বাঁ পাশের দ্বিতীয় সারিতে সাদা শার্ট পরিহিত আরিফ হোসেন মুন

রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আজ (শনিবার) সকাল থেকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বার্ষিক সাধারণ সভা শুরু হয়েছে। জেলা, ক্লাব ও বিভিন্ন সংস্থা থেকে মনোনীত প্রতিনিধিরা এই সভায় উপস্থিত হয়েছেন। এক বছর আগে বাফুফে নির্বাহী কমিটির সদস্য থেকে পদত্যাগ করা আরিফ হোসেন মুনও আজকের সভায় এসেছেন। তিনি প্রতিনিধিত্ব করছেন নীলফামারী জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের।

নির্বাহী কমিটি থেকে পদত্যাগ করে আবার বাফুফের বার্ষিক সাধারণ সভায় আসার বিষয়টি অন্যরকম হলেও, এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন মুন, ‘আমি এখানে জেলার প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছি। আমি তৃণমূলের লোক, অনেক জেলার অনেকেই আসবে যারা আমার প্রিয় ও কাছের মানুষ। এই সাধারণ সভার মাধ্যমে তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে, সেই উপলক্ষ্যেই মূলত আসা।’

মুন ২০১২ সাল থেকে বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য। তিনি টানা তিন মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছেন। তৃতীয় মেয়াদের দেড় বছর বাকি থাকতেই পদত্যাগ করেন বাফুফে থেকে। বার্ষিক সাধারণ সভায় এতদিন মুন ছিলেন মঞ্চের ওপর। এবার সাধারণ পরিষদের সদস্য হিসেবে মঞ্চের অপরপ্রান্তে। বার্ষিক সাধারণ সভায় নির্বাহী কমিটির জবাবদিহিতা আদায়ের ক্ষেত্র। নির্বাহী কমিটির কর্মকাণ্ড নিয়ে তিনি এতটাই বিরক্ত যে কথা বলতেও অরুচি তার, ‘কমিটিতে থেকে ও বেরিয়ে আসার পরও অনেক কিছুই বলেছি। কোনো পরিবর্তন নেই, বলে আর কি হবে।’

বাফুফের নির্বাহী কমিটি ২১ সদস্য বিশিষ্ট। সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, চার সহ-সভাপতি ও ১৫ জন্য সদস্য। বাফুফের অধিভুক্ত জেলা, ক্লাব ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধির মাধ্যমে ভোটে নির্বাহী কমিটি ৪ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়। নির্বাহী কমিটি ৪ বছরের জন্য ফুটবল ও ফেডারেশন পরিচালনার কর্তৃত্ব পেলেও, বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রতিটি কাজের জন্য জবাবদিহিতা এবং এ সভায় কোনো সুপারিশ, প্রস্তাব পাশের কাজ বাস্তবায়ন করতে বাধ্য। 

কাজী সালাউদ্দিন আমলে বাফুফে সদস্য থেকে পদত্যাগ নতুন নয়। মুনের আগে আরেক সাবেক জাতীয় ফুটবলার শেখ আসলাম ২০১৬ সালে পদত্যাগ করেছিলেন। এরপর তিনি বাফুফের আনুষ্ঠানিক কোনো সভা বা অনুষ্ঠানে যোগ না দিলেও ২০২০ সালে সালাম মুর্শেদীর বিপক্ষে লড়েছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে। ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করা কাজী সালাউদ্দিনও ফেডারেশনের সহ-সভাপতি থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। 

১৯৯৩ সালের সাফ গেমসে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন আরিফ হোসেন মুন। খেলা ছাড়ার পর নিজ জেলা নীলফামারীতেই থেকেছেন,  ঢাকায় স্থায়ী হননি। এখনও নীলফামারীর ক্রীড়াঙ্গন ও রাজনীতিতে সক্রিয় তিনি। গত বছর মার্চে আকস্মিকভাবে বাফুফে থেকে পদত্যাগ করেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করলেও মূলত বাফুফের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড ও শীর্ষ নীতি-নির্ধারকদের ওপর নাখোশ হয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাবেক এই অধিনায়ক। 

এজেড/এএইচএস