২৯ জনের দল ঘোষণা করেছেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। কোপা আমেরিকার আগে দুই প্রীতি ম্যাচে এই স্কোয়াডই থাকবে আর্জেন্টিনার। এরপর সেখান থেকে ছাটাই হবেন তিনজন। আর কোপা আমেরিকায় আলবিসেলেস্তেরা যাবে ২৬ জনের দল নিয়ে। তবে এই স্কোয়াডে থাকছেন না বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য পাওলো দিবালা। 

বিশ্বকাপ জেতা লিসান্দ্রো মার্টিনেজ ও এনজো ফার্নান্দেজও জায়গা পেয়েছেন আর্জেন্টিনার এই প্রাথমিক স্কোয়াডে। যদিও বর্তমানে দুজনেই আছেন বড় ধরণের ইনজুরিতে। তবে পাওলো দিবালার তেমন ইনজুরি সংশয় নেই। তারপরেও তাকে স্কোয়াডে না দেখে কিছুটা অবাকই হয়েছেন আলবিসেলস্তে ভক্তরা। 

অবশ্য পাওলো দিবালার বাদ পড়ার পেছনে বেশ শক্ত কিছু যুক্তিও আছে কোচ স্কালোনির হাতে। সাম্প্রতিক সময়ে নিজের দলেই জায়গা করে নিতে খানিক বেগ পেতে হচ্ছে তাকে। লিগে সবশেষ ম্যাচেই জেনোয়ার বিপক্ষে ৬৩ মিনিটে মাঠে নেমেছিলেন। তবে শেষ করতে পারেননি ম্যাচটাও। যদিও কোচ ডি রসির ভাষ্য ছিল, ট্যাক্টিকাল কারণেই উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল দিবালাকে। 

ফর্মহীনতাই কী বড় কারণ? 

দীর্ঘদিনের পুরাতন ঠিকানা জুভেন্টাস ছেড়ে গত মৌসুমে রোমায় এসেছিলেন দিবালা। ক্যারিয়ারে নিজেদের সেরা সময়টা তুরিনের বুড়িদের হয়েই পার করেছিলেন। তবে শেষ তিন বছরে নিজের পারফরম্যান্সে ভাটা দেখেছিলেন তিনি নিজেই। এরপরেই রোমায় এসেছিলেন হোসে মরিনিয়োর অধীনে। 

প্রথম মৌসুমটা খুব একটা মন্দ যায়নি রোমা এবং দিবালার। তবে চলতি বছর নিজেদের চেনা ছন্দে ছিল না ইতালির রাজধানীর ক্লাবটি। মাঝপথে এসে কোচ মরিনিয়োকেও ছেঁটে ফেলে তারা। নতুন কোচ হন ইতালি এবং রোমারই আরেক কিংবদন্তি ড্যানিয়েল ডি রসি। তাতে দিবালার পারফরম্যান্সেও এসেছে পরিবর্তন। 

চলতি মৌসুমে সবমিলিয়ে ৩৮ ম্যাচে ২৬ গোলে অবদান রেখেছেন এই ফরোয়ার্ড। ১৬ গোল করেছেন। ১০ গোল করিয়েছেন। লিগে ২৭ ম্যাচে করেছেন ১৩ গোল আর সঙ্গে ছিল ৯ অ্যাসিস্ট। প্রতি দুই ম্যাচে আছে ১টি করে গোল। কোপা ইতালিয়ায় ২ ম্যাচে ছিল ১ গোল। 

অবশ্য ইউরোপা লিগে খুব একটা ছন্দে দেখা যায়নি তাকে। ৯ ম্যাচে ২ গোল করেছেন। অ্যাসিস্ট ছিল ১টি। অবশ্য গত ২৯ এপ্রিলের পর থেকে তার পা থেকে কোন গোল বা অ্যাসিস্ট আসেনি। যদিও এর আগে মার্চ এবং এপ্রিলের পুরোটা সময়ই দারুণ ছন্দে ছিলেন তিনি। 

একাধিক বিকল্প

পাওলো দিবালা দল না পাওয়ার বড় কারণ হতে পারে তার সাম্প্রতিক সময়ের ফর্মহীনতা। সেইসঙ্গে আর্জেন্টিনা দলে একাধিক বিকল্প। বিশ্বকাপ দলেও দিবালা ছিলেন। তবে জায়গা হয়নি। হুলিয়ান আলভারেজ এবং লাউতারো মার্টিনেজেই বেশি আস্থা ছিল কোচ লিওনেল স্কালোনির। 

সাম্প্রতিক সময়ে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন আরও কয়েকজন। জাতীয় দলে ফর্মহীনতায় থাকা লাউতারো নিজেই সিরিআ তে করেছেন ২৪ গোল। বেঞ্চ থেকে সুযোগ পেয়ে আলভারেজও চিনিয়েছেন নিজেকে। আনহেল কোরেয়া কিংবা নিকোলাস গঞ্জালেস ক্লাবে দুর্দান্ত না হলেও জাতীয় দলে কোচের প্রত্যাশা পূরণ করেছেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। 

এছাড়া লিওনেল মেসি তো আছেনই ডানপ্রান্তে আক্রমণ তৈরি করতে। পূর্ণ ফিট মেসির উপস্থিতি আর্জেন্টিনাকে অনেকটাই নির্ভার রাখবে আক্রমণের দিক থেকে।

শক্তিশালী মধ্যমাঠ 

লিওনেল স্কালোনি দলের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই দলের প্রাণভোমরা হয়ে ছিলেন জিওভানি লো সেলসো। মেসির সঙ্গে সবচেয়ে ভালো বোঝাপড়া ছিল এই মিডফিল্ডারের। তবে গত বিশ্বকাপে ইনজুরির কারণে কাতারের বিমান ধরা হয়নি তার। লম্বা ইনজুরি পার করে এবার ফিরে এসেছেন তিনি। 
 
যদিও মৌসুমের একেবারে শেষদিকে ইনজুরিতে পড়েছেন। তবে সেটাও খুব একটা গুরুতর নয়। কোপা আমেরিকার শুরুতেই তিনি দলে ফিরতে পারেন। একই কথা প্রযোজ্য এনজো ফার্নান্দেজের জন্য। বর্তমানে ইনজুরিতে থাকলেও, খুব দ্রুতই দলে যোগ দিতে পারেন এই তারকা। 

এছাড়া অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, রদ্রিগো ডি পলরা আর্জেন্টিনা শিবিরে যোগ দেবেন পূর্ণ ফিট থেকে। দিবালার অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে বিকল্প খেলার পথটাও রুদ্ধ থাকে এমন শক্তিশালী এক মাঝমাঠের জন্য। 

জেএ