কোপা আমেরিকায় এতদিন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩৪ ম্যাচ খেলার রেকর্ড যৌথভাবে ছিল লিওনেল মেসি ও চিলির সাবেক গোলরক্ষক সার্জিও লিভিংস্টোনের। আজ (শুক্রবার) মাঠে নেমেই কোপায় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়লেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। একইসঙ্গে তিনি প্রথম কোনো আলবিসেলেস্তে ফুটবলার যিনি সাতটি কোপা আসরে খেলছেন। এমন মাইলফলক ছোঁয়া ম্যাচটি মেসি আরও স্মরণীয় করে রাখতে পারতেন দুটি সহজ সুযোগ হাতছাড়া না করলে। তবে তার জোড়া অ্যাসিস্টেই কানাডাকে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা।

আটলান্টার মার্সিডিস বেঞ্জ স্টেডিয়ামে কোপার ৪৮তম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা ২-০ গোলে জিতেছে। প্রধমার্ধ গোলশূন্য সমতায় থাকার পর ডেডলক ভাঙা গোল আসে বিরতির পরপর। মেসির পাস থেকে অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার গোলরক্ষকের বাধার মুখে পড়লেও, দ্রুত শটে গোল আদায় করে নেন হুলিয়ান আলভারেজ। ম্যাচের শেষদিকে আবারও মেসির রক্ষণচেরা পাস, বল পেয়ে লাউতারো মার্টিনেজ গোলরক্ষকের দুই পায়ের ফাঁক গলে জালে পাঠান।

ম্যাচটিতে আর্জেন্টিনার দখলে বল ছিল ৬৫ শতাংশ। এমন আধিপত্য ও জয় নিয়ে ম্যাচ শেষ করা নিয়ে মেসি বলেন, ‘আমরা ধৈর্য্য নিয়ে বলের দখল নিই এবং আক্রমণ চালিয়েছি। আজ আমাদের ফাঁকা জায়গা খুঁজে পেতে বেশ সংগ্রাম করতে হয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিপক্ষ আমাদের চেয়ে ভিন্ন ঘরানার ফুটবল খেলে। যার বিপরীতে আমাদের মনোবল দৃঢ় রাখতে হতো এবং লক্ষ্য ছিল বল নিয়ন্ত্রণে রেখে সুযোগ আসলেই কাজে লাগানোর।’

আর্জেন্টাইন অধিনায়ক কানাডার রক্ষণে খুব বেশি ঢোকার সুযোগ পাননি, আবার যেসব সহজ সুযোগ পেয়েছেন তাও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন। পরে অবশ্য তিনি প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের প্রশংসা করেছেন, ‘আমরা জানতাম তাদের সঙ্গে কঠিন ম্যাচ হবে, কারণ তারা বেশ শরীরি ভাষায় ভাষায় জবাব দেয়। প্রথমার্ধে তো তেমন সুযোগই দেয়নি আমাদের। সৌভাগ্যবশত দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আমরা গোল পেয়ে যাই, কিন্তু এরপরও ম্যাচ অতটা সহজ ছিল না।’

কানাডার তারকা স্ট্রাইকার আলফনসো ডেভিসের সঙ্গে মেসির দ্বৈরথ পুরোনো। তারা মুখোমুখি হয়েছিলেন ক্লাব ফুটবলে। মেসি ছিলেন বার্সেলোনায় আর ডেভিস বায়ার্ন মিউনিখে। যেখানে জার্মান জায়ান্টরা ৮–২ ব্যবধানে বড় হারের তিক্ত স্বাদ দিয়েছিল মেসির বার্সাকে। তবে মাঠের দ্বৈরথ পাশে রেখে ২৩ বছর বয়সী কানাডিয়ান তারকা আর্জেন্টাইন অধিনায়কের ভক্ত–ও। ফলে ম্যাচ হারের পরও ডেভিস মেসির কাছে ছুটে যান, দুজন জার্সি অদলবদল করেন।

এর আগে বায়ার্নের বড় জয়ের দিনে আর্জেন্টিনার সাবেক বার্সা তারকার জার্সি না পেয়ে মনক্ষুণ্ন হয়েছিল ডেভিসের। সে সময় কানাডার এই তারকা স্ট্রাইকার বলেছিলেন, ‘মেসি আমাকে ফাউল করেছিলেন এবং পরে আবার টেনেও তোলেন। এই দৃশ্য সবসময় আমার স্মৃতিতে থাকবে। আমি ওই ছবিটি ফ্রেমবদ্ধ করে রাখব।’ এবার নিজের ফুটবল আদর্শের সঙ্গে জার্সি বদলের নতুন ছবিই পেয়ে গেলেন ডেভিস।

এএইচএস