একজন ফুটবল আদর্শ, আরেকজন তার গুণমুগ্ধ অনুসারী। পর্তুগালের সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক, আর ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কিলিয়ান এমবাপে সবে লস ব্লাঙ্কোসদের দলে যোগ দিয়েছেন। এরই মাঝে দুজনকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। কোয়ার্টার ফাইনালে আজ (শুক্রবার) হামবুর্গে বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টায় মুখোমুখি হবে পর্তুগাল-ফ্রান্স।

তবে এবারই প্রথম মুখোমুখি হচ্ছেন না রোনালদো ও এমবাপে। এর আগে দুজন প্রথম মুখোমুখি হন ফ্রান্স ও স্প্যানিশ ক্লাবের হয়ে। ২০১৭-১৮ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এমবাপের পিএসজিকে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-২ গোলে হারিয়েছিল রোনালদোর রিয়াল। তখন এমবাপে ধারে মোনাকো থেকে পিএসজির হয়ে খেলছিলেন। এ ছাড়া সবশেষ ইউরোতে গ্রুপপর্বে মুখোমুখি হয়েছিল এমবাপে-রোনালদোর দল। যেখানে সিআরসেভেনের জোড়া গোলেই ফ্রান্সের সঙ্গে ড্র করেছিল পর্তুগাল। সেই দুই ম্যাচে ফরাসি ফরোয়ার্ড কোনো গোল করতে পারেননি।

চলমান ইউরো শেষেই রিয়ালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে এমবাপের। স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়ন ক্লাবটিতে নাম লেখানোর পর এবারই প্রথম তিনি রোনালদোর মুখোমুখি হতে চলেছেন। যেখানে পর্তুগিজ মহাতারকা নিজের সেরা সময় অনেকটাই পেছনে ফেলে এসেছেন, বিপরীতে ফ্রান্স অধিনায়ক উঠতে শুরু করেছেন ক্যারিয়ারের চূড়ায়।

চার বছর পর আবারও মুখোমুখি পর্তুগাল-ফ্রান্স। এবার দুই দলের লড়াই নকআউট পর্ব কোয়ার্টারে, যারা হারবে তাদেরই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে এবং বাকি দল সেমিফাইনালে চলে যাবে। এখন পর্যন্ত ফ্রান্স-পর্তুগাল পরস্পর ২৮ বার মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে ১৯ ম্যাচে ফ্রান্স জিতেছে, পর্তুগালের জয় মাত্র ৬টি এবং ড্র হয়েছে ৩টি ম্যাচ।

রোনালদোর সামনে হাতছানি দিচ্ছে ইউরোতে সবচেয়ে বেশি বয়সী হিসেবে গোল করার সুযোগ। যদিও শেষ ষোলোতে স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে বেশ কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। তিনটি লক্ষ্যভ্রষ্ট ফ্রি-কিকের পর রোনালদো অতিরিক্ত সময়ে পেনাল্টি থেকেও গোল করতে ব্যর্থ হন। তবে টাইব্রেকারে প্রথম শটেই লক্ষ্যভেদ করে চাপ কিছুটা কমিয়ে দেন পর্তুগাল অধিনায়ক। এখনও মূল ম্যাচে গোলের খোঁজে তিনি। যদিও নিজের সেরা সময় পার করে এখন রোনালদো শেষের পথে হাঁটছেন।

অন্যদিকে, ২৫ বছর বয়সী এমবাপের কাঁধেই ২০০০ সালের পর আবার ফ্রান্সকে শিরোপা জেতানোর গুরুদায়িত্ব। কিন্তু তারকাবহুল দল নিয়েও ফরাসি শিবির কাঙ্ক্ষিত ফল আনতে ব্যর্থ। ম্যাচ জিতলেও, এখন পর্যন্ত চলতি ইউরোতে তারা ওপেন প্লে গোল পায়নি। টুর্নামেন্টটিতে এখন পর্যন্ত চার ম্যাচে ফ্রান্সের গোল ৩টি। এর দুটি আত্মঘাতী। আর অন্যটি এমবাপের, তাও সেটি পেনাল্টি থেকে।

৩৯ বছর বয়সী রোনালদোর মুখোমুখি হওয়ার আগে তার প্রতি প্রশংসার শেষ নেই এমবাপের। তবে আন্তর্জাতিক ফুটবলের রেকর্ড স্কোরারকে হারিয়ে ইউরোর সেমিফাইনালে ওঠার প্রত্যয় বিশ্বকাপজয়ী তারকার কণ্ঠে। এমবাপে বলেন, ‘ক্রিশ্চিয়ানোর মুখোমুখি হওয়াটা সম্মানের। সবাই জানে, আমি তাকে কতটা সম্মান করি। তার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। আমরা সবসময় যোগাযোগ করি এবং তিনি আমাকে অনেক পরামর্শ দেন। তার বিপক্ষে খেলাটা সম্মানের। ফুটবলে তিনি কী করেছেন, সেটা কোনো বিষয় নয়, এরপর কী ঘটবে, তাতেও কিছু যায়-আসে না, তিনি কিংবদন্তি হয়েই থাকবেন।’

এএইচএস