‘আমাকে আবার পেনাল্টিটা দেখতে হবে। আমি জানিনা শিট ভালোভাবে নিয়েছিলাম কি না। পুরো বছরে আমি একটা পেনাল্টিও মিস করিনি। কিন্তু যখন সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল, তখনই অবলাক সেটা ঠেকিয়ে দিলো।’ – স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে রাউন্ড অব সিক্সটিনের ম্যাচ শেষে এভাবেই নিজের অনুভূতি জানান দিয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ম্যাচে পর্তুগাল পেনাল্টি শ্যুটআউটে জয় পেলেও শিরোনাম হয়েছে রোনালদোর পেনাল্টি মিস। 

দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসে পেনাল্টিটা মিস করেছিলেন রোনালদো। এমন মিসের পর পর্তুগিজ এই মহাতারকাও ধরে রাখতে পারেননি নিজেকে। ভেঙে পড়েছিলেন কান্নায়। যদিও ১২০ মিনিটের ম্যাচ শেষে শ্যুটআউটে দলের হয়ে প্রথম পেনাল্টি নিয়েছিলেন তিনিই। তাতে লক্ষ্যভেদ করে উপস্থিত দর্শকদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন এই স্ট্রাইকার। 

কান্নায় ভেঙে পড়া রোনালদোকে শ্যুটআউটে সবার আগে দেখা যাবে এমনটা ভাবেননি অনেকেই। তবে এদিন সবার আগেই এলেন রোনালদো। আগেরবারের ভুল করলেন না। জোরালো শটে বল পাঠালেন জালে। সবার আগে পেনাল্টিতে আসার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ম্যাচের পরেই, ‘আপনারা দেখেছেন যে আমি পেনাল্টি মিস করেছি কিন্তু তারপরেও ট্রাইবেকারে আমি প্রথম গোল করার জন্যে পেনাল্টি নিয়েছি। দলের যখন প্রয়োজন তখন আমাকে সবার আগে দায়িত্ব নিতে হবে! 

রোনালদোর সহজ উক্তি, ‘এখানে ভয় পেলে চলবে না। আমি এসব চাপের মুখোমুখি হতে কখনো ভয় পাই না। কখনো হয়তো ঠিকমতো সবকিছু করতে পারি, কখনো হয়তো ভুল করি। কিন্তু 'হাল ছেড়ে দেওয়া' কথাটা আমার নামের সাথে যায় না।’ 

স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে কঠিন এক ম্যাচের পর রোনালদো অবশ্য প্রতিপক্ষের সমালোচনা করতেও ছাড়লেন না। তাদের লো ব্লক ডিফেন্সের সমালোচনাও করলেন প্রকাশ্যে, ‘আমি মনে করি পর্তুগালের এই জয় প্রাপ্য, কারণ আমাদেরই ম্যাচে আধিপত্য ছিল বেশি। স্লোভেনিয়া বলতে গেলে পুরো ম্যাচেই ডিফেন্স করে গিয়েছে। এটা খুবই কঠিন। পুরো দলকে অভিনন্দন জানাতেই হয়। বিশেষ করে আমাদের গোলরক্ষককে, যে তিনটা দারুণ সেইভ করেছে।’ 

পেনাল্টি মিস করলেও দলের কোচ রবার্তো মার্টিনেজকেও পাশেই পাচ্ছেন রোনালদো। কোচের মুখেও ম্যাচের শেষে শুধুই রোনালদো বন্দনা, ‘সে আমাদের জন্য একটা উদাহরণ। পেনাল্টি মিসের পর ওই আবেগ অসামান্য। তার ক্যারিয়ারে সে যা অর্জন করেছে তার বিপরীতে এমন পেনাল্টি হাতছাড়া করায় তার খুব বেশি ভাবার দরকার ছিল না।’ 

রোনালদো প্রথম পেনাল্টি নেবেন শ্যুটআউটে এমন আত্মবিশ্বাসটাও ছিল কোচ মার্টিনেজের, ‘ওই পেনাল্টি মিসের পর সেই শ্যুটআউটে প্রথম পেনাল্টি টেকার ছিল। আমি নিশ্চিত ছিলাম সেইই সবার আগে যাবে আর আমাদের জয়ের পথ দেখাবে। যেভাবে সে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে সেটা আমাদের জন্য উদাহরণ আর আমরাও খুব গর্বিত।’ 

রাউন্ড অব সিক্সটিনের এই জয়ের পর পর্তুগালকে দিতে হবে আরও এক বড় পরীক্ষা। কোয়ার্টার ফাইনালে তারা মুখোমুখি হবে ফ্রান্সের। যদি এবারের আসরে ফ্রান্স ঠিক চেনা ছন্দে নেই। তবে শেষ আটের লড়াইয়ে কিলিয়ান এমবাপে, আঁতোয়ান গ্রিজমানরা জ্বলে উঠলে আরেকবার নিজেদের প্রমাণ করতে হবে পর্তুগালকে।

জেএ