সময়ের প্রয়োজনে পরিবর্তনটা যেমন স্বাভাবিক, তেমনি পরিবর্তন মানুষকে কষ্ট দেয় এটাও স্বাভাবিক। এই যেমন ইয়ুর্গেন ক্লপের কথাই ধরুন না—লিভারপুল ছাড়ছেন স্বেচ্ছায় অথচ বিদায় বেলায় অ্যানফিল্ডের ক্লাবটার মায়া আর প্রেম পুড়াচ্ছে তাকে! তবুও ওই যে সময়ের পরিবর্তন আর বাস্তবতা সেটা মেনে নিতেই হচ্ছে তাকে। 

আগামী রোববার লিভারপুলের কোচ হিসেবে শেষবারের মতো ডাগআউটে দাঁড়াবেন ক্লপ। অ্যানফিল্ডে নিজের বিদায়ী ম্যাচের আগে আজ শেষবারের মতো এসেছিলেন ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে। এর পুরোটা জুড়েই ছিল ক্লপের বিদায়ের প্রসঙ্গ।

বিদায়মুহূর্ত নিয়ে ক্লপ বলেছেন, ‘এটা আমার জীবনের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ একটা সপ্তাহ ছিল। এই সপ্তাহে আমি প্রায়ই “বিদায়” বলেছি। আমাদের এটা দেখানোর প্রয়োজন নেই সপ্তাহটা খুব স্বাভাবিক ছিল; কারণ, এটা আসলেই ছিল না। বিদায় বলা আমার মনে হয় না কখনো সুন্দর কিছু। কিন্তু বেদনা বা দুঃখবোধ ছাড়া যখন বিদায় নিতে হয়, তখন এর মানে হলো আমরা একসঙ্গে যে সময় কাটিয়েছি সেটা ভালো ছিল না। কিন্তু এখানে আমরা দারুণ সময়ই কাটিয়েছি। তাই এটা স্পষ্ট যে বিষয়টা খুবই কঠিন হবে।’

২০১৫ সালের অক্টোবরে লিভারপুলে যোগ দিয়েছিলেন ক্লপ। এরপর তার হাত ধরে সাতটি বড় শিরোপা জিতেছে ক্লাবটি। যেখানে ২০১৯ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগও আছে। তাছাড়া ক্লপের অধীনে দুই মৌসুমে মাত্র ১ পয়েন্টের জন্য ম্যানচেস্টার সিটির কাছে ট্রফি হাতছাড়া করেছে লিভারপুল। এ ছাড়া দুবার (২০১৮ ও ২০২২) রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ফাইনালে হারায় হাতছাড়া হয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফিও।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলছেন, ‘আমি জানি আমরা আরও অনেক বেশি জিততে পারতাম। কিন্তু আমি সেটা বদলাতে পারব না, ফলে যা হয়েছে তা নিয়ে আমি খুশি। ১ পয়েন্টের জন্য চ্যাম্পিয়ন হতে না পারাটা ভালো অভিজ্ঞতা নয়। কাছাকাছি গিয়ে জিততে না পারাটা ইতিহাসে লেখা থাকবে না।’

‘এখানে আমার জীবনের প্রায় এক দশক কাটিয়েছি। নানা দিক থেকে এটা দারুণভাবে প্রভাববিস্তারী ছিল। আমি এই জায়গার সবকিছু ভালোবাসি। আমি স্মৃতিগুলো সঙ্গে নিয়ে যাব। অসাধারণ সব স্মৃতি। পাশাপাশি আমি বন্ধুত্ব এবং সম্পর্কগুলোও সঙ্গে নিয়ে যাব। জীবনের একটি দশক দেওয়া খুব বড় ব্যাপার। এ সময়ের একটি দিনও আমি ভুলব না। কারণ, এখানে আমি নিজের দেখা সেরা মানুষগুলোকে পেয়েছি।’-আরও যোগ করেন তিনি।

এইচজেএস