ঠিক তেমনটাই। 

মিউনিখের ক্লাসিক্যাল সেমিফাইনালে প্রথম ২৫ মিনিটেই স্কোরবোর্ডে উঠল তিন গোল। ফ্রান্সের লিড ফেরাতে স্পেন সময় নিয়েছে মোটে ১৬ মিনিট। চার মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে স্পেন এদিন জানান দিল, কেন টুর্নামেন্টে তারা এসেছে ফেবারিটের তকমা নিয়ে। ২-১ গোলের লিডে ম্যাচে আধিপত্য রেখেছে লুইস দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যরা। 

মিউনিখে সেমিফাইনালের আগে দিদিয়ে দেশাম বলেছিলেন, যারা সুন্দর ফুটবল দেখতে চান, তাদের ফ্রান্সের খেলা না দেখলেও চলবে। কোচ দেশামের কথায় স্পষ্ট ছিল, জয়টাই তার কাছে ছিল মুখ্য। স্পেনের বিপক্ষে প্রথমার্ধের পার হলো সেভাবেই। চোখ জুড়ানো খেলা উপহার দিয়েছে স্পেন। কিন্তু, ম্যাচে লিড পেয়েছে ফ্রান্স। বামপ্রান্তে অ্যাটাক বিল্ডআপে বল পেয়ে যান কিলিয়ান এমবাপে। হেসুস নাভাসকে বিট করে বাড়িয়ে দেন মাপা এক ক্রস। সহজেই মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন কোলো মুয়ানি। ৮ মিনিটেই লিড পেয়ে যায় ফ্রান্স। 

স্পেন আজ খেলতে নেমেছিল দলের তিন সেরা তারকাকে ছাড়া। ডানপ্রান্তে ছিলেন না অভিজ্ঞ দানি কারভাহাল। স্পেনকে সেখানেই আটকেছে ফ্রান্স। কিলিয়ান এমবাপে বারবার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন ৩৮ বছরের হেসুস নাভাসের দিকে। এরপরেও অবশ্য ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিল স্পেন। বিষ্ময়বালক লামিনে ইয়ামালের ক্রস থেকে মাথা ছুঁইয়ে গোল করতে পারেননি ফ্যাবিয়ান রুইজ। সহজ সুযোগ মিস করেছেন অধিনায়ক আলভারো মোরাতাও। 

ম্যাচের ২০ মিনিটে এসে দেখা মিলল লামিনে ইয়ামাল মোমেন্ট! বক্সের বাইরে থেকে ১৬ বছর বয়েসী স্প্যানিশ টিনএজারের দুর্দান্ত এক শট। ফ্রান্স গোলরক্ষক মাইক মানিয়ানের কোনো সুযোগই ছিল না অমন এক গোল ঠেকাবার। দুর্দান্ত এক শটে সমতায় ফিরে আসে স্পেন। ২০ মিনিটেই ফ্রান্স-স্পেন সেমিফাইনাল দেখল দুই গোল। এই গোল দিয়ে রেকর্ডও করে ফেলেছেন লামিনে ইয়ামাল। ইউরোর ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে পেলেন গোলের দেখা। 

এরপরেই স্পেনের আবার আঘাত। ২৪ মিনিটে হেসুস নাভাসের ক্রস থেকে বল ক্লিয়ারে ব্যর্থ হয় ফ্রান্স। ফাঁকায় পেয়ে দুর্দান্ত শট দানি ওলমোর। জুলস কুন্ডের পায়ে লেগে বল জড়ায় জালে। চার মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে সেমিতে স্পেনের লিড। 

প্রথমার্ধ এরপরেও বিনোদন দিয়ে গেল ফুটবল ভক্তদের। ফ্রান্স আক্রমণের ধার বাড়িয়েছিল। একাধিকবার বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রিকিকও আদায় করেছিলেন কোলো মুয়ানি-এমবাপেরা। কিন্তু সেখান থেকে গোল আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে ফ্রান্সের আক্রমণভাগ। স্পেনের হয়ে সুযোগ মিস করেছেন মোরাতা। ইনাকি উইলিয়ামস কাউন্টার অ্যাটাকে ভয় ধরিয়েছেন বেশ কয়েকবার। তবে সেখান থেকে আসেনি আর কোনো গোল। 

জেএ