দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। ২০২১ সালে মালদ্বীপ সাফ ফুটবল এককভাবে আয়োজন করেছিল। সাফের কাছ থেকে টুর্নামেন্টের স্বত্বও কিনেছিল মালদ্বীপ ফুটবল এসোসিয়েশন। তিন বছর পেরিয়ে গেলেও সাফ মালদ্বীপের কাছ থেকে সেই অর্থ পায়নি।

আজ ঢাকায় সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাফের নির্বাহী সভা। বিকেলে হয়েছে কংগ্রেস। দুই জায়গাতেই মালদ্বীপ ফুটবল এসোসিয়েশনের কাছে সাফের পাওনার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। মালদ্বীপ ফুটবল এসোসিয়েশনে সভাপতি বাসাম অনলাইনে সভায় যুক্ত হয়েছিলেন। 'আগামী দুই তিন মাস পর মালদ্বীপ ফুটবল এসোসিয়েশনের নির্বাচন। এর পরপরই সাফের আর্থিক বিষয় নিষ্পত্তি হবে’ এমনটাই জানান সাফের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলাল।

গত দুই বছর ধরে সাফ প্রাপ্য পাওনা আদায়ে অসংখ্যবার মালদ্বীপকে চিঠি দিয়েছে। সেই চিঠির প্রতিকার না পেয়ে এএফসি পর্যন্ত বিষয়টি গড়িয়েছে। এএফসি’র পরামর্শে সাফে মালদ্বীপের কিছু টুর্নামেন্টের অংশগ্রহণ ফি থেকে সমন্বয় করে ২০২১ সাফের ম্যাচ অফিসিয়ালদের সম্মানী প্রদান করেছে সাফ। সেই টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন ভারতের প্রাইজমানি এখনো বকেয়া। ঐ টুর্নামেন্টের দেনা-পাওনা সম্পর্কে সাফের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলাল বলেন, 'প্রাইজমানি, অংশগ্রহণ ফি ছাড়াও সাফের স্বত্ব ফিও বকেয়া। আমাদের সাফের একটি সভা সেখানে হয়েছে। সেটা বাদ যাবে। সভা ও আনুষাঙ্গিক কত ব্যয় করেছে সেটারও কোনো হিসাব দেয়নি।'

সাফকে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও পূরণ করেনি মালদ্বীপ। নতুন প্রতিশ্রুতি নির্বাচনের পর। নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটির পরিবর্তন হয়। আগের কমিটির কর্মকর্তারা পুনরায় আসবেন কিনা আবার আসলেও সেই পুরনো দায় কিভাবে পরিশোধ করবে সেটাও বড় বিষয়। সব মিলিয়ে মালদ্বীপ ইস্যুতে বেশ বড় বিপাকইে সাফ। শুধু দেনা-পাওনা নয়, টুর্নামেন্ট-সভায় অংশগ্রহণেও তারা বেশ ভোগান্তি দেয়। এই সাফ কংগ্রেসে আসার অনেক প্রক্রিয়া করেও শেষ পর্যন্ত আসেনি। একেবারে অন্তিম মুহূর্তে অদ্ভুতুড়ে বিমান ভাড়ার দাবি করলে সাফ সেটা প্রদানে অস্বীকৃতি জানায়। তাই অনলাইনে যুক্ত হয়েছিল মালদ্বীপ। পাকিস্তান ভিসা জটিলতায় আসতে পারেনি ঢাকায়। 

সাফের সভা-কংগ্রেস মানেই সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসা ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ। আজকের কংগ্রেসে সেটা আলোচ্যসূচিতে না থাকলেও নির্বাহী সভায় অবশ্য আলোচনা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সাফের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলাল বলেন, 'ক্লাব কাপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ফরম্যাট ও অন্যান্য বিষয়ে আমরা সর্বশেষ অগ্রগতি দুই সপ্তাহ পরে বলতে পারব।’

বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ২০০৯ সাল থেকে সাফেরও সভাপতি। টানা চার মেয়াদে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে সভাপতিত্ব করছেন। তার এই মেয়াদ কালে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের সার্বিক মান তেমন অগ্রগতি না হলেও নিজেদের কর্মকান্ড উল্লেখসংখ্যক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, 'আসলে সন্তুষ্টির সমাপ্তি নেই। বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও উন্নতির জায়গা থাকে। আবারও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ইচ্ছে থাকে। আগে সাফের শুধু একটি টুর্নামেন্ট হতো। এখন নারী ও পুরুষ উভয় ক্ষেত্রে একাধিক টুর্নামেন্ট হচ্ছে। সেই টুর্নামেন্টে আমাদের পৃষ্ঠপোষক রয়েছে এবং ফিফা-এএফসিও অর্থায়ন করছে। কোচিং-রেফারিং সহ অনেক বিষয় নিয়ে কাজ হচ্ছে।'

এজেড/এইচজেএস