পেরুর বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়ে নিশ্চিত হয়েছিল ‘এ’ গ্রুপ থেকে সবার ওপরে থেকেই কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা। নাটকীয়ভাবে সেই গ্রুপ থেকে বাদ পড়ে যায় চিলি। আসরের তিন ম্যাচে কোনো গোল না করেই বাদ পড়ে যায় ২০১৫ ও ২০১৬ আসরের চ্যাম্পিয়নরা। আর্জেন্টিনার সঙ্গী হয়ে শেষ আটে জায়গা করে নেয় কানাডা। 

কোপা আমেরিকায় এরপর অপেক্ষা ছিল আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ নিয়ে। শেষ ম্যাচডেতে ‘বি’ গ্রুপের দ্বিতীয় থাকা দলটিই হবে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ। এমন সমীকরণ সামনে রেখেই মাঠে নেমেছিল ইকুয়েডর ও মেক্সিকো। একইসময়ে মাঠে নামা ভেনিজুয়েলা মাঠে নেমেছিল আগেই বাদ পড়া জ্যামাইকার বিপক্ষে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দুই গোল করে তারা চলে যায় বাকিদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। 

আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ হিসেবে তাই টিকে ছিল কেবল মেক্সিকো এবং ইকুয়েডর। সেখান থেকে টানটান উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচে একেবারে শেষ মিনিটে গিয়ে পেনাল্টি পায় মেক্সিকো। বহু বিতর্ক আর ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির সাহায্য নিয়ে বাতিল হয় সেই সিদ্ধান্ত। নাটকীয় ম্যাচ শেষ হয় গোলশূন্য ড্র-তে। আর তাতেই আর্জেন্টিনার সামনে কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে নিশ্চিত হয় ইকুয়েডরের নাম। 

আবারও ইকুয়েডরের সামনে আর্জেন্টিনা

সাম্প্রতিক সময়ে ইকুয়েডরের সামনে বারবারই পড়েছে আর্জেন্টিনা। এমনকি চলতি বছরেই তারা খেলেছিল প্রীতি ম্যাচ। সেই হিসেবে কোপার কোয়ার্টারে চেনা এক প্রতিপক্ষই পাচ্ছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। 'বি' গ্রুপ থেকে সবার ওপরে থেকে কোয়ার্টারে গেল ভেনেজুয়েলা। কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ কানাডা। 

 ইকুয়েডরের বিপক্ষে কোপা আমেরিকায় এর আগে ১১ বার মুখোমুখি হয়ে কখনোই হারের স্বাদ পায়নি আর্জেন্টিনা। ৪টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। এমনকি সবমিলিয়ে মুখোমুখি হওয়া ৪০ ম্যাচের ২৬টিতেই জিতেছে আর্জেন্টাইনরা। ইকুয়েডর জিতেছে কেবল ৫টি ম্যাচে। গেল কোপা আমেরিকাতেও কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডরকে পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচেও ৩-০ গোলে জয় এসেছিল মেসিদের পক্ষে। 

কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে ইকুয়েডরের দরকার ছিল ড্র। আর মেক্সিকোকে জিততেই হতো। এমন সমীকরণের মুখে দাঁড়িয়ে দুই দলই উপহার দিয়েছে শারীরিক ফুটবল। মেক্সিকো ইকুয়েডর ম্যাচে ফাউলের বাঁশি বাজল ২৮ বার। আর রেফারি কার্ড বের করেছেন ৬ বার। ম্যাচ হলো গোলশূন্য ড্র। তাতে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ইকুয়েডর চলে গেল কোয়ার্টারে। 

পুরো ম্যাচে অবশ্য এককভাবে আধিপত্য দেখিয়েছে মেক্সিকোই। গোলমুখে ১৯ শট নিয়েছে পুরো নব্বই মিনিটে। শেষ দশ মিনিটে ইকুয়েডরকে তাদের অর্ধে রীতিমত বাক্সবন্দী করে রেখেছিলেন সান্তিয়াগো হিমেনেজ, কার্লোস হুয়ের্তারা। নিজেদের স্নায়ুচাপের সবটা ধরে রেখেই সেসব আক্রমণ সামাল দিয়েছে ইকুয়েডর। যার ফলে টানা তৃতীয়বারের মতো কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেল দলটা। 

ইকুয়েডর এমন সাফল্যের জন্য ধন্যবাদ দিয়ে পারে তাদের দুই সেন্টারব্যাক উইলিয়ান পাচো আর ফেলিক্স তোরেসকে। দুজনে মিলে মেক্সিকোর ত্রিশের বেশি আক্রমণ ক্লিয়ারেন্স করেছেন। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার ক্ষেত্রে যা রেখেছে বড় ভূমিকা। অবশ্য আক্রমণেও কম ভয় ছড়ায়নি তারা। অভিজ্ঞ এনার ভ্যালেন্সিয়া কয়েকবারই হানা দিয়েছিলেন মেক্সিকো বক্সে। দূর্বল ফিনিশিং গোল পেতে দেয়নি তাদেরও। 

কোয়ার্টারের লড়াইয়ে আগামী ৫ জুলাই আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নামবে ইকুয়েডর। আর বি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ভেনেজুয়েলা ৬ তারিখ খেলবে কানাডার বিপক্ষে। 'এ' এবং 'বি' গ্রুপ থেকে কোয়ার্টার ফাইনালের দল নিশ্চিত হলেও এখন পর্যন্ত বাকি আছে 'সি' এবং 'ডি' গ্রুপের খেলা।

জেএ