লাউতারোর শেষ সময়ের গোলে আর্জেন্টিনার কষ্টার্জিত জয়
২০২২ বিশ্বকাপে একের পর এক মিস করে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিলেন লাউতারো মার্টিনেজ। তবে বিশ্বকাপের পর নিজেকে ঠিকই ফিরিয়ে এনেছেন চেনা ছন্দে। চলতি বছর ইন্টার মিলানের হয়ে ইতালিয়ান সিরিআ জয় করেছেন। যেখানে লাউতারো হয়েছেন বর্ষসেরা স্ট্রাইকার। তবু কোপা আমেরিকায় চিলির বিপক্ষে ম্যাচে আর্জেন্টিনার প্রথম একাদশে জায়গা মেলেনি তার।
প্রথমার্ধের হতাশা আর দ্বিতীয়ার্ধে চাপের মুখে থাকায় শেষ পর্যন্ত লাউতারো মার্টিনেজকেই মাঠে নামাতে বাধ্য হলেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। ৭৩ মিনিটে মাঠে নেমে ৮৮ মিনিটে করলেন দলের জয়সূচক গোল। লিওনেল মেসির কর্নার থেকে জটলায় বল পেয়েছিলেন এই স্ট্রাইকার। সেখান থেকেই এলো জয়সূচক গোল।
বিজ্ঞাপন
১-০ গোলের এই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম দল হিসেবে কোপা আমেরিকার শেষ আটে পা রাখল আর্জেন্টিনা। গ্রুপে তারা আছে সবার ওপরে। ৩ পয়েন্ট নিয়ে কানাডা আছে দুইয়ে। চিলি এবং পেরু দুই দলেরই ঝুলিতে আছে ১ পয়েন্ট।
তবে আর্জেন্টিনাকে এই ম্যাচে অনেকটা সময় পর্যন্ত টিকিয়ে রেখেছিলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। অভিষেকের পর থেকেই হয়ে উঠেছেন আর্জেন্টাইন ফুটবলের ত্রাতা। কোপা আমেরিকা বা বিশ্বকাপে তার অতিমানবীয় গোলকিপিং সহজে ভুলতে চাইবে না আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। সেই এমি মার্টিনেজই আরও একবার আর্জেন্টিনার মান বাঁচালেন আজ।
প্রথমার্ধে গোলবারের নিচে একেবারেই অলস সময় পার করেছিলেন এমি মার্টিনেজ। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে বেশিরভাগ সময় পার করেছেন ব্যস্ত সময়। দ্বিতীয়ার্ধের ৭২ এবং ৭৬ মিনিটে রদ্রিগো এচিভেরিয়া দুই দফায় জোরালো শট করেছিলেন। তবে এমি মার্টিনেজের বিশ্বস্ত হাত বাঁচিয়ে দেয় দলকে।
১-০ গোলের এই স্কোরলাইনে অবশ্য প্রমাণ করা কষ্ট, ঠিক কতটা দাপুটে ফুটবল উপহার দিয়েছে আর্জেন্টিনা আজ। গোলমুখে চিলির ৩ শটের বিপরীতে তারা নিয়েছে ২২ শট। ৬টি বিগ চান্স সামনে এসেছিল। ৯টি শট ছিল অন টার্গেট। কিন্তু চিলির গোলবারের নিচে ছিলেন ক্লদিও ব্রাভো। ৪১ বছরের অভিজ্ঞ এই গোলরক্ষক যেন চীনের মহাপ্রাচীর হয়ে ছিলেন আর্জেন্টিনার সামনে।
টানা আক্রমণ করেও ওই এক ব্রাভোর কারণেই গোল পায়নি আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধ পার হয়েছে গোল না পাওয়ার হতাশায়। উপরন্তু ৩৭ মিনিটে লিওনেল মেসির দূরপাল্লার শট বারে লেগে চলে যায় বাইরে। হতাশার মাত্রা তাতে আরও বেড়েছে। দ্বিতীয়ার্ধেও নিকো গঞ্জালেসের জোরালো শট ব্রাভোর হাত হয়ে লাগে ক্রসবারে।
বিপরীতে চিলিকে সেই অর্থে সুযোগই দেয়নি আর্জেন্টিনা। মাঝমাঠে রদ্রিগো ডি পল আর ডিফেন্সে রোমেরো-লিসান্দ্রো মার্টিনেজ জুটি ঠেকিয়েছে একের পর এক আক্রমণ। শেষদিকে আনহেল ডি মারিয়া মাঠে নামলে গতি পায় আলবিসেলেস্তেদের আক্রমণ। যোগ করা সময়ে ৪র্থ মিনিটে এই ডি মারিয়াই সহজ এক সুযোগ তৈরি করে দেন লাউতারোর উদ্দেশে। যদিও সেই সুযোগ অবিশ্বাস্যভাবে ঠেকিয়ে দেন চিলি গোলরক্ষক।
শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা। আলবিসেলেস্তেদের পরের ম্যাচ পেরুর বিপক্ষে। ৩০ জুন মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে গ্রুপের শেষ ম্যাচে মাঠে নামবে তারা।
জেএ