বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ যৌথ বাছাইয়ে নিজেদের শেষ হোম ম্যাচে বাংলাদেশ দুর্দান্ত খেলেছে। কিংস অ্যারেনায় বিশ্বকাপে নিয়মিত খেলা অস্ট্রেলিয়ার কাছে মাত্র ২-০ গোলে হেরেছে। এর মধ্যে একটি গোল আবার আত্মঘাতী। 

বাংলাদেশের ফুটবল মূলত দক্ষিণ এশিয়ার গন্ডিতে। মাঝে মধ্যে বিশ্বকাপে খেলা দলগুলোর সঙ্গে খেলার সুযোগ পায়৷ অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে গত আট বছরের মধ্যে চার বার মুখোমুখি হলো। ২০১৫ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে হোমে ৪-০ আর অ্যাওয়েতে ৫-০ গোলে হেরেছিল। এবার ২০২৬ বাছাইয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচে বাংলাদেশ ৭-০ গোলে হেরেছিল। আজ হোম ম্যাচে বাংলাদেশ হারল ২-০ গোলে। বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ে ২৪ নম্বর দলের সঙ্গে এত কম ব্যবধানে হার বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য স্বস্তিরই।

বাংলাদেশের কোচ ও খেলোয়াড়রা অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের আগে থেকে হোম অ্যাডভান্টেজের কথা বলছিলেন। সেই অ্যাডভান্টেজ পুরোপুরিই নিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বৃষ্টিতে মাঠ ভারী ছিল৷ দুই দলের কেউ ভেন্যুতে অনুশীলন করতে পারেনি। আজও মাঠ দেখা গেল বেশ ভারী। অস্ট্রেলিয়ার গতিশীল ফুটবলাররা তাই বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশও স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেনি।

কাদা-ভারী মাঠে বড় দলের ঢাকায় এসে ভোগান্তি নতুন নয়৷ ২০২৩ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের গ্রুপে ছিল কাতার। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে কাদা মাঠে কাতার কোনোমতে সেই ম্যাচ জিতেছিল ২-০ গোলে। ঐ দিন বাংলাদেশ অনেক আক্রমণ করেছিল। আজ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ গোলের কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। পুরো ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার গোলরক্ষক হাত দিয়ে বল ধরেছেন একবার। ম্যাচের প্রায় সময় হাফ লাইনের কাছাকাছি ছিলেন। 

অস্ট্রেলিয়া অনেক শক্তিশালী দল। সেই দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ বিগত তিন ম্যাচে প্রথমার্ধেই একাধিক গোল খেয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল। মেলবোর্নে আগের লেগে ৪ -০ গোলে পিছিয়ে ছিল। আজ চতুর্থ দফায় মোকাবেলায় বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ম্যাচে রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া বল পজেশন ও আক্রমণে এগিয়ে থাকলেও ডিফেন্স ভাঙা, গোলের নিশ্চিত সুযোগ সেভাবে তৈরি করতে পারেনি। 

ম্যাচের ২৯ মিনিটে লিড পায় অস্ট্রেলিয়া। অবশ্য এই গোলটা সৌভাগ্যক্রমে। অস্ট্রেলিয়ার অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার আজদিন হুরস্টিক প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে শট নেন। বক্সের আগে দাড়িয়ে থাকা বাংলাদেশের ডিফেন্ডার মেহেদী মিঠুর পায়ে লেগে বল দিক পরিবর্তন হয়। গোলরক্ষক মিতুল অন্য পোস্টে তাকিয়ে দেখেন বল জালে ঢুকছে। বাফুফে নিশ্চিত করেছে গোলটি আত্মঘাতী হিসেবে ম্যাচ অফিসিয়াল লিপিবদ্ধ করেছে। 

ম্যাচের প্রথম ৪৫ মিনিট বাংলাদেশ অর্ধেই খেলা হয়েছে। রাকিব ও মোরসালিন চেষ্টা করেছেন কাউন্টার অ্যাটাকে যাওয়ার। ভেজা মাঠে তারাও পারেননি। প্রথমার্ধে বাংলাদেশের কোনো শট অন টার্গেট নেই। 

ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ পাঁচ জন ফুটবলার পরিবর্তন করে। অধিনায়ক জামাল ভুইয়া ৫৫ মিনিটে নামেন। জামাল নামার কয়েক মিনিট পর দুই একটি আক্রমণে গিয়েছিল। যদিও সেগুলো পূর্ণতা পায়নি। অস্ট্রেলিয়া ৬২ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে। বক্সের মধ্যে হেড করে কুসুনি হেড করে গোল করেন। 

অস্ট্রেলিয়া গোল পাওয়ার পর সেভাবে আগ্রাসী ভূমিকায় ছিল না। বল দখল করে বাংলাদেশের অর্ধে নিয়ন্ত্রণ রেখেই সন্তুষ্ট ছিল। মিতুল মারমাকে মেলবোর্নের মত বেশি পরীক্ষায় পড়তে হয়নি। বাংলাদেশ কোচ শাকিল, চন্দন ও রিমনকে নামান একসঙ্গে। এতে খুব বেশি প্রভাব পড়েনি৷ 

এজেড/এইচজেএস