১৯৯৩ সালের পর আর ইতালিকে হারাতে পারেনি সুইজারল্যান্ড। এমন তথ্য অতীত, গতকাল (শনিবার) রাতেই ৩১ বছর পর ইউরোর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে দিয়েছে সুইসরা। ইতালিয়ানদের বিদায় করে ২-০ গোলের জয়ে তারা কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে গেল। সমান ব্যবধানে ডেনমার্ককে হারিয়েছে শেষ আটে উঠেছে এবারের ইউরোর আয়োজক জার্মানিও।

সুইজারল্যান্ড ২ : ০ ইতালি

বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ইতালি-সুইজারল্যান্ডের ম্যাচ যে উত্তাপ ছড়াবে সেটা জানা কথা। তবে সেই ম্যাচ ইতালিয়ানদের চোখের জ্বলে ভাসবে, এমন ধারণা করা একটু কঠিনই মনে হয়েছিল হয়তো। যা সম্ভব করেছে সুইজার‌ল্যান্ড। শুরু থেকেই দারুণ উজ্জ্বীবিত ‍দলটির সঙ্গে ইতালির সমান লড়াই ছিল। কিন্তু একটি করে গোল আদায়ে সফল সুইস তারকা রেমো ফ্রয়লার ও রুবেন ভার্গাস।
 
ম্যাচের প্রথম বড় সুযোগটা পায় সুইসরা। একের পর এক আক্রমণের পর ২৪তম মিনিটে সুযোগ পেলেও জিয়ানলুইজি দোন্নারুমার বাধায় সেটি কাজে লাগাতে ব্যর্থ ব্রিল এমবোলো। ইতালিয়ান গোলরক্ষককে আবারও পরীক্ষায় পড়তে হয় ৩৭তম মিনিটে। ভার্গাসের পাস বক্সে ডান পায়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাঁ পায়ে ভলি করেন মিডফিল্ডার ফ্রয়লার, যা দোন্নারুমার পায়ে লেগে জালে জড়ায়।

দ্বিতীয়ার্ধে নেমে এক মিনিট না গড়াতেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে সুইজারল্যান্ড। আগের গোলে যোগান দেওয়া ভার্গাস সতীর্থের পাস বক্সে পেয়ে দূরের পোস্টের ওপরের কোণা দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন। পুরো ম্যাচে গোলের লক্ষ্যে একটি মাত্র শট নিতে পারে ইতালি, তবে ৭৩তম মিনিটে মাতেও রেতেগির নেওয়া সেই শট ঠেকিয়ে তাদের হতাশায় ডোবান সুইস গোলরক্ষক ইয়ান সমার। শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হওয়ায় ২-০ গোলে টানা দ্বিতীয়বার ইউরোর শেষ আটে উঠল সুইজারল্যান্ড।

জার্মানি ২ : ০ ডেনমার্ক

একই রাতে ডর্টমুন্ডে বৃষ্টি-বজ্রপাত বিঘ্নিত ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল জার্মানি ও ডেনমার্ক। ৩৬ মিনিট পেরোতেই ম্যাচে প্রকৃতি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। প্রবল বৃষ্টি আর বজ্রপাতে খেলা থামিয়ে দিতে বাধ্য হন রেফারি। অবশ্য ২৫ মিনিট পর ফের খেলা শুরু হয়। পুরো ম্যাচে ৫৫ শতাংশের বেশি সময় দখলে রেখে গোলের জন্য ১৫টি শট নিয়ে ৯টি লক্ষ্যে রাখে জার্মানি, এর মধ্যে দুটিতে সফল জুলিয়ান নাগালসম্যানের শিষ্যরা। বিপরীতে ডেনিশদের ১১ শটের দুইটি লক্ষ্যে ছিল।

দুটি গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে, আক্রমণাত্মক প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য সমতায়। অথচ ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই জার্মানির নিকো শ্লটারবেক হেডে প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠান। কিন্তু তার আগমুহূর্তে ডেনমার্কের আন্দ্রেস ওলসের ফাউলের শিকার হওয়ায় মেলেনি গোল। এর পরের ছয় থেকে দশ মিনিটের মধ্যে পরিষ্কার তিনটি সুযোগ তৈরি করে জার্মানরা। জসুয়া কিমিচের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া বুলেট গতির শট কোনোমতে একহাত দিয়ে ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান গোলরক্ষক। বিরতির আগে সেরা সুযোগটি পায় ডেনমার্কও। কিন্তু বক্সে ঢুকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফরোয়ার্ড গাসমুস হয়লুন্দ গোলরক্ষককে একা পেয়েও একরাশ হতাশা উপহার দেন।

বিরতির পর ৫১তম মিনিটে ডেনিস ডিফেন্ডারের হাতে বল লাগলে পেনাল্টি পায় জার্মানি। দারুণ স্পট কিকে ডেডলক ভাঙেন কাই হাভার্টজ। নিচু শটে বল পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে জালে জড়ায়। এরপর দ্বিগুণ লিডের সুযোগটিও পান এই তারকা মিডফিল্ডার। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও বাইরে মেরে বসেন বল। পরবর্তীতে সেই হতাশা কাটে জামাল মুসিয়ালার গোলে। বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে বল ঠিকানায় পাঠান এই বায়ার্ন মিউনিখ ফরোয়ার্ড। চলতি আসরে ২১ বছর বয়সী ফুটবলারের এটি তৃতীয় গোল।

এএইচএস