শক্তিমত্তায় দুই দলই ছিল প্রায় সমানে সমান। তবে গ্রুপপর্বে তিন ম্যাচের সবকটিতে জেতা লাতিন আমেরিকান দল ভেনেজুয়েলাকেই হয়তো অনেকে এগিয়ে রেখেছিলেন। সেসব হিসেব-নিকেশ বদলে দিয়ে দেখা গেল সম-দাপটের এক ম্যাচ। প্রথমবার কোপা আমেরিকা খেলতে নামা কানাডা ভেনেজুয়েলাকে সমান তালে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। যদিও নির্ধারিত সময় শেষ হয় ১-১ গোলে। পরে রোমাঞ্চ ছড়ানো টাইব্রেকারে জিতে প্রথমবার সেমিফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়েছে কানাডা।

নিজেদের ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো কোপার সেমিফাইনালে ওঠার দ্বারপ্রান্তে ছিল ভেনেজুয়েলা। সেই সুযোগ তারা হারিয়েছে পেনাল্টি শ্যুট আউটে ৪-৩ ব্যবধানে হেরে। অন্যদিকে, প্রথমবার কোপার অভিষেকেই মাজিমাত করল কানাডা। উত্তর আমেরিকান অঞ্চলের বাছাইপর্ব পেরিয়ে প্রথমবার তারা কোপায় খেলতে নামে। মহাদেশটির তৃতীয় কোনো দল হিসেবে এবার সেমিতেও উঠেছে কানাডা। এর আগে মেক্সিকো ও হন্ডুরাস উত্তর আমেরিকা থেকে কোপার সেমিফাইনাল খেলেছে।

এর আগে কেবল একবার কোপায় টাইব্রেকার পর্যন্ত গড়িয়েছিল ভেনেজুয়েলার ম্যাচ। কিন্তু তাদের অভিজ্ঞতা ছিল তিক্ত, ২০১১ আসরে তারা ৫-৩ ব্যবধানে হারে প্যারাগুয়ের কাছে। অবশ্য পেনাল্টি শ্যুট আউটে কানাডারও রেকর্ড ভালো নয়। তিনবার গোল্ড কাপের টাইব্রেক খেলে, দুটিতেই হেরেছিল উত্তর আমেরিকান দেশটি। তবে বায়ার্ন মিউনিখের কানাডিয়ান অধিনায়ক আলফনসো ডেভিসের দল সেই মুহূর্ত এবার আর ফিরিয়ে আনেনি।

কানাডা-ভেনেজুয়েলা ম্যাচে টাইব্রেকারে প্রথম পাঁচ শটেও উভয় দল সমান ৩টি করে গোলের দেখা পায়। পরে কানাডিয়ান গোলরক্ষক ম্যাক্সিমে ক্রেপো ভেনেজুয়েলার উইলকার অ্যানহেলের নেওয়া ষষ্ঠ শটটি ঠেকিয়ে দেন। পরবর্তীতে পেনাল্টি শটে কানাডার উইনিং গোলটি করেন ইসমায়েল কোনে।

এর আগে ম্যাচের প্রথম লিডও নিয়েছিল কানাডা। ম্যাচ শুরুর মাত্র ১৩ মিনিটেই তারা জ্যাকব শাফলবার্গের গোলে এগিয়ে যায়। জনাথন ডেভিডের ক্রস পেয়ে ডানপায়ে শট নেন শাফলবার্গ, এরপরই লিড নেওয়ার উচ্ছ্বাস কানাডার। সেই লিড তারা ধরে রেখেছিল পুরো প্রথমার্ধ। দ্বিতীয়ার্ধেও দুই দল সমান তালে লড়ছিল। এরই মাঝে ৬৪ মিনিটে সমতা ফেরানো গোল করে বসে লাতিন আমেরিকার দেশটি। স্যালোমন রোন্ডন ৪০ গজ দূর থেকে দৃষ্টিনন্দন শটে ভেনেজুয়েলাকে ম্যাচে ফেরান। এরপর নির্ধারিত সময়ে আর গোল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

র‌্যাঙ্কিংয়ে দুই দল কাছাকাছি, বল দখলেও ছিল ঊনিশ-বিশ। কানাডা-ভেনেজুয়েলা সমান ১৬টি করে শট নেয়। তবে গোললক্ষ্যে শট নেওয়ায় এগিয়ে ছিল কানাডাই, তাদের ৭টির বিপরীতে ভেনেজুয়েলা লক্ষ্যে শট রাখতে পারে কেবল ৩টি। দিনশেষে শেষ হাসিও জুটল কানাডার মুখে!

এএইচএস