নিজের ক্যারিয়ার যে শেষের পথে, সেই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ইতোমধ্যে নিজের শেষ ইউরো ম্যাচও খেলে ফেলেছেন। গত শুক্রবার টাইব্রেকারে ফ্রান্সের কাছে হেরে চলমান মহাদেশীয় এই শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গেছে পর্তুগাল। তার পর থেকেই আলোচনা হচ্ছে এটাই জাতীয় দলে রোনালদোর শেষ ম্যাচ কি না। যদিও পর্তুগালের কোচ রবার্তো মার্তিনেজ আশা করছেন খেলাটা চালিয়ে যাবেন রোনালদো।

চলমান ইউরোতে চেনা ছন্দে ছিলেন না পর্তুগিজ সুপারস্টার। পাঁচ ম্যাচ খেলে গোল পাননি একটিও। ফ্রান্সের কাছে কোয়ার্টারে হেরে বিদায়ের পর অনেকেই দোষারোপ করছেন আল নাসর তারকাকে। কোয়ার্টারে হারের পর চুপ ছিলেন তিনি। এবার দিয়েছেন আবেগঘন বার্তা।

নিজের অবসর নিয়ে কিছু না বললেও ইউরো থেকে এমন হতাশাজনক বিদায় প্রত্যাশা করেননি সিআরসেভেন। পর্তুগালের আরও বেশি কিছু পাওয়া প্রাপ্য ছিল বলে মনে করেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোনালদো লিখেছেন, ‘আমরা আরও বেশি চেয়েছিলাম। আমাদের আরও বেশি প্রাপ্য ছিল। আমাদের নিজেদের জন্য, আমাদের প্রত্যেকের জন্য, পর্তুগালের জন্য।’

পর্তুগালের সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রোনালদো আরও বলেন, ‘তোমরা আমাদের যা কিছু দিয়েছো এবং আমরা যা অর্জন করেছি, সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞ।’

এবারের পুরো ইউরোতেই নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন সিআরসেভেন। সবমিলিয়ে ১০টি শট নিয়েও তিনি গোলের দেখা পাননি। কেবল তাই নয়, ইউরোয় এক আসরে সর্বোচ্চসংখ্যক শট নিয়েও গোল না পাওয়ার অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডও হয়ে গেছে তার। যদিও সেই রেকর্ড হয়েছে যৌথভাবে, আগে বেলজিয়ামের কেভিন ডি ব্রুইনা করেছিলেন ভুলে যাওয়ার মতো এমন কীর্তি। সবমিলিয়ে পর্তুগালের হয়ে সর্বশেষ ৯ ম্যাচেই গোলের দেখা পাননি আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতা রোনালদো।

৪১ বছর বয়সী এই তারকা ষষ্ঠবারের মতো ইউরো খেলতে নেমে বলেছিলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই অবশ্যই এটাই শেষ (ইউরো। তবে আবেগ ছুঁয়ে যাচ্ছে না। ফুটবলের সবকিছুই আমাকে প্রভাবিত করে। খেলাটির প্রতি এখনো আমার যে উৎসাহ, দর্শকের আগ্রহ, পরিবারকে পাওয়া, লোকজনের ভালোবাসা...ব্যাপারটা আসলে ফুটবলবিশ্ব ছেড়ে যাওয়া নয়। আমার জেতার বা করার জন্য আর কীই-বা বাকি আছে?’ ফলে ২০২৬ বিশ্বকাপে রোনালদোর না খেলারই বেশি ইঙ্গিত মিলছে।

রোনালদো ইউরো খেলছেন ২০০৪ থেকে, টানা ছয়টি টুর্নামেন্ট খেলে তার নামের পাশে মোট ১৪ গোল। অথচ ইউরোয় ১০ গোলও নেই আর কারও। কিন্তু সেই তারকাই কি না এবার প্রথম কোনো বড় মঞ্চ থেকে গোলহীন হয়ে ফিরছেন। পর্তুগালের হয়ে সবমিলিয়ে ২১২ ম্যাচে রোনালদোর গোল ১৩০টি। যা আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ।

এফআই