এবারের ইউরোতে স্পেনের বড় তারকাই হয়ে উঠেছেন লামিনে ইয়ামাল। মাত্র ১৬ বছর বয়সে হাজির হয়েছেন ইউরোর বিগ স্টেজে। খেলার সময়ে খেলেছেন। এর বাইরে হোটেলে বসে শেষ করেছেন স্কুলের পড়া। পরীক্ষা দিয়ে তাতে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৬ বছর বয়সে মাঠেও রেকর্ড গড়েছেন নিয়মিত। সবশেষ ম্যাচে জার্মানির বিপক্ষে ছিলেন আনটাচেবল। লামিনে ইয়ামালই সেদিন স্পেনকে লিড নিতেও সাহায্য করেছিলেন। 

জার্মানির বিপক্ষে ম্যাচে  ৫১ মিনিটে দানি ওলমোর দিকে বুদ্ধিদীপ্ত এক পাস বাড়ান ইয়ামাল। নিখুঁত সেই পাস থেকে সহজেই বল জালে জড়ান স্প্যানিশ নাম্বার টেন। তাতেই গড়ে ফেলেন রেকর্ড। ইউরোর এক আসরে চতুর্থ স্প্যানিশ ফুটবলার হিসেবে সর্বোচ্চ তিনটি অ্যাসিস্টের কীর্তি গড়েছেন ইয়ামাল। তার আগে এই কীর্তি গড়েন ২০০৮ সাল সেস্ক ফাব্রেগাস, ২০১২ সালে ডেভিড সিলভা এবং ২০২১ সালে দানি ওলমো।

কিন্তু এমন উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের পরেও লামিনে ইয়ামালকে মাঠে পুরো সময় রাখতে পারেননি স্প্যানিশ কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে। শুধু কোয়ার্টার ফাইনাল না, এবারের ইউরোতে কোনো ম্যাচেই পুরোটা সময় খেলতে পারেননি ১৬ বছরের এই বিষ্ময়বালক। জার্মানির আইনের মারপ্যাঁচে স্পেনের হয়ে ম্যাচ শেষ করতে পারছেন না বার্সেলোনার এই উইঙ্গার। 

গ্রুপ পর্বে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ৮৬ মিনিট, ইটালির বিরুদ্ধে ৭১ মিনিট ও আলবেনিয়ার বিরুদ্ধে ১৯ মিনিটের মাথায় ইয়ামালকে তুলে নিয়েছেন স্পেনের কোচ লুইস ডে লা ফুয়েন্তে। জার্মানির আইন অনুযায়ী ইয়ামাল এখন পর্যন্ত শিশু। তাই তাকে পুরো ম্যাচ খেলালে জরিমানা দিতে হত স্পেনকে।

জার্মানির শিশুশ্রম আইন অনুযায়ী, নাবালকদের স্থানীয় সময় রাত ৮টার পরে কাজ করানো বেআইনি। যদিও খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে সময়সীমা রাত ১১টা পর্যন্ত। ইউরোয় জার্মানিতে শেষ খেলা শুরু হচ্ছে স্থানীয় সময় রাত ৯টায়। রাত ৯টায় যে সব খেলা শুরু হচ্ছে, তা শেষ হতে হতে ১১টা পেরিয়ে যাচ্ছে। মূলত এই কারণে দলের অন্যতম সেরা পারফর্মার হলেও গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচে ইয়ামালকে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন দে লা ফুয়েন্তে। 

ইয়ামালকে সাবস্টিটিউট না করলে শিশুশ্রম আইনে এক ম্যাচের জন্য ২৭ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হত স্পেনের ফুটবল সংস্থাকে। অবশ্য এর মাঝে এক ম্যাচে সেই আইন ভাঙাও হয়েছে। রাউন্ড অব সিক্সটিনে জর্জিয়ার বিরুদ্ধে রাত ৯টায় খেলা শুরু হলেও ইয়ামাল পুরো ম্যাচ খেলেছেন। নক আউট হওয়ায় তাকে তোলেননি কোচ।

কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির বিরুদ্ধে স্পেনের ম্যাচ শুরু হয়েছে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায়। তাই সেই ম্যাচে ইয়ামালকে খেলাতে কোনও সমস্যা হয়নি। দে লা ফুয়েন্তে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যে ম্যাচে ইয়ামালকে পুরো ম্যাচ খেলানোর প্রয়োজন হবে, তিনি খেলাবেন। আইনের কথা ভাববেন না। সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল দুই ম্যাচই শুরু হবে জার্মান সময় রাত ৯টায়। সেই দুই ম্যাচেও পুরো সময় ইয়ামালকে খেলানোর কথা ভাবছেন দে লা ফুয়েন্তে। 

এ বারের ইউরোয় এখনও পর্যন্ত ইয়ামাল গোল করতে না পারলেও দলকে জেতাতে বড় ভূমিকা নিচ্ছেন। ১৯৯৬ সালের পর ইউরো কিংবা বিশ্বকাপের এক আসরে তিন বা তার বেশি গোলে সহায়তা করা প্রথম টিনএজারও হয়েছেন ইয়ামাল। এমন এক খেলোয়াড়কে নিশ্চিতভাবেই দলে পেতে চাইবেন দে লা ফুয়েন্তে। 

জেএ