হোঁচট দিয়েই কোপা আমেরিকার আসর শুরু করেছে নয়বারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। র‌্যাঙ্কিংয়ে বেশ পিছিয়ে থাকা কোস্টারিকার সঙ্গে তারা গোলশূন্য ড্র করেছে। ম্যাচটি গ্যালারিতে বসে দেখেছেন চোটের কারণে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকা ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার জুনিয়র। জয়বঞ্চিত হওয়ার হতাশায় তাকে মুখ ঢাকতেও দেখা যায়। পরবর্তীতে হতাশাগ্রস্ত ব্রাজিল দল ও সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন নেইমার।

ক্যালিফোর্নিয়ার সোফি স্টেডিয়ামে একের পর এক গোল মিসে হতাশ করেছেন ব্রাজিলের তারকায় ঠাসা দলটি। এক গোল বাতিলের পর দ্বিতীয়ার্ধে একের পর এক মিস করে কেবল হতাশাই বাড়িয়েছেন দোরিভাল জুনিয়রের শিষ্যরা। লুকাস পাকেতা, রদ্রিগো গোয়েস, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রাফিনহাদের নিয়ে কোচ দোরিভাল আক্রমণভাগ সাজিয়েছিলেন। বদলি হিসেবে নেমেছিলেন এন্ড্রিক ফিলিপে–ও। শেষ দিকে গোলের আশায় গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লিকেও নামানো হয়েছিল। কিন্তু হতাশাটাই শেষ পর্যন্ত সঙ্গী হয়েছে তাদের। গোলশূন্য ড্র শেষে জয়ের আনন্দই করেছে সেলেসাওদের চেয়ে ৪৭ ধাপ পিছিয়ে থাকা কোস্টারিকা।

পরবর্তীতে ম্যাচ চলাকালে গ্যালারিতে দাঁড়ানো একটি ছবি নিজের ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন নেইমার। যার ক্যাপশনের শুরুতে তিনি উত্তরসূরি খেলোয়াড়দের পাশে দাঁড়িয়েছেন, ‘আমরা যখন মাঠে থাকি, নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। কখনও কখনও এমন দিন আসে, যখন কোনো কিছুই ঠিকঠাক হয় না, আবার এমন দিনও আসে যখন সব ঠিকঠাক হয়। সব সময়ই খেলোয়াড় হিসেবে আমাদের সমালোচনার ওপর থাকতে থাকতে হয়। আমাদের করা প্রতিটি পাস, প্রতিটি শট ও প্রতিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা ওঠে। কেন এমনটা হয়?’

এরপর আবার নিজেই সেই প্রশ্নের উত্তর দেন সেলেসাও তারকা, ‘ব্রাজিলের সব মানুষ ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে খেলতে চায়, সবাই স্বপ্ন দেখে ও চেষ্টা করে। এ কারণে যারা বাইরে থাকে, তারা মনে করে ভেতরে থাকাদের চেয়ে তারা বেশি জানে, এমনটা ভাবা স্বাভাবিকও। বাইরে থেকে আপনি যে দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখতে পারেন, ভেতর থেকে সেটা আপনি কখনও বুঝবেন না।’

‘আজ আমি দর্শক হওয়ার অভিজ্ঞতাটা পেয়েছি। বারবার মন বলছিল, গোলটা হয়ে যাবে। মন যন্ত্রণায় বিষিয়ে গিয়েছিল। তবে মাঠের বাইরে আমি কখনও সীমা ছাড়িয়ে যাব না। খেলা শেষ হওয়ার পর যা হয়েছে, মেনে নিয়েছি। এখন অনুশীলনে মনোযোগী হও এবং পরের ম্যাচের জন্য আরও উন্নতি করো। এই দলের ওপর আমার আস্থা আছে। আমি জানি, তারা নিজেদের জন্য, পরিবারের জন্য ও ব্রাজিল সমর্থকদের জন্য সেরাটাই করবে’, সমর্থক হিসেবে তিক্ত অনুভূতির প্রকাশ এবং জাতীয় দলের সতীর্থদের পরামর্শ নেইমারের।

ম্যাচটিতে বল দখল থেকেই শুরু করে শট, সবদিকেই আধিপত্য ছিল ব্রাজিলের। কিন্তু সেসব শেষ পর্যন্ত গোলে পরিণত করতে ব্যর্থ হয়েছেন ভিনিসিয়ুস-রদ্রিগোরা। সবমিলিয়ে তারা ১৯টি সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে না পারার বিষয়টি মানতে পারছেন না সমর্থকরা। তবে ব্রাজিল সাম্প্রতিক সময়ে ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর নজির দেখিয়েছে। ২০০২ বিশ্বকাপের পর আর আন্তর্জাতিক শিরোপা জিততে না পারা দলটি তেমনই কিছু করে দেখানোর লক্ষ্যে নামবে পরবর্তী ম্যাচে। যেখানে আগামী শনিবার তাদের প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়ে।

এএইচএস