২৯ মে শেষ হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। দুই দিন পর ১ জুন থেকে শুরু হয়েছে ২০২৪-২৫ মৌসুমের দলবদল। বসুন্ধরা কিংস, ঢাকা আবাহনী, মোহামেডান, শেখ রাসেল, শেখ জামাল এই পাঁচ দল মূলত দলবদলের বাজারে সক্রিয়। অন্য দলগুলো এখনো সমাপ্ত মৌসুমের দেনা-পাওনা মেটাতেই ব্যস্ত।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ ছয় বারের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী। ২০১৮ সালে বসুন্ধরা কিংস ফুটবলের শীর্ষ স্তরে আসার পর আর লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি দলটি। এবার কিংসের সঙ্গে টক্কর দিতে একটু আগেভাগেই দলবদলে নেমেছে আবাহনী। যদিও বসুন্ধরা কিংসের মূল খেলোয়াড়দের দলে ভেড়াতে পারেনি ধানমন্ডির ক্লাবটি। শুধুমাত্র ফুলব্যাক ইয়াসিন আরাফাতকে এনেছে কিংস থেকে।

আবাহনীর গোলপোস্ট দীর্ঘদিন আগলে রেখেছিলেন শহিদুল আলম সোহেল। অনেক দিন সোহেলের ওপর আস্থা রাখলেও এবার আবাহনী গোলরক্ষক পজিশনে পরিবর্তন আনছে। প্রীতম ও মিতুল মারমাকে দলে ভিড়িয়েছে। আবাহনী জামাল, মোহামডোন সহ অন্য ক্লাব থেকে শাকিল, হাসান মুরাদ, কামরুল, ইয়াসিন আরাফাত, শাহিন মিয়া, শাহরিয়ার ইমন, নিপু, আকাশ, জাফর ইকবালকে নিয়েছে।

মোহামেডানের গত মৌসুমের অন্যতম সেরা পারফরর্মার ছিলেন হাসান মুরাদ ও শাহরিয়ার ইমন। বাফুফের পেশাদার লিগের ফরমে এই দুই জনকে আবাহনী স্বাক্ষর করিয়েছে বলে জানা গেছে। এরপরও মোহামেডান এই দুই জনকে পেতে নানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের ঘরোয়া লিগে ম্যাচের নিয়ন্ত্রক বিদেশি ফুটবলার। তাই মোহামেডান ছয় বিদেশি কোটার মধ্যে পাঁচজনকে আগেভাগে নিশ্চিত করেছে। তাদের সেরা দুই অস্ত্র মালির সুলেমান দিয়াবাতে ও উজবেকিস্তানের মোজাফফরভের পাশাপাশি টনি ও সানডেকেও রাখছে। রহমতগঞ্জের ঘানার বোয়েটাংয়ের সঙ্গে চুক্তি করেছে মোহামেডান।

দেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে নিজেদের গোলরক্ষক সুজন, আবাহনীর বিপক্ষে জোড়া গোলদাতা আরিফ, কিংস অ্যারেনায় মোহামেডানের জয়ের নায়ক বাল্লুকে নিশ্চিত করেছে। মোহামেডানের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব বলেন,  'আমাদের দল মোটামুটি গঠন হয়েছে। বিদেশি ও দেশি বেশ কয়েকজন চূড়ান্ত হয়েছে। দলবদলে আরো আড়াই মাস সময় রয়েছে। ধীরে ধীরে প্রয়োজন অনুসারে খেলোয়াড় দলে ভেড়াব।’

টানা পাঁচবার লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস নিজেদের সেরা খেলোয়াড়দেরই ধরে রেখেছে। গোলরক্ষক জিকো, শ্রাবণ, ডিফেন্ডার তপু, তারিক কাজী, মিডফিল্ডার সোহেল রানা, ফরোয়ার্ড রাকিব সহ জাতীয় দলে থাকা অনেক খেলোয়াড়ই রয়েছেন। বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে দুই ব্রাজিলিয়ান রবসন ও মিগুয়েলকে রাখার পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত।

দলবদলের বাজারে খেলোয়াড়-ক্লাব কর্মকর্তাদের ছোটাছুটি-দরকষাকষি চলছে। জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূইয়াকে নিয়ে তেমন টানাটানি নেই। জামাল ভূইয়ার বর্তমান দল ঢাকা আবাহনী এখনো তার সঙ্গে কথা বলেনি। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কাতারে খেলতে যাওয়ার আগে প্রাথমিক আলাপ করার সম্ভাবনা রয়েছে। মাঝে শোনা গিয়েছিল, জামাল ভূইয়া তার পুরনো ক্লাব শেখ জামালে খেলবেন। যদিও নতুন মৌসুমে বিষয়টি গুজবেই সীমাবদ্ধ। মোহামেডান ক্লাবের বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের প্রতি কোনো আগ্রহই নেই।

খেলোয়াড়দের পাশাপাশি কোচরাও দলবদল করছেন। শেখ জামাল থেকে মিন্টু শেখ রাসেলে এসেছেন। পুলিশের বিদেশি কোচ শেখ জামালে গিয়েছেন। পুলিশের কানাডার প্রবাসী ফুটবলার কাজেম শাহও গুরুর সঙ্গে দল বদলেছেন। বসুন্ধরা কিংসের ডাগআউটেও পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। অস্কার ব্রুজনের সঙ্গে কিংস কর্তৃপক্ষ কিছু দিনের মধ্যে আলোচনা করার কথা রয়েছে। আবাহনী দেশি খেলোয়াড়দের পর বিদেশি চূড়ান্ত করে এরপর কোচিং স্টাফ নিয়ে ভাববে। আর্জেন্টাইন ক্রুসিয়ানীর পরিবর্তে অন্য কোচই খুজবে আবাহনী।

এজেড/এইচজেএস