আরও বড় পরিসরে ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। আগামী বছরে হতে যাওয়া আসর থেকেই নতুন ফরম্যাট বাস্তবায়নের কথা রয়েছে। তবে এরই মাঝে গুঞ্জন ছড়িয়েছে চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ ট্রেবল শিরোপা জেতা রিয়াল মাদ্রিদ অংশ নেবে না ক্লাব বিশ্বকাপে। বিষয়টি মুখ খুলেছেন ক্লাবটির প্রধান কোচ কার্লো আনচেলত্তি।

আজ (সোমবার) ৬৫ বছর পূর্ণ হলো ইতালিয়ান এই কোচের। সে উপলক্ষ্যে ইতালিয়ান দৈনিক ইল জোর্নালে প্রকাশিত হয় আনচেলত্তির সাক্ষাৎকার। সেখানে তার একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই মূলত রিয়ালের ক্লাব বিশ্বকাপে না খেলা নিয়ে গুঞ্জন ওঠে। যা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়েছেন পুরো ফুটবলাঙ্গনে। তবে এমন কিছু বলেননি বলে দাবি আনচেলত্তির। রিয়াল কোচ জানিয়েছেন, তার বক্তব্য ভিন্নভাবে ছড়ানো হয়েছে।

এর আগে ওই সাক্ষাৎকারে আনচেলত্তি বলেছিলেন, ‘ফিফা এটি (ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজনের ভাবনা) ভুলে যেতে পারে। ফুটবলার ও ক্লাবগুলো ওই টুর্নামেন্টে খেলবে না। রিয়াল মাদ্রিদের একটি ম্যাচের মূল্য ২ কোটির সমান। সেখানে পুরো টুর্নামেন্টের জন্য ২ কোটির প্রস্তাব দিচ্ছে ফিফা। রিয়াল খেলবে না। আমাদের মতো অন্য ক্লাবগুলোও এই আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দেবে।’

এমন মন্তব্যের পরই রিয়াল আসন্ন ক্লাব বিশ্বকাপে খেলবে না বলে রব ওঠে। যা নজর এড়ায়নি এই কিংবদন্তি কোচের। এখন পর্যন্ত রেকর্ড পাঁচটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও তিনটি ক্লাব বিশ্বকাপজয়ী এই কোচ বিষয়টি খোলাসা করে একটি টুইট বার্তা দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘সাক্ষাৎকারে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ নিয়ে আমি যেভাবে বলতে চেয়েছি, সেভাবে প্রকাশিত হয়নি। এই টুর্নামেন্টে খেলার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার মতো কোনো আগ্রহ আমার নেই, কারণ রিয়ালের হয়ে বড় শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে এটিকে বড় সুযোগ হিসেবেই মনে করি।’

একইভাবে ক্লাব বিশ্বকাপে খেলার নিশ্চয়তা দিয়ে বিবৃতি দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদও। তারা লিখেছে, ‘রিয়াল মাদ্রিদ জানাচ্ছে যে, আসন্ন ২০২৪-২৫ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে আমাদের অংশগ্রহণ না করার মতো কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। তাই পরিকল্পনা অনুসারে আমাদের ক্লাব অংশ নেবে। এই প্রতিযোগিতায় আমরা গর্বের সঙ্গে যোগ দেব এবং আমাদের মিলিয়ন সমর্থকের নতুন শিরোপা জয়ের স্বপ্ন পূরণেও আমরা অনেক আশাবাদী।’

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে ৩২টি দল নিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিফা। এরই মধ্যে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় ১২টি ক্লাবকে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। নতুন কাঠামোতে প্রতি চার বছর পরপর হবে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। মোট ৩২টি দল ৮টি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। প্রতি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল যাবে নকআউট রাউন্ডে। তবে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী দল সরাসরি ফাইনালে খেলবে। এ ছাড়া অন্য মহাদেশের চ্যাম্পিয়ন দলগুলো নিজেদের মধ্যে খেলে একটা দল যাবে ফাইনালে।

এদিকে, আগামী মৌসুমে ইউরোপিয়ান ক্লাব প্রতিযোগিতার তিন টুর্নামেন্টেই (চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ইউরোপা, কনফারেন্স লিগ) ৩২ থেকে বাড়িয়ে ৩৬ দল নিয়ে আয়োজন করা হবে। ফলে এই ব্যস্ত সূচির মধ্যে আবার ৩২ দলের নতুন ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার আগ্রহ এমনিতেও খুব একটা নেই ফুটবলারদের। এ নিয়ে গত মাসে ঠাসা সূচির প্রতিবাদে ফিফার বিরুদ্ধে ধর্মঘটে যাওয়ার প্রছন্ন হুমকি দেয় প্রফেশনাল ফুটবলার’স অ্যাসোসিয়েশন (পিএফএ)। তবে ফিফা সূচিতে কোনো পরিবর্তন আনা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়।

এএইচএস